নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৬৭ জন। এ সময়ে মারা গেছেন আরও তিন জন। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত (সাড়ে ১১ মাস) ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২১৬ জন। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৫৯ জন।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার ৪৬৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩০৩ জন। আর চলতি মাসের ১৬ দিনে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আর এ মাসে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৭৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ৭২৯ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই আছে ১ হাজার ৫২৮ জন। বাকি ১ হাজার ২০১ জন ঢাকার বাইরের। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৫০ হাজার ৭৫৯ জন রোগীর মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৮১৪ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসের ১৬ দিনেই মারা গেল ৭৫ জন, যা অক্টোবরের এক মাসের রেকর্ড ৮৬ জনের কাছাকাছি। গত মঙ্গলবার একদিনে আট জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সাধারণত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকলেও নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেও এডিস মশা বাহিত এই রোগের তা-ব চলছে। প্রতিদিনই মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালেও প্রতিদিন শত শত রোগী ভর্তি হচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হন ৯ হাজার ৯১১ জন, অক্টোবের এই সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ২১ হাজার ৯৩২ জনে। নভেম্বরের ১৬ দিনেই ১২ হাজার ৭৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা যায়নি। তবে ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। তাদের মধ্যে ১০৫ জন মারা যান।
ডেঙ্গু আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ডেঙ্গু পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বুধবার দুপুরে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পরিষ্কার ও খনন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এই দাবি করেন। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৩৭ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছেন। তো আমরা মনে করি যে, এটা (ডেঙ্গু) আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও আমরা লক্ষ্য করছি, এটা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার বাইরে এর প্রাদুর্ভাব আরও বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখছি। কীটপতঙ্গের বা এডিস মশার বিবর্তনের পরিবর্তন দেখছি এবং সময়সীমার পরিবর্তন দেখছি। ডেঙ্গুর বিষয়ে পূর্বাভাস পাওয়া প্রয়োজন বলে জানান ডিএসসিসি মেয়র। এবার এডিস মশার প্রাদুর্ভাব অক্টোবর ছাড়িয়ে নভেম্বর পর্যন্ত চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন কার্তিক মাসের শেষদিন। এতদিন এডিস মশার প্রাদুর্ভাব থাকার কথা না। এখন আমরা শুষ্ক মৌসুমে চলে এসেছি। কিন্তু তারপরও এডিস মশার বিস্তার লক্ষ্য করছি। ফলে এডিস মশা নিধনের জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের কাজ চলমান রাখতে হচ্ছে। মৌসুমের পরও এডিস এবং মৌসুমের আগে কিউলেক্স মশার বিস্তার হওয়ার কারণ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের আরও গবেষণা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ডিএসসিসি মেয়র। এ ধরনের গবেষণায় সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি। মেয়র বলেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন। এজন্য যদি কোনো বরাদ্দ লাগে, তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তা দিতে প্রস্তুত। কারণ আমরা ঢাকাবাসীকে মশক নিয়ন্ত্রণের সুফল পৌঁছে দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এ বছর অর্ধলাখের বেশি ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু ২১৬
ট্যাগস :
এ বছর অর্ধলাখের বেশি ডেঙ্গু রোগী
জনপ্রিয় সংবাদ

























