ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

এলসি বেড়েছে ভোগ্যপণ্যে, কমেছে মূলধনী যন্ত্রাংশে

  • আপডেট সময় : ০৮:৩১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : রমজান মাসে খাদ্যের সরবরাহ বাড়াতে মনোযোগ দেয় সরকার, যাতে ঘাটতিজনিত কারণে বাজারে পণ্যের দাম না বাড়ে। ফলে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা বেড়েছে। একই সময়ে মূলধনী যন্ত্র আমদানিতে এলসি খোলা এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসের এলসির হিসাবে এমন চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে মোট এলসি খোলা হয়েছে ৪ হাজার ৭২৮ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। আগের বছরে মোট এলসি খোলা হয়েছিল ৪ হাজার ৫১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ডলারের।

এ সময়ে খোলা এলসির মধ্যে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে খোলা হয়েছে ৪৭১ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। মূলধনী যন্ত্রে এলসি খোলা হয়েছে ১১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ৩০ দশমিক ১০ শতাংশ। মধ্যবর্তী পণ্যে এলসি খোলা হয়েছে ২৯২ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার ডলারের; কমেছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। পেট্রোলিয়ামে এলসি খোলা হয়েছে ৫৯২ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার ডলারের, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ কমেছে। শিল্পের কাঁচামালের এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের, বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যান্য পণ্যে এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের, আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং পতন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে বিনিয়োগ হয়নি। ব্যাংকের সূত্রগুলো বলছে, এ সময়ে পুরাতন শিল্প কারখানার জন্য কিছু মূল্যধনী যন্ত্রপাতি আমদানি হয়েছে। নতুন করে মূলধনী যন্ত্র আমদানি হয়নি। ফলে মূলধনী যন্ত্র আমদানিতে ধস নেমেছে। মধ্যবর্তী পণ্যেও কিছু এলসি খোলা কমেছে। তবে বাজারে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে ও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ায় ভোগ্যপণ্যে এলসি বেড়েছে। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও কিছুটা বেড়েছে। যার ফলে রোজার মাসে খাদ্যের সরবারহ নিশ্চিত করা গেছে। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে এলসি বৃদ্ধির কারণে শিল্পের উৎপাদন ও রপ্তানি আয়ে স্থিতিশীলতা অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, এই মূহূর্তে বিনিয়োগকারীরা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছেন। এখনো নির্বাচিত সরকার নেই বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনবে, এমনটা এখনো হয়নি। সে কারণে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগের চিন্তা করছেন না। যেহেতু নতুন বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন না, এজন্য মূল্যধনী যন্ত্র আমদানিতে এলসি খোলা ৩০ শতাংশে নেমেছে। কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খোলার যে চিত্র, সেটা চলমান কারখানাগুলোকে চালু রাখার চেষ্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোজার মাসে সরকার যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে এবং দেশে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ঘাটতি ছিল, সেখানে আমদানি বাড়িয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এতে ভোগ্যপণ্যের এলসি বেড়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সাধুবাদ জানানো প্রয়োজন। রিজওয়ান রহমান আরও বলেন, প্রাইভেট সেক্টর যেকোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার কাজটি খুবই কঠিন হবে। যারা উৎপাদনে আছেন তারাই বিনিয়োগ করবেন।

কারণ দেশ ছেড়ে তারা কোথাও যাবেন না। আবার তার মানে এই না যে, এমন অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অনুকূল নীতি লাগবে এবং সেটার জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার লাগবে, যোগ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, মূলধনী যন্ত্র ৩০ শতাংশ কমে যাওয়া মানে বিনিয়োগ হচ্ছে না। আর কাঁচামাল ৫ শতাংশ বেড়েছে তার মানে হলো, যেসব বিনিয়োগকারী উৎপাদনে আছেন তারা নিশ্চয়ই উৎপাদন করছেন আর সেই উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার জন্য কাঁচামাল আমদানি করছেন। মূলধনী যন্ত্র আমদানি যদি ৩০ শতাংশ কমে যায়, এটা কোনোমতেই ভালো খবর না। অর্থনীতির জন্য একটি খারাপ বার্তা নিয়ে আসে। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে দেশে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিদেশিদের বার্তা দিতে চান, যাতে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, দেশের তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরগতির ছিল। গত বছরের শেষদিক থেকে দেশগুলোর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে তারা তৈরি পোশাক আমদানিও বাড়িয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ভিত্তি ভালো থাকায় সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি। পরিবর্তিত অবস্থাতে আমাদের কমপ্লায়েন্সসহ অন্যান্য সুবিধা থাকার কারণে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। এ কারণে প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা রপ্তানি বাড়াতে পেরেছি। এ ছাড়া এই যে, বাণিজ্য যুদ্ধ (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ) শুরু হয়েছে, সেই সুবিধাও আমরা কিছুটা কাজে লাগাতে পেরেছি। মহিউদ্দিন রুবেল আরও বলেন, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের এখনো কাজ করতে হবে। আমরা বেশি রপ্তানি করছি কিন্তু মুনাফার দিক থেকে আমরা ভালো করতে পারছি না। উৎপাদনকারীদের মুনাফা কমে আসছে প্রতিনিয়ত।

এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য ক্যাপাসিটি পূরণ করতে হবে। কস্ট কম্পিটিটিভ হতে হবে। যদি এটা পারি তাহলে রপ্তানিকারকরা একটু মুনাফা করতে পারবেন, আবার শ্রমিকদের জন্য আরও কল্যাণকর কাজ করা যাবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এলসি বেড়েছে ভোগ্যপণ্যে, কমেছে মূলধনী যন্ত্রাংশে

আপডেট সময় : ০৮:৩১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

বিশেষ সংবাদদাতা : রমজান মাসে খাদ্যের সরবরাহ বাড়াতে মনোযোগ দেয় সরকার, যাতে ঘাটতিজনিত কারণে বাজারে পণ্যের দাম না বাড়ে। ফলে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা বেড়েছে। একই সময়ে মূলধনী যন্ত্র আমদানিতে এলসি খোলা এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসের এলসির হিসাবে এমন চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-ফেব্রুয়ারি আট মাসে মোট এলসি খোলা হয়েছে ৪ হাজার ৭২৮ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। আগের বছরে মোট এলসি খোলা হয়েছিল ৪ হাজার ৫১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ডলারের।

এ সময়ে খোলা এলসির মধ্যে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে খোলা হয়েছে ৪৭১ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। মূলধনী যন্ত্রে এলসি খোলা হয়েছে ১১৫ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমেছে ৩০ দশমিক ১০ শতাংশ। মধ্যবর্তী পণ্যে এলসি খোলা হয়েছে ২৯২ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার ডলারের; কমেছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। পেট্রোলিয়ামে এলসি খোলা হয়েছে ৫৯২ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার ডলারের, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ কমেছে। শিল্পের কাঁচামালের এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের, বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যান্য পণ্যে এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের, আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং পতন পরবর্তী আইনশৃঙ্খলার নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে বিনিয়োগ হয়নি। ব্যাংকের সূত্রগুলো বলছে, এ সময়ে পুরাতন শিল্প কারখানার জন্য কিছু মূল্যধনী যন্ত্রপাতি আমদানি হয়েছে। নতুন করে মূলধনী যন্ত্র আমদানি হয়নি। ফলে মূলধনী যন্ত্র আমদানিতে ধস নেমেছে। মধ্যবর্তী পণ্যেও কিছু এলসি খোলা কমেছে। তবে বাজারে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে ও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ায় ভোগ্যপণ্যে এলসি বেড়েছে। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও কিছুটা বেড়েছে। যার ফলে রোজার মাসে খাদ্যের সরবারহ নিশ্চিত করা গেছে। শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে এলসি বৃদ্ধির কারণে শিল্পের উৎপাদন ও রপ্তানি আয়ে স্থিতিশীলতা অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, এই মূহূর্তে বিনিয়োগকারীরা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছেন। এখনো নির্বাচিত সরকার নেই বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনবে, এমনটা এখনো হয়নি। সে কারণে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগের চিন্তা করছেন না। যেহেতু নতুন বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন না, এজন্য মূল্যধনী যন্ত্র আমদানিতে এলসি খোলা ৩০ শতাংশে নেমেছে। কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খোলার যে চিত্র, সেটা চলমান কারখানাগুলোকে চালু রাখার চেষ্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোজার মাসে সরকার যেভাবে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে এবং দেশে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ঘাটতি ছিল, সেখানে আমদানি বাড়িয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এতে ভোগ্যপণ্যের এলসি বেড়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সাধুবাদ জানানো প্রয়োজন। রিজওয়ান রহমান আরও বলেন, প্রাইভেট সেক্টর যেকোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি স্থিতিশীলতার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার কাজটি খুবই কঠিন হবে। যারা উৎপাদনে আছেন তারাই বিনিয়োগ করবেন।

কারণ দেশ ছেড়ে তারা কোথাও যাবেন না। আবার তার মানে এই না যে, এমন অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অনুকূল নীতি লাগবে এবং সেটার জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার লাগবে, যোগ করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, মূলধনী যন্ত্র ৩০ শতাংশ কমে যাওয়া মানে বিনিয়োগ হচ্ছে না। আর কাঁচামাল ৫ শতাংশ বেড়েছে তার মানে হলো, যেসব বিনিয়োগকারী উৎপাদনে আছেন তারা নিশ্চয়ই উৎপাদন করছেন আর সেই উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার জন্য কাঁচামাল আমদানি করছেন। মূলধনী যন্ত্র আমদানি যদি ৩০ শতাংশ কমে যায়, এটা কোনোমতেই ভালো খবর না। অর্থনীতির জন্য একটি খারাপ বার্তা নিয়ে আসে। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে দেশে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিদেশিদের বার্তা দিতে চান, যাতে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন।

তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, দেশের তৈরি পোশাকের প্রধান দুই বাজার ইউরোপ ও আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরগতির ছিল। গত বছরের শেষদিক থেকে দেশগুলোর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেই সাথে তারা তৈরি পোশাক আমদানিও বাড়িয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ভিত্তি ভালো থাকায় সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছি। পরিবর্তিত অবস্থাতে আমাদের কমপ্লায়েন্সসহ অন্যান্য সুবিধা থাকার কারণে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। এ কারণে প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা রপ্তানি বাড়াতে পেরেছি। এ ছাড়া এই যে, বাণিজ্য যুদ্ধ (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ) শুরু হয়েছে, সেই সুবিধাও আমরা কিছুটা কাজে লাগাতে পেরেছি। মহিউদ্দিন রুবেল আরও বলেন, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের এখনো কাজ করতে হবে। আমরা বেশি রপ্তানি করছি কিন্তু মুনাফার দিক থেকে আমরা ভালো করতে পারছি না। উৎপাদনকারীদের মুনাফা কমে আসছে প্রতিনিয়ত।

এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য ক্যাপাসিটি পূরণ করতে হবে। কস্ট কম্পিটিটিভ হতে হবে। যদি এটা পারি তাহলে রপ্তানিকারকরা একটু মুনাফা করতে পারবেন, আবার শ্রমিকদের জন্য আরও কল্যাণকর কাজ করা যাবে।