ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

এ বছর রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি আয় ৩৮ শতাংশ বাড়তে পারে

  • আপডেট সময় : ০১:৫৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • ৬২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছর জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় বেড়ে ৩৩ হাজার ৭৫০ (৩৩৭.৫ বিলিয়ন) কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। গত বছরের তুলনায় এই আয় ৩৮ শতাংশ বেশি। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথির বরাত দিয়ে রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। বেশি তেল রপ্তানির পাশাপাশি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির ফলে রাশিয়ার এই লাভ হতে পারে। মুনাফায় উল্লম্ফনের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত রাশিয়ার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। অর্জিত এই আয় দিয়ে সামরিক ব্যয়সংস্থান করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। পাশাপাশি মন্দায় পড়া অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতির কারণে যখন জীবনযাত্রার মান কমছে, তখন বেতন ও পেনশন বাড়াতে এই অর্থ জোগান দিতে পারবেন তিনি। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সার্বিক অর্থনীতির যে ক্ষতি হচ্ছে, জ্বালানি রপ্তানি আয়ের উল্লম্ফনে কেবল তার আংশিকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে। জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট জেনিস ক্লুগা বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব খুবই গভীর। গাড়িশিল্পের মতো কিছু খাতে এর প্রভাব বিপর্যয়কর। এখন পর্যন্ত তেল খাত তুলনামূলকভাবে অক্ষত রয়েছে। গাড়িশিল্পের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ও আর্থিক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। ক্লুগা বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে এসব খাত ব্যাপকভাবে যুক্ত। ফলে এগুলো সবচেয়ে বেশি ভুগছে। সম্ভাব্য হিসাব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, আগামী বছর জ্বালানি রপ্তানি আয় ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি (২৫৫.৮ বিলিয়ন) ডলারে নেমে আসতে পারে। তবে এই আয়ের পরিমাণও গত বছরের ২৪ হাজার ৪২০ কোটি (২৪৪. ২ বিলিয়ন) ডলারের চেয়ে বেশি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কমে আসার আগে এই বছর গ্যাসের রপ্তানি মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে প্রতি ১ হাজার ঘনমিটার ৭৩০ ডলারে গিয়ে ঠেকবে। নিষেধাজ্ঞাসম্পর্কিত বিধিনিষেধের পর ধীরে ধীরে রাশিয়া তেল উৎপাদন বাড়াতে শুরু করেছে। এশিয়ার ক্রেতারা তেল কেনা বাড়িয়েছে। ফলে নথিতে ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত তেল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রম চীনে গ্যাস রপ্তানি বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি। রাশিয়ার গ্যাসের বড় বাজার ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিষেধাজ্ঞা ও রুবলে মূল্য পরিশোধ বিতর্কে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি কমেছে। রয়টার্স সপ্তাহের শুরুর দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে নথি হাতে পেয়েছে,তাতে বোঝা যায়, মস্কো শুরুর দিকে যে আশঙ্কা করেছিল, তার চেয়ে বরং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছে রাশিয়া। এ ছাড়া ধারণার চেয়ে দেশটির অর্থনীতি কম সংকুচিত হয়েছে। একটা পর্যায়ে মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছিল, দেশটির অর্থনীতি ১২ শতাংশের বেশি সংকুচিত হতে পারে,যা হতে পারত সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সবচেয়ে মারাত্মক। তবে তারা এখন মনে করছে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন ৪ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এ বছর রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানি আয় ৩৮ শতাংশ বাড়তে পারে

আপডেট সময় : ০১:৫৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছর জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় বেড়ে ৩৩ হাজার ৭৫০ (৩৩৭.৫ বিলিয়ন) কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। গত বছরের তুলনায় এই আয় ৩৮ শতাংশ বেশি। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথির বরাত দিয়ে রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। বেশি তেল রপ্তানির পাশাপাশি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির ফলে রাশিয়ার এই লাভ হতে পারে। মুনাফায় উল্লম্ফনের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত রাশিয়ার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। অর্জিত এই আয় দিয়ে সামরিক ব্যয়সংস্থান করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। পাশাপাশি মন্দায় পড়া অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতির কারণে যখন জীবনযাত্রার মান কমছে, তখন বেতন ও পেনশন বাড়াতে এই অর্থ জোগান দিতে পারবেন তিনি। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সার্বিক অর্থনীতির যে ক্ষতি হচ্ছে, জ্বালানি রপ্তানি আয়ের উল্লম্ফনে কেবল তার আংশিকটাই কাটিয়ে ওঠা যাবে। জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট জেনিস ক্লুগা বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব খুবই গভীর। গাড়িশিল্পের মতো কিছু খাতে এর প্রভাব বিপর্যয়কর। এখন পর্যন্ত তেল খাত তুলনামূলকভাবে অক্ষত রয়েছে। গাড়িশিল্পের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি ও আর্থিক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। ক্লুগা বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে এসব খাত ব্যাপকভাবে যুক্ত। ফলে এগুলো সবচেয়ে বেশি ভুগছে। সম্ভাব্য হিসাব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, আগামী বছর জ্বালানি রপ্তানি আয় ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি (২৫৫.৮ বিলিয়ন) ডলারে নেমে আসতে পারে। তবে এই আয়ের পরিমাণও গত বছরের ২৪ হাজার ৪২০ কোটি (২৪৪. ২ বিলিয়ন) ডলারের চেয়ে বেশি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কমে আসার আগে এই বছর গ্যাসের রপ্তানি মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে প্রতি ১ হাজার ঘনমিটার ৭৩০ ডলারে গিয়ে ঠেকবে। নিষেধাজ্ঞাসম্পর্কিত বিধিনিষেধের পর ধীরে ধীরে রাশিয়া তেল উৎপাদন বাড়াতে শুরু করেছে। এশিয়ার ক্রেতারা তেল কেনা বাড়িয়েছে। ফলে নথিতে ২০২৫ সালের শেষ পর্যন্ত তেল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রম চীনে গ্যাস রপ্তানি বাড়ানোর কথা জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি। রাশিয়ার গ্যাসের বড় বাজার ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিষেধাজ্ঞা ও রুবলে মূল্য পরিশোধ বিতর্কে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস রপ্তানি কমেছে। রয়টার্স সপ্তাহের শুরুর দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে নথি হাতে পেয়েছে,তাতে বোঝা যায়, মস্কো শুরুর দিকে যে আশঙ্কা করেছিল, তার চেয়ে বরং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছে রাশিয়া। এ ছাড়া ধারণার চেয়ে দেশটির অর্থনীতি কম সংকুচিত হয়েছে। একটা পর্যায়ে মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছিল, দেশটির অর্থনীতি ১২ শতাংশের বেশি সংকুচিত হতে পারে,যা হতে পারত সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সবচেয়ে মারাত্মক। তবে তারা এখন মনে করছে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন ৪ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।