ঢাকা ০৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

এ সংসদ নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম নয়: জি এম কাদের

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ‘ভারসাম্যের অভাব’ দেখতে পাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতার আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের; এ সংসদ কতটা সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে, তা নিয়েও তার সংশয় রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে স্পিকার নির্বাচনের পর শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে নিজের এই মতামত তুলে ধরেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যের সংখ্যার বিচারে বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি। আসন সংখ্যার বিচারে এবার সংসদে শতকরা ৭৫ ভাগই সরকার দলের। স্বতন্ত্র ২১ ভাগ। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। “৩-৪ ভাগ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। এ সংসদ কখনো নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।”
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কেবল ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। সংসদ সদস্য হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রত্যাশা করেন, স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরী নিরপেক্ষ ভূমিকাই রাখবেন। আগের স্পিকারদের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তারা দলীয় আনুগত্যে স্পিকার হলেও বাহ্যিকভাবে চেষ্টা করতেন নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার। আমি আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি, আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন।”
স্পিকারের ডান দিকে সরকার দলের আসন এবং বাঁ পাশে বিরোধী দলের যে আসন রাখা হয়, সে প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দুপক্ষই সমান হবেন। একটা হল সরকারি দল, আরেকটা হল বিপক্ষ। তারা সংখ্যায়ও কাছাকাছি থাকবে।
“তাহলে তাদের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হবে, নিজেদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়াঝাঁটি হবে। সংসদে জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে। এটাই ছিল সংসদ তৈরি করার উদ্দেশ্য।” গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্ররা ৬২টি আসন পেয়েছে। সে দিকে ইংগিত করে জি এম কাদের বলেন, “আসন বণ্টনে সিমিট্রিক্যালের (ভারসাম্যের) অভাব হয়েছে। তাই এটাকে সম্পূর্ণভাবে সুন্দর বলা যাবে না।” লাল- সবুজের জাতীয় পতাকার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “শুধু লাল নয়, শুধু সবুজ নয়। যদি সরকারি দলকে লাল বলি, তাহলে এ সংসদ লালময়। সবুজটা শুধু ছিঁটেফোঁটা। “এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বর্তমান সংসদ জাতিকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে- তা আশঙ্কার বিষয়। ভালোভাবে বললে বলতে হবে বিতর্কের বিষয়। দুই অংশের কর্মকা-ের ব্যবধান কমাতে পারলে- অর্থ্যাৎ সরকার ও বিরোধীদের সংসদ কর্মকা-ের ব্যবধান কমাতে পারলে যতটা কমবে, ততুটুক সংসদ কার্যকর হিসাবে গণ্য হবে।” বিরোধী দলীয় নেতা কাদের বলেন, “এ আশঙ্কা অবাস্তব নয়, যদি বলি- এ সংসদ কখনো নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না। সরকার বিরোধিরা যত বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বা করবেন, ততটুকু রাশ পাবে। “
সংসদকে কার্যকর ভূমিকায় পরিচালিত করতে কিছু দাবি তুলে ধরেন জাপা চেয়ারম্যান। “বিরোধীদের মতামতকে সংসদে তোলার সুযোগ দেবেন। সংসদের ভারসাম্যের ত্রুটি কমানোর প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব। তাই স্পিকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

এ সংসদ নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম নয়: জি এম কাদের

আপডেট সময় : ০২:১৭:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ‘ভারসাম্যের অভাব’ দেখতে পাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতার আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের; এ সংসদ কতটা সুচারুভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে, তা নিয়েও তার সংশয় রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে স্পিকার নির্বাচনের পর শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে নিজের এই মতামত তুলে ধরেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, “সংসদ সদস্যের সংখ্যার বিচারে বর্তমান সংসদে ভারসাম্য রক্ষা হয়নি। আসন সংখ্যার বিচারে এবার সংসদে শতকরা ৭৫ ভাগই সরকার দলের। স্বতন্ত্র ২১ ভাগ। তারাও প্রায় সরকার দলীয়। “৩-৪ ভাগ শুধু বিরোধী দলীয় সদস্য। এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। এ সংসদ কখনো নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না।”
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কেবল ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। সংসদ সদস্য হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রত্যাশা করেন, স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরী নিরপেক্ষ ভূমিকাই রাখবেন। আগের স্পিকারদের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তারা দলীয় আনুগত্যে স্পিকার হলেও বাহ্যিকভাবে চেষ্টা করতেন নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপন করার। আমি আপনার কাছে প্রত্যাশা করছি, আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখবেন।”
স্পিকারের ডান দিকে সরকার দলের আসন এবং বাঁ পাশে বিরোধী দলের যে আসন রাখা হয়, সে প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য ছিল দুপক্ষই সমান হবেন। একটা হল সরকারি দল, আরেকটা হল বিপক্ষ। তারা সংখ্যায়ও কাছাকাছি থাকবে।
“তাহলে তাদের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই হবে, নিজেদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়াঝাঁটি হবে। সংসদে জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে। এটাই ছিল সংসদ তৈরি করার উদ্দেশ্য।” গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্ররা ৬২টি আসন পেয়েছে। সে দিকে ইংগিত করে জি এম কাদের বলেন, “আসন বণ্টনে সিমিট্রিক্যালের (ভারসাম্যের) অভাব হয়েছে। তাই এটাকে সম্পূর্ণভাবে সুন্দর বলা যাবে না।” লাল- সবুজের জাতীয় পতাকার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “শুধু লাল নয়, শুধু সবুজ নয়। যদি সরকারি দলকে লাল বলি, তাহলে এ সংসদ লালময়। সবুজটা শুধু ছিঁটেফোঁটা। “এ সংসদে সম্পূর্ণ জাতিকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বর্তমান সংসদ জাতিকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে- তা আশঙ্কার বিষয়। ভালোভাবে বললে বলতে হবে বিতর্কের বিষয়। দুই অংশের কর্মকা-ের ব্যবধান কমাতে পারলে- অর্থ্যাৎ সরকার ও বিরোধীদের সংসদ কর্মকা-ের ব্যবধান কমাতে পারলে যতটা কমবে, ততুটুক সংসদ কার্যকর হিসাবে গণ্য হবে।” বিরোধী দলীয় নেতা কাদের বলেন, “এ আশঙ্কা অবাস্তব নয়, যদি বলি- এ সংসদ কখনো নিখুঁতভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে না। সরকার বিরোধিরা যত বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বা করবেন, ততটুকু রাশ পাবে। “
সংসদকে কার্যকর ভূমিকায় পরিচালিত করতে কিছু দাবি তুলে ধরেন জাপা চেয়ারম্যান। “বিরোধীদের মতামতকে সংসদে তোলার সুযোগ দেবেন। সংসদের ভারসাম্যের ত্রুটি কমানোর প্রচেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব। তাই স্পিকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”