ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ওমিক্রন: বিশ্বব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া, পুঁজিবাজারে বড় পতন

  • আপডেট সময় : ১২:৪৩:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২১
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সম্ভবত এরইমধ্যে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, এটি এখনো স্পষ্ট নয় যে- এটি বিদ্যমান পিসিআর পরীক্ষার দ্বারা কতটা ভালোভাবে শনাক্ত করা যায়। ডিএনকেওএম-এর মলিকুলার জেনেটিক স্টাডিসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান আন্দ্রে ইসায়েভ সম্প্রতি এ কথা বলেছেন।
বিপরীতে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ফাইজারের সহ-নির্মাতা এবং বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর শাহিন করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে উগুর শাহিন বলেন, করোনা টিকা নেওয়ার পরও অনেক মানুষ ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলেও তারা সম্ভবত গুরুতর অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।
করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে। পরে ওমিক্রন নিয়ে সৃষ্ট আতঙ্কে আফ্রিকার দেশগুলোর বিরুদ্ধে একে একে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে বিশ্বের বহু দেশ।
বৈশ্বিক এই উদ্বেগের মধ্যেই আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর শাহিন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মানুষের উদ্দেশে আমাদের বার্তা হচ্ছে- আতঙ্কিত হবেন না। (মহামারিকে হারানোর) পরিকল্পনা আগের মতোই আছে। করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার গতি আরও বাড়িয়ে দিতে হবে।’
কিন্তু সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন যেভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতোই বটে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস ইতোমধ্যে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো সৌদি আরব। এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে আল আরাবিয়া জানায়, আফ্রিকান এক নাগরিকের দেহে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরাও আছেন আইসোলেশনে।
ওমিক্রন আবিষ্কারের পরপরই মালাউই, জাম্বিয়া, মাদাগাস্কার, এঙ্গোলা, সিচেলাস, মরিশাস ও কমোরোসের সঙ্গে সবরকম ফ্লাইট স্থগিত করেছে সৌদি আরব। সেইসঙ্গে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত সবাইকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখছে কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছে সৌদি প্রেস এজেন্সি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্টটি অন্তত ৩২টি মিউটেশন (জিনগত গঠনের পরিবর্তন) ঘটিয়েছে। যার বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন ছিল ১০টি আর বেটায় ৬টি। আর ওমিক্রনের ‘ইউনিক’ মিউটেশনের সংখ্যা এর অনেক বেশি। মোট ২৬টি।
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকাগুলো কতটা কার্যকর হবে, সেটি নিয়েও চলছে বিস্তর গবেষণা। এখন পর্যন্ত আশাজাগানিয়া কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে মঙ্গলবার টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার সিইও ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকার সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ধরনটির বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াইয়ে নতুন টিকার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার এমন মন্তব্যে এরইমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিশ্ববাজারে। বড় পতন হয়েছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারেও।
মার্কিন টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টিফেন ব্যান্সেল ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে করোনার নতুন ধরনের প্রভাব নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, করোনার বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলার সুযোগ নেই। এটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকা একই রকমের কার্যকর হবে, এটাও ঠিক না। আমাদের সঙ্গে আগে থেকে ডেল্টা ছিল। নতুন করে ওমিক্রনের সংক্রমণের কারণে টিকার কাঁচামালের সরবরাহ কমবে। তবে এর পরিমাণ জানতে আমাদের আরো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি যতগুলো বিজ্ঞানীর সঙ্গে কথা বলেছি, কেউ এটার পরিণতি ভালো বলেননি। এ সময় তিনি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়তে নতুন টিকার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। বিদ্যমান টিকায় ধরনটির প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা থাকায় অতিমারী দীর্ঘ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত টিকার মধ্যে মডার্নার টিকাকেই সবচেয়ে বেশি কার্যকর হিসেবে দেখা হচ্ছিল। বিভিন্ন গবেষণায় সেটিও প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে খোদ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীর এমন মন্তব্যে উদ্বিগ্ন সব মহল।
মডার্না প্রধানের এমন মন্তব্যের জেরে মঙ্গলবার বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের সূচক বড় পতন হয়। ইউরোপের প্রধান পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার প্রাথমিক লেনদেনে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পতন ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচকগুলো লেনদেনের শুরুতেই পতনের মুখে পড়ে। এর মধ্যে ডাও জোনস দশমিক ৮ শতাংশ, নাসডাক দশমিক ৩ শতাংশ ও এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচকে দশমিক ৬ শতাংশ পতন হয়। এশিয়ার পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ সূচকই ছিল নিম্নমুখী। এর মধ্যে হ্যাংসেং ৩৭৭ পয়েন্ট, নিক্কেই-২২৫ সূচক ৪৬২ ও সেনসেক্স ১৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন শেষ করে। পুঁজিবাজারের পাশাপাশি ওমিক্রন-সৃষ্ট অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক পণ্যবাজারেও। অপরিশোধিত জ¦ালানি তেলের বাজার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্য এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমেছে।
এদিকে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে বিদেশ থেকে দেশে আসা প্রবাসীদের জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এখন থেকে যেকোনো দেশ থেকে আসতে হলে ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে হবে, যা আগে ছিল ৭২ ঘণ্টা।
বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, যে যাত্রীরা আফ্রিকা থেকে আসবেন, বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইনে যেতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। যদি কোনো দেশ থেকে করোনা টেস্ট ছাড়া কেউ আসে, তাদের অবশ্যই ৪৮ ঘণ্টার বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে যেতে হবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ওমিক্রন: বিশ্বব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া, পুঁজিবাজারে বড় পতন

আপডেট সময় : ১২:৪৩:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সম্ভবত এরইমধ্যে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, এটি এখনো স্পষ্ট নয় যে- এটি বিদ্যমান পিসিআর পরীক্ষার দ্বারা কতটা ভালোভাবে শনাক্ত করা যায়। ডিএনকেওএম-এর মলিকুলার জেনেটিক স্টাডিসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান আন্দ্রে ইসায়েভ সম্প্রতি এ কথা বলেছেন।
বিপরীতে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ফাইজারের সহ-নির্মাতা এবং বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর শাহিন করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিষয়টি মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে উগুর শাহিন বলেন, করোনা টিকা নেওয়ার পরও অনেক মানুষ ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হলেও তারা সম্ভবত গুরুতর অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।
করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে। পরে ওমিক্রন নিয়ে সৃষ্ট আতঙ্কে আফ্রিকার দেশগুলোর বিরুদ্ধে একে একে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে বিশ্বের বহু দেশ।
বৈশ্বিক এই উদ্বেগের মধ্যেই আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর শাহিন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মানুষের উদ্দেশে আমাদের বার্তা হচ্ছে- আতঙ্কিত হবেন না। (মহামারিকে হারানোর) পরিকল্পনা আগের মতোই আছে। করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার গতি আরও বাড়িয়ে দিতে হবে।’
কিন্তু সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন যেভাবে দ্রুত ছড়াচ্ছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতোই বটে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস ইতোমধ্যে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো সৌদি আরব। এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে আল আরাবিয়া জানায়, আফ্রিকান এক নাগরিকের দেহে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরাও আছেন আইসোলেশনে।
ওমিক্রন আবিষ্কারের পরপরই মালাউই, জাম্বিয়া, মাদাগাস্কার, এঙ্গোলা, সিচেলাস, মরিশাস ও কমোরোসের সঙ্গে সবরকম ফ্লাইট স্থগিত করেছে সৌদি আরব। সেইসঙ্গে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত সবাইকে গভীর পর্যবেক্ষণে রাখছে কর্তৃপক্ষ বলে জানিয়েছে সৌদি প্রেস এজেন্সি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্টটি অন্তত ৩২টি মিউটেশন (জিনগত গঠনের পরিবর্তন) ঘটিয়েছে। যার বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে মিউটেশন ছিল ১০টি আর বেটায় ৬টি। আর ওমিক্রনের ‘ইউনিক’ মিউটেশনের সংখ্যা এর অনেক বেশি। মোট ২৬টি।
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকাগুলো কতটা কার্যকর হবে, সেটি নিয়েও চলছে বিস্তর গবেষণা। এখন পর্যন্ত আশাজাগানিয়া কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে মঙ্গলবার টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার সিইও ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকার সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ধরনটির বিরুদ্ধে কার্যকর লড়াইয়ে নতুন টিকার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার এমন মন্তব্যে এরইমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিশ্ববাজারে। বড় পতন হয়েছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারেও।
মার্কিন টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টিফেন ব্যান্সেল ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে করোনার নতুন ধরনের প্রভাব নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, করোনার বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলার সুযোগ নেই। এটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান টিকা একই রকমের কার্যকর হবে, এটাও ঠিক না। আমাদের সঙ্গে আগে থেকে ডেল্টা ছিল। নতুন করে ওমিক্রনের সংক্রমণের কারণে টিকার কাঁচামালের সরবরাহ কমবে। তবে এর পরিমাণ জানতে আমাদের আরো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমি যতগুলো বিজ্ঞানীর সঙ্গে কথা বলেছি, কেউ এটার পরিণতি ভালো বলেননি। এ সময় তিনি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়তে নতুন টিকার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। বিদ্যমান টিকায় ধরনটির প্রতিরোধ সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা থাকায় অতিমারী দীর্ঘ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত টিকার মধ্যে মডার্নার টিকাকেই সবচেয়ে বেশি কার্যকর হিসেবে দেখা হচ্ছিল। বিভিন্ন গবেষণায় সেটিও প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে খোদ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীর এমন মন্তব্যে উদ্বিগ্ন সব মহল।
মডার্না প্রধানের এমন মন্তব্যের জেরে মঙ্গলবার বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের সূচক বড় পতন হয়। ইউরোপের প্রধান পুঁজিবাজারে মঙ্গলবার প্রাথমিক লেনদেনে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পতন ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচকগুলো লেনদেনের শুরুতেই পতনের মুখে পড়ে। এর মধ্যে ডাও জোনস দশমিক ৮ শতাংশ, নাসডাক দশমিক ৩ শতাংশ ও এসঅ্যান্ডপি-৫০০ সূচকে দশমিক ৬ শতাংশ পতন হয়। এশিয়ার পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ সূচকই ছিল নিম্নমুখী। এর মধ্যে হ্যাংসেং ৩৭৭ পয়েন্ট, নিক্কেই-২২৫ সূচক ৪৬২ ও সেনসেক্স ১৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে লেনদেন শেষ করে। পুঁজিবাজারের পাশাপাশি ওমিক্রন-সৃষ্ট অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক পণ্যবাজারেও। অপরিশোধিত জ¦ালানি তেলের বাজার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্য এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমেছে।
এদিকে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে বিদেশ থেকে দেশে আসা প্রবাসীদের জন্য নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এখন থেকে যেকোনো দেশ থেকে আসতে হলে ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে হবে, যা আগে ছিল ৭২ ঘণ্টা।
বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর বিসিপিএস মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, যে যাত্রীরা আফ্রিকা থেকে আসবেন, বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইনে যেতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ৪৮ ঘণ্টা আগের করোনার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। যদি কোনো দেশ থেকে করোনা টেস্ট ছাড়া কেউ আসে, তাদের অবশ্যই ৪৮ ঘণ্টার বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনে যেতে হবে।