ক্রীড়া ডেস্ক : এই তো আগের মাসেই ধরা দেয় একটা শিরোপা। তার আগের পারফরম্যান্সেও ছিল প্রত্যয়ের ছাপ। কিন্তু ওই স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর থেকে যেন ধারাবাহিকতার পথ হারিয়ে ফেলে রিয়াল মাদ্রিদ। একের পর এক বাজে, ছন্দহীন পারফরম্যান্সে সমর্থকদের কাছেও বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে তারা। অবশেষে আলাভেসের বিপক্ষে শেষ ৪৫ মিনিটে দারুণ খেলে জয় পাওয়ার পর কোচ কার্লো আনচেলত্তি বললেন, এমন একটা ম্যাচের খুব দরকার ছিল। রিয়ালের সাম্প্রতিক সময়ের ফুটবল একেবারেই ধারহীন। যেন নিজেদের খুঁজে ফিরছে তারা। এই সময়ে তারা ছিটকে পড়েছে কোপা দেল রে থেকে। লা লিগায় শনিবারের আগের তিন রাউন্ডে জয় ছিল মাত্র একটি। তার সঙ্গে যোগ, গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে পিএসজির মাঠে হতশ্রী পারফরম্যান্সে ১-০ গোলে হার।
ঘরের মাঠে দেপোর্তিভো আলাভেসের বিপক্ষেও রিয়ালের শুরুটা ছিল যাচ্ছেতাই। আক্রমণভাগের সবাই যেন ছিল ঝিমিয়ে। প্রথমার্ধে তাদের আট শটের মাত্র দুটি ছিল লক্ষ্যে, তার কোনোটিই আবার যথেষ্ট ভীতি জাগানিয়া নয়। তবে বিরতির পর মাঠে নেমেই জ্বলে ওঠে তারা। একের পর আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রেখে তুলে নেয় গোল। শুরুটা হয় মার্কো আসেনসিওর দুর্দান্ত গোলে। ব্যবধান বাড়ে আক্রমণত্রয়ীর দারুণ বোঝাপড়া এবং ভিনিসিউস জুনিয়রের ঠা-া মাথার ফিনিশিংয়ে। তিন নম্বর গোলটি স্পট কিকে করেন করিম বেনজেমা। দারুণ এই জয়ের পাশাপাশি আনচেলত্তির জন্য বড় ভালো খবর হলো, আক্রমণভাগের তিন জনেরই জালের দেখা পাওয়া। ম্যাচ শেষে তাই কোচের কথায়ও মিশে রইল স্বস্তির ছোঁয়া। “আমাদের এমন একটা পারফরম্যান্সের খুব দরকার ছিল। ম্যাচের প্রথমার্ধে আমাদের ধুঁকতে হয়েছে। কিন্তু ৯০ মিনিট ধরেই আমরা সঠিকপথে নিবেদনটা দেখাতে পেরেছি। প্রথমার্ধে আমাদের আক্রমণের গুণগত মান ও সঠিক মুভমেন্টের ঘাটতি ছিল।” “বিরতির সময় বিষয়টি আমি তাদের (খেলোয়াড়দের) বলেছিলাম এবং দ্বিতীয়ার্ধে আমরা উন্নতি দেখতে পেলাম। মঙ্গলবারের ম্যাচে (পিএসজির বিপক্ষে) বাজে পারফরম্যান্সের পর সমর্থকরা এখানে আমাদের একটা পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখল এবং সেটা ইতিবাচক।”
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে আলাভেস ম্যাচে প্রথমার্ধে প্রিয় দলের অপরিকল্পিত, সাদামাটা পারফরম্যান্স দেখে দুয়ো দেয় রিয়াল সমর্থকরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আলো ছড়িয়ে ঠিকই তাদের মন জয় করতে সক্ষম হয় বেনজেমা-ভিনিসিউসরা। কঠিন সময়ে সমর্থকদের ভালোবাসা ফিরে পেয়ে খুশি হয়ে উঠেছেন আনচেলত্তি। শুরুতে তাদের দুয়ো দেওয়াতেও খারাপ কিছু দেখছেন না তিনি। “সমর্থকরা আমাদের পারফরম্যান্সের ওপর নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। প্রথমার্ধে আমাদের খেলা দেখে তাদের ভালো লাগেনি। কিন্তু তারা আমাদের দ্বিতীয়ার্ধের পারফরম্যান্স পছন্দ করেছে। বিরতিতে কেউই খুশি ছিল না।” সাম্প্রতিক সময়ে রিয়ালের আরেকটি ভাবনার কারণ প্রথমার্ধে তাদের গোল না পাওয়া। সমস্যাটির সমাধান খুঁজে বের করা খুব জরুরি বলে মনে করছেন কোচও। “প্রথমার্ধে গোল করতে না পারাটা একটা দুর্বলতা। বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি এবং এটা নিয়ে আমরা কাজ করব। আমাদের প্রতিপক্ষ দলগুলো প্রথমার্ধে প্রবল চাপ তৈরি করে। তাদের ওই আক্রমণের মাত্রা বিরতির পর পড়ে যায়, তখন আমাদের জন্য সবকিছু কিছুটা সহজ হয়ে ওঠে।” কাঙ্ক্ষিত এই জয়ের পর ২৫ ম্যাচে ১৭ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৫৭। ৭ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে এক ম্যাচ কম খেলা সেভিয়া। সেভিয়ার সমান ২৪ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রিয়াল বেতিস।
এমন একটা জয় দরকার ছিল : আনচেলত্তি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ