ঢাকা ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

ওই নতুনের কেতন ওড়ে, তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ আজ পহেলা বৈশাখ ১৪৩০

  • আপডেট সময় : ০৩:০০:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩
  • ৩৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ পহেলা বৈশাখ। আজ সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে এসেছে নতুন বছর, বঙ্গাব্দ ১৪৩০। করোনা মহামারির তা-বে দুই বছর বন্ধ ছিল বৈশাখ উদযাপন। তাই নতুন উদ্যমে বৈশাখ বরণের প্রতীক্ষায় পুরো জাতি। আজ প্রভাতে সবাই গেয়ে উঠবে‘ ওই নতুনের কেতন ওড়ে কাল বোশেখীর ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান যেমন পাকিস্তান আমলে এক দ্রোহ থেকে জন্ম নিয়েছিল, মঙ্গল শোভাযাত্রাও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু হয়েছিল। এরপর দেশে রাজনৈতিক নানা পটপরিবর্তন হয়েছে। তবে, এ দুটি আয়োজন সব সময় মানুষকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নেওয়ার প্রত্যয় জুগিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসবে। পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারা দেশ। দেশ জুড়ে নানা অনুষ্ঠানে গানে গানে, আনন্দ আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে বাংলার মানুষ। সবার কণ্ঠে থাকবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। নববর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রাজধানীতে প্রতি বছর ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন। সবার ঠিকানা হয়ে উঠে রমনা বটমূলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর এলাকা। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভোর সোয়া ৬টায় শুরু হবে বর্ষবরণের আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত নতুন অঙ্গীকার ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুধু ঢাকা নয় এখন সারা দেশেই ছায়ানটের আদলে গানের আয়োজন এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। আজ সরকারি ছুটি। বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদ্যাপনে রাজধানী এবং দেশ জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।
বাংলা বর্ষের প্রচলন : মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথম দিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য সম্রাট আকবরের যুগে বৈশাখ থেকে প্রবর্তন হয়েছিল বাংলা সালের। বর্ষ শুরুর সেই দিনটিই এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাদশাহ আকবরের নবরতœ সভার আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাদশাহি খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য ফসলি সালের শুরু করেছিলেন হিজরি চান্দ্রবর্ষকে বাংলা সালের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছিলেন ও পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেছিলেন। আর বৈশাখ নামটি নেওয়া হয়েছিল নক্ষত্র ‘বিশাখা’র নাম থেকে। বিশাখা থেকে নাম হলো বৈশাখ। পয়লা বৈশাখের দিনে উৎসবের শুরুটাও সেই আকবর আমলেই। এ দিনে তিনি মিলিত হতেন প্রজাদের সঙ্গে। সবার শুভ কামনা করে চারদিকে বিতরণ করা হতো মিষ্টি। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে বর্ষবরণ উৎসব চলে আসে জমিদারবাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মতো একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান বাজনা, মেলা আর হালখাতার অনুষ্ঠান। আজ আর খাজনা আদায় নেই। তবে ‘হালখাতা’ রয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী মহলে ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান মানে নতুন অর্থবছরের হিসাব খোলা। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন একটি ‘লাল কভারের’ খাতায় হিসাব খুলে নতুন উদ্যমে শুরু করা হয় ব্যবসা। সেখানে অতীতের ভুল ভ্রান্িতগুলো পর্যালোচনা করা হয়। হালখাতা থেকে নেওয়া হয় নতুন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ওই নতুনের কেতন ওড়ে, তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ আজ পহেলা বৈশাখ ১৪৩০

আপডেট সময় : ০৩:০০:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ পহেলা বৈশাখ। আজ সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে এসেছে নতুন বছর, বঙ্গাব্দ ১৪৩০। করোনা মহামারির তা-বে দুই বছর বন্ধ ছিল বৈশাখ উদযাপন। তাই নতুন উদ্যমে বৈশাখ বরণের প্রতীক্ষায় পুরো জাতি। আজ প্রভাতে সবাই গেয়ে উঠবে‘ ওই নতুনের কেতন ওড়ে কাল বোশেখীর ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর।’ নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান যেমন পাকিস্তান আমলে এক দ্রোহ থেকে জন্ম নিয়েছিল, মঙ্গল শোভাযাত্রাও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু হয়েছিল। এরপর দেশে রাজনৈতিক নানা পটপরিবর্তন হয়েছে। তবে, এ দুটি আয়োজন সব সময় মানুষকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নেওয়ার প্রত্যয় জুগিয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসবে। পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারা দেশ। দেশ জুড়ে নানা অনুষ্ঠানে গানে গানে, আনন্দ আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে বাংলার মানুষ। সবার কণ্ঠে থাকবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। নববর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
রাজধানীতে প্রতি বছর ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন। সবার ঠিকানা হয়ে উঠে রমনা বটমূলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর এলাকা। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভোর সোয়া ৬টায় শুরু হবে বর্ষবরণের আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত নতুন অঙ্গীকার ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুধু ঢাকা নয় এখন সারা দেশেই ছায়ানটের আদলে গানের আয়োজন এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। আজ সরকারি ছুটি। বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদ্যাপনে রাজধানী এবং দেশ জুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।
বাংলা বর্ষের প্রচলন : মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথম দিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য সম্রাট আকবরের যুগে বৈশাখ থেকে প্রবর্তন হয়েছিল বাংলা সালের। বর্ষ শুরুর সেই দিনটিই এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাদশাহ আকবরের নবরতœ সভার আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাদশাহি খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য ফসলি সালের শুরু করেছিলেন হিজরি চান্দ্রবর্ষকে বাংলা সালের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছিলেন ও পয়লা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেছিলেন। আর বৈশাখ নামটি নেওয়া হয়েছিল নক্ষত্র ‘বিশাখা’র নাম থেকে। বিশাখা থেকে নাম হলো বৈশাখ। পয়লা বৈশাখের দিনে উৎসবের শুরুটাও সেই আকবর আমলেই। এ দিনে তিনি মিলিত হতেন প্রজাদের সঙ্গে। সবার শুভ কামনা করে চারদিকে বিতরণ করা হতো মিষ্টি। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে বর্ষবরণ উৎসব চলে আসে জমিদারবাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মতো একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান বাজনা, মেলা আর হালখাতার অনুষ্ঠান। আজ আর খাজনা আদায় নেই। তবে ‘হালখাতা’ রয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী মহলে ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান মানে নতুন অর্থবছরের হিসাব খোলা। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন একটি ‘লাল কভারের’ খাতায় হিসাব খুলে নতুন উদ্যমে শুরু করা হয় ব্যবসা। সেখানে অতীতের ভুল ভ্রান্িতগুলো পর্যালোচনা করা হয়। হালখাতা থেকে নেওয়া হয় নতুন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি।