ঢাকা ১১:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এস আলম গ্রুপের ৩ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আদেশ

  • আপডেট সময় : ১১:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: আলোচিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, গ্রুপটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ ও পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক এ আবেদন করেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এএম ট্রেডিং নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে জাল নথি প্রস্তুত ও ব্যবহার করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৮ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সাইফুল আলম দুর্নীতির মাধ্যমে এ অর্থ এস আলম সুপার ইডিবল ওয়েলের স্বার্থে স্থানান্তর বা পুনর্বিন্যাস বা রূপান্তর করেছেন। যার পরিমাণ ৩৪০ কোটি টাকা। এসব কর্মকাণ্ড দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর, ৪০৯, ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ধারা ৪(২) ও ৪(৩) আওতাভুক্ত।

আবেদনে আরো বলা হয়, তদন্ত চলাকালীন সময়ে আসামিদের আটক করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তারা বিদেশে পলাতক আছেন। তাই মোহাম্মদ সাইফুল আলম, আবদুস সামাদ এবং মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কর্তৃক তা কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়।

এর আগে ৯ জুলাই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ৫৩ ব্যাংকের হিসেব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংকের হিসাবে ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা রয়েছে। গত ২৪ জুন সাইপ্রাসের লিমাসল জেলায় অবস্থিত সাইফুল আলমের (এস আলম) একটি দুইতলা বাড়ি, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে হ্যাজেক ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডে তাদের বিনিয়োগকৃত ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং পিকক প্রপার্টি হোল্ডিংসসহ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে আরো ১৮টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া জার্সি ট্রাস্ট কোম্পানির অধীনে ছয়টি ট্রাস্টে থাকা বিভিন্ন অঙ্কের বিনিয়োগও জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। তার আগে গত ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত।

গত ১৭ এপ্রিল এস আলমের এক হাজার ৩৬০ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচ’শ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

এসি/আপ্র/২৫/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এস আলম গ্রুপের ৩ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আদেশ

আপডেট সময় : ১১:৪০:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: আলোচিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, গ্রুপটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ ও পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে উপপরিচালক তাহসিন মুনাবিল হক এ আবেদন করেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এএম ট্রেডিং নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে জাল নথি প্রস্তুত ও ব্যবহার করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৮ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সাইফুল আলম দুর্নীতির মাধ্যমে এ অর্থ এস আলম সুপার ইডিবল ওয়েলের স্বার্থে স্থানান্তর বা পুনর্বিন্যাস বা রূপান্তর করেছেন। যার পরিমাণ ৩৪০ কোটি টাকা। এসব কর্মকাণ্ড দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর, ৪০৯, ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ধারা ৪(২) ও ৪(৩) আওতাভুক্ত।

আবেদনে আরো বলা হয়, তদন্ত চলাকালীন সময়ে আসামিদের আটক করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তারা বিদেশে পলাতক আছেন। তাই মোহাম্মদ সাইফুল আলম, আবদুস সামাদ এবং মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কর্তৃক তা কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়।

এর আগে ৯ জুলাই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ৫৩ ব্যাংকের হিসেব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব ব্যাংকের হিসাবে ১১৩ কোটি ৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৮ টাকা রয়েছে। গত ২৪ জুন সাইপ্রাসের লিমাসল জেলায় অবস্থিত সাইফুল আলমের (এস আলম) একটি দুইতলা বাড়ি, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে হ্যাজেক ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডে তাদের বিনিয়োগকৃত ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং পিকক প্রপার্টি হোল্ডিংসসহ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে আরো ১৮টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া জার্সি ট্রাস্ট কোম্পানির অধীনে ছয়টি ট্রাস্টে থাকা বিভিন্ন অঙ্কের বিনিয়োগও জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। তার আগে গত ২৩ এপ্রিল তার ৪০৭ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৯ একর জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত।

গত ১৭ এপ্রিল এস আলমের এক হাজার ৩৬০ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে দুই হাজার ৬১৯ কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার টাকা রয়েছে। গত ১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের আট হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচ’শ টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা। গত ১৬ জানুয়ারি এস আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন একই আদালত। গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

এসি/আপ্র/২৫/০৯/২০২৫