অর্থনৈতিক ডেস্ক: দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয় তৈরি করছে এসএমই নীতিমালা ২০২৫। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন ও নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ চায় এসএমই ফাউন্ডেশন। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ‘এসএমই নীতিমালা-২০২৫: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে কর্মশালার সহযোগিতা করে অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুশফিকুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ। এটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর সম্ভাব্য বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০৩০ পর্যন্ত। নীতিমালায় বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়নে ১০টি কৌশলগত লক্ষ্যের আওতায় ৮৩টি কর্মকৌশল ও কৌশলগত হাতিয়ার এবং ৩১০টি কার্যক্রম রয়েছে। প্রতিটি কার্যক্রমের জন্য প্রধান বাস্তবায়নকারী সংস্থা ছাড়াও সহযোগী বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও সংস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কর্মকৌশলসমূহকে স্বল্পমেয়াদি (১ বছর), মধ্যমেয়াদি (২-৩ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদি (৪-৫ বছর)- ৩ ভাগে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়নে নিয়মিত সভা আয়োজন, অর্থ বরাদ্দ, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার নজরদারি, ঢাকার বাইরে এসএমই ফাউন্ডেশনের কার্যালয় স্থাপন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের অবদান বাড়ানোর লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এসএমই নীতিমালা ২০২৫ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করতে এই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে এই নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়নে এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বাস্তবায়ন সহযোগী মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের অনুকূলে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। সরকার এ বিষয়টি গুরুত্ব দেবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে সিএমএসএমই খাতের অবদান উন্নত দেশগুলো এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায়ও অনেক কম। পাকিস্তানে এই হার ৪০ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৫২ শতাংশ, চীনে ৬০ শতাংশ, ভারতে ৩৭ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ২৮ শতাংশ। এটি বাড়ানো দরকার। তিনি জানান, জুলাই বিপ্লবের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসএমই নীতিমালা ২০২৫ কে ঘিরে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তারা আশা করছেন, এই নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়নে সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বাস্তবায়ন সহযোগীদের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান করবে।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, এসএমই খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে, অর্থের সীমিত উৎস, উচ্চ সুদহার, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত, পর্যাপ্ত নীতিমালার অভাব, পণ্যের বাজারজাতকরণের সমস্যা যা উত্তরণের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন।