এ কে সরকার শাওন: বাংলা দোলে এলোচুলে
গ্রীষ্মের উষ্ণ নিঃশ্বাসে!
প্রকৃতি বিবর্ণ তামাটে বর্ণ
রুক্ষ চর্ম খসখসে!
তরু রুষ্ট প্রাণী অতিষ্ট
নির্জীব প্রাণ মরে মরে!
কাজে-কর্মে গলদঘর্ম
হিটস্ট্রোকেও প্রাণ ঝরে!
এসো বৃষ্টি মহাসৃষ্টি
করো শীতল-শুচি!
প্রস্তুত তোরণ হোক আগমন
ডালি হাতে উদীচী!
আষাঢ় এসো বর্ষে বসো
দহনকে করো চূর্ণ!
টপ টপা টপ পানি ছিটাও
প্রকৃতি হোক পূর্ণ!
বর্ষণ করো রসান করো
শীতল করো ব-দ্বীপ!
শ্যামল-সজীব কুঞ্জে কুঞ্জে
উঁচিয়ে উঠুক নীপ!
নীপ নাচুক দোপাটি দুলুক
পাগলা পুব হাওয়ায়!
সজনীর আঁচল হাওয়ায় উড়ুক
জগলুর বাঁশির দোলায়!
প্রশান্তির পরশে মনের হরষে
কৃষকের বাড়ুক জোশ!
ধান-পাটের সবুজ দোলায়
কবির দিল হোক খোশ!
শ্রাবণ মাস মেঘলা আকাশ
নীলিমা নিশ্চিহ্ন হায়!
সারাদিন শুনি নুপূরের ধ্বনি
পরীদল বাজনা বাজায়!
কেয়া, কেতকী, কামিনী, জুঁই
হাসনাহেনার ঘ্রাণে!
মৌ মৌ তাবৎ বাগ-বাড়ি
ভাবুকের মন চনমনে!
বৃষ্টির ছোঁয়ায় রূপসী বাংলায়
প্রাণের স্পন্দন জাগে!
শ্যামল মাঠ টইটুম্বুর ঘাট
স্বপ্ন-ছবির মতো লাগে!
ঘন বর্ষায় ফাগুন ধায়
মনে সুর বাজে।
বৃষ্টির ফোঁটায় কাব্য ফোটে
ঘোর বরষায় ভিজে!
টইটুম্বুর ডোবা পুকুরে
দিঘির স্বচ্ছ জলে;
ছলাৎ ছলাৎ মাছ নাচে
বাংলার খালে বিলে!
বিলে-ঝিলে শাপলা খোলে
কৌমুদী উল্লাসে রাতে।
দরাজ গলায় গান গায়
রাখাল রাত-বিরাতে!
বর্ষণমুখর সন্ধ্যা মনোহর
আলো-ছায়ার প্রহর!
জানালার পাশে মাতাল বাতাসে
ভাসে স্মৃতির বহর।
কেউ উল্লাসে কেউ ভাসে
কেউ বিরহে ভস্ম।
বর্ষণমুখর মনের মুকুরে
চির বিরহী নিঃস্ব!