ঢাকা ০২:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন খারিজ

  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাবরি মসজিদ ধ্বংসে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, উমা ভারতী, মুরলি মনোহর জোশিসহ অভিযুক্তদের কোনো হাত নেই বলে ফের জানিয়ে দিলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ২০২০ সালে এক বিশেষ সিবিআই আদালত তাদের এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে ফের আদালতে আবেদন করেছিলেন অযোধ্যার দুই বাসিন্দা। বুধবার সেই মামলা খারিজ করে দিলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়। সেই ঘটনায় লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলিমনোহর জোশি, উমা ভারতী, সাধ্বী ঋতম্ভরা, প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, রাম মন্দির ট্রাস্টের সভাপতি নৃত্যগোপাল দাস, বিনয় কাটিহারসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বাবরি ধ্বংস মামলায় দুটি মূল এফআইআর দায়ের হয়। প্রথমটি ছিল লাখ লাখ করসেবকদের বিরুদ্ধে, যারা নিজের হাতে মসজিদটি ধ্বংস করেন। দ্বিতীয়টি আদবানি, যোশীদের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে। এই মামলার মোট অভিযুক্ত ছিলেন ৪৮ জন। তবে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে ১৭ জন অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। আদালতে আদবানিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা মোটেই পরিকল্পনামাফিক কাজ নয়। এই কাজে আদবানিদের মোটেই উসকানি ছিল না। করসেবকরা উত্তেজিত হয়ে মসজিদ ভাঙে। সেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এই মামলার জন্য সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত গঠন করা হয়। আদালত সাফ জানিয়েছিল, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। করসেবকরা নিজেদের ইচ্ছাতেই আচমকা ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে, তা বলার মতো কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। কোনো সংবাদপত্রের কাটিং বা ভিডিও ক্লিপকে প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করেনি আদালত।
প্রায় ২৮ বছর পর ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাবরি ধ্বংস মামলায় রায় ঘোষণা করে লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। সিবিআই আদালত অভিযুক্ত বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের পক্ষেই রায় দিয়েছিল। ২০২১ সালে সিবিআইয়ের আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন অযোধ্যার বাসিন্দা হাজি মাহাবুব ও সৈয়দ আখলাক। আদালতে আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ফলে তারা তাদের ঐতিহাসিক উপাসনাস্থল হারিয়েছিলেন। নিজেদেরকে ওই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী এবং শিকার বলে দাবি করেছিলেন তারা। শুধু তাই নয়, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবং দুষ্কৃতরা ব্যাপক লুঠপাট চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তারা। আবেদনকারী সৈয়দ আখলাখ আহমেদ দাবি করেছিলেন, সবাই জানে বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। তাই যে প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করা হয়েছে, সেটা যুক্তিহীন। এই মামলার সব সাক্ষ্যপ্রমাণ ফের খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছিলেন তারা।এই আবেদনের বিরোধিতা করে সিবিআই আদালতে বলেছিল, আবেদনকারীরা মূল মামলার অভিযোগকারী বা শিকার ছিল না। তাই তাদের সিবিআই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করার এখতিয়ার নেই। গত ৩১ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। তবে আদালত সেদিন রায় ঘোষণা করেনি। বুধবার বিচারপতি রমেশ সিনহা এবং বিচারপতি সরোজ যাদবের বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে অযোধ্যার জমি বিতর্ক মামলার মীমাংসা ঘটেছিল। ওই জমিতে রাম মন্দির তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই সঙ্গে অযোধ্যাতেই ৫ একর জমির উপর একটি মসজিদ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন খারিজ

আপডেট সময় : ০১:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাবরি মসজিদ ধ্বংসে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, উমা ভারতী, মুরলি মনোহর জোশিসহ অভিযুক্তদের কোনো হাত নেই বলে ফের জানিয়ে দিলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ২০২০ সালে এক বিশেষ সিবিআই আদালত তাদের এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে ফের আদালতে আবেদন করেছিলেন অযোধ্যার দুই বাসিন্দা। বুধবার সেই মামলা খারিজ করে দিলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়। সেই ঘটনায় লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলিমনোহর জোশি, উমা ভারতী, সাধ্বী ঋতম্ভরা, প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, রাম মন্দির ট্রাস্টের সভাপতি নৃত্যগোপাল দাস, বিনয় কাটিহারসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। বাবরি ধ্বংস মামলায় দুটি মূল এফআইআর দায়ের হয়। প্রথমটি ছিল লাখ লাখ করসেবকদের বিরুদ্ধে, যারা নিজের হাতে মসজিদটি ধ্বংস করেন। দ্বিতীয়টি আদবানি, যোশীদের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে। এই মামলার মোট অভিযুক্ত ছিলেন ৪৮ জন। তবে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে ১৭ জন অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। আদালতে আদবানিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা মোটেই পরিকল্পনামাফিক কাজ নয়। এই কাজে আদবানিদের মোটেই উসকানি ছিল না। করসেবকরা উত্তেজিত হয়ে মসজিদ ভাঙে। সেখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এই মামলার জন্য সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত গঠন করা হয়। আদালত সাফ জানিয়েছিল, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। করসেবকরা নিজেদের ইচ্ছাতেই আচমকা ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে, তা বলার মতো কোনো তথ্য প্রমাণ নেই। কোনো সংবাদপত্রের কাটিং বা ভিডিও ক্লিপকে প্রমাণ হিসেবে গ্রাহ্য করেনি আদালত।
প্রায় ২৮ বছর পর ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বাবরি ধ্বংস মামলায় রায় ঘোষণা করে লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। সিবিআই আদালত অভিযুক্ত বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের পক্ষেই রায় দিয়েছিল। ২০২১ সালে সিবিআইয়ের আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন অযোধ্যার বাসিন্দা হাজি মাহাবুব ও সৈয়দ আখলাক। আদালতে আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ফলে তারা তাদের ঐতিহাসিক উপাসনাস্থল হারিয়েছিলেন। নিজেদেরকে ওই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী এবং শিকার বলে দাবি করেছিলেন তারা। শুধু তাই নয়, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবং দুষ্কৃতরা ব্যাপক লুঠপাট চালিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তারা। আবেদনকারী সৈয়দ আখলাখ আহমেদ দাবি করেছিলেন, সবাই জানে বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল। তাই যে প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করা হয়েছে, সেটা যুক্তিহীন। এই মামলার সব সাক্ষ্যপ্রমাণ ফের খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছিলেন তারা।এই আবেদনের বিরোধিতা করে সিবিআই আদালতে বলেছিল, আবেদনকারীরা মূল মামলার অভিযোগকারী বা শিকার ছিল না। তাই তাদের সিবিআই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করার এখতিয়ার নেই। গত ৩১ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। তবে আদালত সেদিন রায় ঘোষণা করেনি। বুধবার বিচারপতি রমেশ সিনহা এবং বিচারপতি সরোজ যাদবের বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে অযোধ্যার জমি বিতর্ক মামলার মীমাংসা ঘটেছিল। ওই জমিতে রাম মন্দির তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই সঙ্গে অযোধ্যাতেই ৫ একর জমির উপর একটি মসজিদ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।