ঢাকা ০৩:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

এলডিসি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

  • আপডেট সময় : ০৯:১৬:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে কাতারে নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে তিনি কথা বলছিলেন। ওই বৈঠকে উত্তরণের জন্য নির্ধারিত প্রধান লক্ষ্যগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার বিষয়। আমরা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারী, অর্থায়নকারী এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মনোযোগ ও সমর্থন পেয়েছি। এখন আমাদের চলমান প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির ওপর জোর ইউনূস বলেন, আমাদের এমন একটি দল প্রয়োজন, যারা অগ্নিনির্বাপক দলের মত কাজ করবে, যে কোনো সময়ে দ্রুত সাড়া দেবে এবং সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় পুরো প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউনূস। তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ কার্যালয় থেকে উত্তরণ সম্পর্কিত সব উদ্যোগের বাস্তবায়ন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হবে।

অগ্রাধিকারমূলক ৫টি পদক্ষেপ: বৈঠকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটি পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ চিহ্নিত করা হয়েছে, যা দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজন।

১। জাতীয় সিঙ্গেল উইন্ডোর পূর্ণ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা, যাতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার কার্যক্রম একত্রিত হয়।

২। জাতীয় শুল্ক নীতি, ২০২৩ এর বাস্তবায়ন, যা একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

৩। জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি, ২০২৪ অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন, যা অর্থনীতির গতি বাড়াবে।

৪। সাভার ট্যানারি ভিলেজে ইটিপি (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন ও কার্যকর পরিচালনা, যা পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

৫। গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) পার্কের কার্যক্রম শুরু, যা দেশের ওষুধশিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলো কেবল রুটিন কাজ নয়, এগুলো বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা অর্থনীতিকে সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণ করবে।”

বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির সদস্য ও নীতি উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পাঁচ নির্দেশনা: দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে বেসামাল করে দেওয়ার পেছনে গত কয়েক দশক ধরে যারা জড়িত, তাদের বিচার না হলে মানুষের আস্থা ফিরবে না। শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা অকল্পনীয়। এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, যাতে এটি লুটেরাদের আড্ডাখানা না হয়ে মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে ওঠে।
প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি নির্দেশনা:
১। সরকারের মালিকানাধীন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।

২। দেশীয় বড় বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

৩। স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রোধে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার।

৪। পুঁজিবাজারে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।

৫। বড় ঋণপ্রবণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকঋণ-নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে উৎসাহিত করা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বজ্রপাতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

এলডিসি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ০৯:১৬:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে কাতারে নিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে তিনি কথা বলছিলেন। ওই বৈঠকে উত্তরণের জন্য নির্ধারিত প্রধান লক্ষ্যগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার বিষয়। আমরা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারী, অর্থায়নকারী এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মনোযোগ ও সমর্থন পেয়েছি। এখন আমাদের চলমান প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে দ্রুত ও কার্যকরভাবে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির ওপর জোর ইউনূস বলেন, আমাদের এমন একটি দল প্রয়োজন, যারা অগ্নিনির্বাপক দলের মত কাজ করবে, যে কোনো সময়ে দ্রুত সাড়া দেবে এবং সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় পুরো প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ইউনূস। তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ কার্যালয় থেকে উত্তরণ সম্পর্কিত সব উদ্যোগের বাস্তবায়ন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হবে।

অগ্রাধিকারমূলক ৫টি পদক্ষেপ: বৈঠকে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটি পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ চিহ্নিত করা হয়েছে, যা দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজন।

১। জাতীয় সিঙ্গেল উইন্ডোর পূর্ণ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা, যাতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার কার্যক্রম একত্রিত হয়।

২। জাতীয় শুল্ক নীতি, ২০২৩ এর বাস্তবায়ন, যা একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

৩। জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি, ২০২৪ অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন, যা অর্থনীতির গতি বাড়াবে।

৪। সাভার ট্যানারি ভিলেজে ইটিপি (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন ও কার্যকর পরিচালনা, যা পরিবেশ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখবে।

৫। গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) পার্কের কার্যক্রম শুরু, যা দেশের ওষুধশিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলো কেবল রুটিন কাজ নয়, এগুলো বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা অর্থনীতিকে সুষ্ঠু ও ভারসাম্যপূর্ণ করবে।”

বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির সদস্য ও নীতি উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পাঁচ নির্দেশনা: দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে বেসামাল করে দেওয়ার পেছনে গত কয়েক দশক ধরে যারা জড়িত, তাদের বিচার না হলে মানুষের আস্থা ফিরবে না। শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা অকল্পনীয়। এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, যাতে এটি লুটেরাদের আড্ডাখানা না হয়ে মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে ওঠে।
প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি নির্দেশনা:
১। সরকারের মালিকানাধীন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।

২। দেশীয় বড় বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

৩। স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রোধে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার।

৪। পুঁজিবাজারে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।

৫। বড় ঋণপ্রবণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকঋণ-নির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে উৎসাহিত করা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।