নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাক্রম পরিবর্তন আর বছরের শুরুতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে বিলম্ব হওয়ার পর ২০২৬ সালের এসএসসির প্রাক-নির্বাচনি ও নির্বাচনি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।
আগামী ২৪ জুন থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর। আর ১৬ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনি পরীক্ষা পিছিয়ে ২৭ নভেম্বর শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংশোধিত এ শিক্ষাপঞ্জি সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
সরকারি মাধ্যমিক শাখার উপসচিব রহিমা আক্তার মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বলেন, এসএসসির প্রাক-নির্বাচনি ও নির্বাচনি পরীক্ষার সময় কিছুটা পিছিয়ে ছুটির তালিকা ও বর্ষপঞ্জি সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
শিক্ষাক্রম পরিবর্তন এবং বছরের শুরুতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে বিলম্ব কারণেই প্রাক-নির্বাচনি ও নির্বাচনি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “সার্বিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ যে ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করেছিল, সেই অনুযায়ী ২৪ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।
তবে নতুন সূচি অনুযায়ী, ১ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, যার ফল প্রকাশ করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।
পুরনো সূচিতে ১৬ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর দশম শ্রেণির নির্বাচনি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে, যার ফল ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে।
তবে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার সময় অপরিবর্তিত থাকছে। ২৪ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে ২৭ জুলাই। বার্ষিক পরীক্ষা ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে ৩০ ডিসেম্বর।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে নবম শ্রেণিতে বিভাগ-বিভাজন তুলে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন শিক্ষাক্রম ‘বাস্তবায়ন যোগ্য’ নয় বলে ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে ঘোষণা আসে, যেখানে বিভাগ বিভাজন ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়।
ফলে ২০২৪ সালে যেসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে পড়ছিলেন, তারা পরের বছর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভাগ হয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সাধারণত নবম শ্রেণিতে যে বই দেওয়া হতো- তাই এসএসসি পর্যন্ত পাঠ্য ছিল শিক্ষার্থীদের।
প্রথমবারের মতো দশম শ্রেণিতে যে বই দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা পরিমার্জনে দেরি হওয়ায় বছরের শুরুতেই সব বই হাতে পাননি শিক্ষার্থীরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান বলেন, দশম শ্রেণির ৯৫ শতাংশ বই জানুয়ারির মধ্যেই পাঠানো হয়েছে। অল্প কিছু বই ছিল, সেগুলো ফেব্রুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীরা হাতে পেয়েছ।