ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

এবার সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বেতন কমিটি গঠন

  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি, ২০২৫’ গঠন করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের এই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিশাদুল ইসলাম খান কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন- মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জহির উদ্দিন, এয়ার ভাইস মার্শাল রুসাদ দীন আছাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং চ ছা মং, এয়ার কমডোর জামিল উদ্দিন আহম্মদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিলিয়া শারমিন ও ক্যাপ্টেন মো. তৌহিদ সাগর।

কমিটিকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা, পারিবারিক পেনশনসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধার সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে।

এই কমিটি গত ২৭ জুলাই গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের সঙ্গে ‘সমন্বয় ও নিবিড় যোগাযোগ’ রক্ষা করে কাজ করবে। এছাড়া, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা যৌক্তিকীকরণ এবং বেতনক্রমের অসঙ্গতি দূর করতে সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কমিটি প্রয়োজনে তিন বাহিনীর জন্য পৃথক সাব-কমিটি গঠন করতে পারবে এবং যে কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির সহায়তা নিতে পারবে। এছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ দায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে সুপারিশ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। সেখানে বলা হয়েছে, কমিটি বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরির বিষয়ে নির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রণয়ন করবে।
১) পদমর্যাদা ও পদবিন্যাস নির্ধারণ। ২) বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট গুচ্ছভুক্ত করার পদ্ধতি নিরূপণ। ৩) উচ্চতর স্তরে পদায়ন করতে গিয়ে প্রতিযোগিতার সুযোগ নির্ধারণ। ৪) জীবনবেগী চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতার গুরুত্ব নিরূপণ।

কমিটিকে সুপারিশ প্রণয়নের সময় বাবা-মাতাসহ অনূর্ধ্ব ছয় জনের একটি পরিবারের জীবন-যাত্রার ব্যয়, অনূর্ধ্ব দুই সন্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের সম্পদ পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সম্পদের প্রয়োজনীয়তা, সংশ্লিষ্ট সংস্থা/প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয়ের অবস্থা, মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ, দেশের মৌলিক নীতিমালার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষ সম্পর্ক, জীবন যাত্রার ব্যয়ভার ও মান ও সশস্ত্র বাহিনীর অতীত কীর্তি ও ভাবমূর্তিসহ আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে বেসামরিক কর্মচারীদের সঙ্গে মিল রেখেই সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেছিল সরকার। ২০ গ্রেডে সাজানো ওই বেতন কাঠামোতে সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন চার তারকা জেনারেল মূল বেতন হিসাবে মাসে ৮৬ হাজার এবং সর্বনিম্ন গ্রেডে বেসামরিক দায়িত্বে থাকা একজন অফিস সহকারী ৮ হাজার ২৫০ টাকা পান। এর সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ সশস্ত্রবাহিনীর জন্য প্রযোজ্য অন্যান্য ভাতা ও সুবিধা যুক্ত হয়।

সেবারই প্রথম তিন বাহিনীর প্রধানদের জন্য একই বেতন ও র‌্যাংক নির্ধারণ করে সরকার। তার আগে সেনা প্রধানের বেতন জেনারেল র‌্যাংকে নির্ধারিত থাকলেও নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান বেতন পেতেন লেফটেন্যান্ট জেনারেলের র‌্যাংকে।

বর্তমানে দেশের ‘এক নম্বর সিভিলিয়ান’ হিসেবে পরিচিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের বেতন স্কেল সমান। গত ২৪ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো করতে পে কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠিত ওই পে কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার সশস্ত্র বাহিনীর জন্য বেতন কমিটি গঠন

আপডেট সময় : ০৯:৩০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি, ২০২৫’ গঠন করেছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের এই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিশাদুল ইসলাম খান কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন- মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জহির উদ্দিন, এয়ার ভাইস মার্শাল রুসাদ দীন আছাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং চ ছা মং, এয়ার কমডোর জামিল উদ্দিন আহম্মদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিলিয়া শারমিন ও ক্যাপ্টেন মো. তৌহিদ সাগর।

কমিটিকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা, পারিবারিক পেনশনসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধার সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে।

এই কমিটি গত ২৭ জুলাই গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের সঙ্গে ‘সমন্বয় ও নিবিড় যোগাযোগ’ রক্ষা করে কাজ করবে। এছাড়া, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা যৌক্তিকীকরণ এবং বেতনক্রমের অসঙ্গতি দূর করতে সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কমিটি প্রয়োজনে তিন বাহিনীর জন্য পৃথক সাব-কমিটি গঠন করতে পারবে এবং যে কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির সহায়তা নিতে পারবে। এছাড়া জীবনযাত্রার ব্যয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য নিরসন ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ দায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে সুপারিশ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। সেখানে বলা হয়েছে, কমিটি বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরির বিষয়ে নির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রণয়ন করবে।
১) পদমর্যাদা ও পদবিন্যাস নির্ধারণ। ২) বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট গুচ্ছভুক্ত করার পদ্ধতি নিরূপণ। ৩) উচ্চতর স্তরে পদায়ন করতে গিয়ে প্রতিযোগিতার সুযোগ নির্ধারণ। ৪) জীবনবেগী চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতার গুরুত্ব নিরূপণ।

কমিটিকে সুপারিশ প্রণয়নের সময় বাবা-মাতাসহ অনূর্ধ্ব ছয় জনের একটি পরিবারের জীবন-যাত্রার ব্যয়, অনূর্ধ্ব দুই সন্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সরকারের সম্পদ পরিস্থিতি, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য সম্পদের প্রয়োজনীয়তা, সংশ্লিষ্ট সংস্থা/প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয়ের অবস্থা, মেধাবী ও দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ, দেশের মৌলিক নীতিমালার সাথে প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষ সম্পর্ক, জীবন যাত্রার ব্যয়ভার ও মান ও সশস্ত্র বাহিনীর অতীত কীর্তি ও ভাবমূর্তিসহ আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৭ সালে বেসামরিক কর্মচারীদের সঙ্গে মিল রেখেই সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেছিল সরকার। ২০ গ্রেডে সাজানো ওই বেতন কাঠামোতে সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন চার তারকা জেনারেল মূল বেতন হিসাবে মাসে ৮৬ হাজার এবং সর্বনিম্ন গ্রেডে বেসামরিক দায়িত্বে থাকা একজন অফিস সহকারী ৮ হাজার ২৫০ টাকা পান। এর সঙ্গে বাড়িভাড়াসহ সশস্ত্রবাহিনীর জন্য প্রযোজ্য অন্যান্য ভাতা ও সুবিধা যুক্ত হয়।

সেবারই প্রথম তিন বাহিনীর প্রধানদের জন্য একই বেতন ও র‌্যাংক নির্ধারণ করে সরকার। তার আগে সেনা প্রধানের বেতন জেনারেল র‌্যাংকে নির্ধারিত থাকলেও নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান বেতন পেতেন লেফটেন্যান্ট জেনারেলের র‌্যাংকে।

বর্তমানে দেশের ‘এক নম্বর সিভিলিয়ান’ হিসেবে পরিচিত মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের বেতন স্কেল সমান। গত ২৪ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো করতে পে কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠিত ওই পে কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।