ক্রীড়া প্রতিবেদক : গত লিগে দুই পর্বেই সাইফ স্পোর্টিংকে রুখে দিয়েছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। এবারের শুরুতেও ইঙ্গিত ছিল জমজমাট লড়াইয়ের। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রহমতগঞ্জের রক্ষণে চিড় ধরল বারবার, দলটির ফরোয়ার্ডরা যোগ দিলেন সুযোগ নষ্টের মিছিলে। বিপরীতে অধিকাংশ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাঙিক্ষত জয় তুলে নিল আন্দ্রেয়াস ক্রুসিয়ানির দল। মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে: মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বুধবার ৩-১ গোলে জিতেছে সাইফ স্পোর্টিং। গত লিগে প্রথম পর্বে ১-১ ড্রয়ের পর দুই দলের ফিরতি লেগের ম্যাচটি হয়েছিল গোলশূন্য ড্র। টানা দুই ম্যাচ জিতল সাইফ স্পোর্টিং। বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগে শুভসূচনা করেছিল তারা। চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে আসা রহমতগঞ্জ পেল টানা দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ। অসুস্থতার কারণে পুলিশ এফসির বিপক্ষে খেলতে পারেননি জামাল ভূইয়া। সেরে উঠে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ফিরলেন এই মিডফিল্ডার। পুরো ম্যাচ খেলা হয়নি তার। ৮৬তম মিনিটে জামালকে তুলে নেন কোচ। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচের লাগাম মুঠোয় নিয়েছিল সাইফ স্পোর্টিং। যদিও প্রথম মিনিটে রহমতগঞ্জ দিয়েছিল দারুণ লড়াইয়ের আভাস। এগিয়েও যেতে পারত তারা। গোলরক্ষকের উদ্দেশে ব্যাক পাস বাড়িয়েছিলেন নাসিরুল ইসলাম, কিন্তু যথেষ্ট গতি ছিল না। ছুটে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বক্সে ঢুকেও পড়েছিলেন সানডে চিজোবা। কিন্তু দূরের পোস্ট নিশানা না করে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড দুর্বল শটে বল তুলে দেন পাপ্পু হোসেনের গ্লাভসে। ষোড়শ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পেয়েই কাজে লাগায় গত লিগে চতুর্থ হওয়া সাইফ। নাসিরুলের থ্রু পাস ধরে মারাজ হোসেন বাইলাইনের কাছ থেকে ক্রস বাড়ান বক্সে। একটু দুরূহ কোণ থেকে দারুণ হেডে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে জাল খুঁজে নেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। প্রথমার্ধে আরও কয়েকবার সুযোগ নষ্টের হতাশায় পুড়তে হয় সবশেষ ফেডারেশন কাপের রানার্সআপ রহমতগঞ্জকে। ১৯তম মিনিটে চিজোবার ফ্রি কিক ফিস্ট করে আটকান মিতুল হোসেন। ৩৬তম মিনিটে ওয়ালী ফয়সালের ফ্রি কিকে এক সতীর্থ হেডের পর ছোট বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যান ফজলে রাব্বী। তার দুর্বল প্রচেষ্টা গোলরক্ষক আটকাতে ব্যর্থ হলেও গোললাইন থেকে ফেরান সাইফ ডিফেন্ডার নাসিরুল।
চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে সাইফ স্পোর্টিং। আসরোর গভুরভের পাস ধরে বক্সে এক ডিফেন্ডারকে বডি ডজ দিয়ে কিছুটা জায়গা করে নেন এমেকা ওগবাহ। এরপর ডান পায়ের বুলেট গতির শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড। ফেডারেশন কাপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা রহমতগঞ্জের ফিলিপ আজাহ সুযোগ পান প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। কিন্তু নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ডের শট ব্লক করেন রিয়াদুল হাসান রাফি। ৬৭তম মিনিটে রাফির লক্ষ্যভেদে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে নেয় সাইফ স্পোর্টিং। এমেকাকে বল বাড়িয়ে বক্সের দিকে ছুটতে থাকেন রাফি। ফিরতি পাস পেয়ে ঠা-া মাথার শটে ব্যবধান আরও বাড়ান এই ডিফেন্ডার। রহমতগঞ্জ ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ পায় ৭১তম মিনিটে। চিজোবার কাটব্যাক আজাহর শট ব্লক করেন রাফি। কিন্তু বল তার গায়ে লেগে ফের চলে যায় চিজোবার পায়ে; বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে এবার সুযোগ কাজে লাগান তিনি। বাকি সময়ে কয়েকটি ‘হাফ-চান্স’ মিললেও কাজে লাগাতে পারেনি রহমতগঞ্জ, ফলে আরেকটি হার হয় সঙ্গী। দিনের অন্য ম্যাচে শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। ২০তম মিনিটে মোহাম্মদ জুয়েল শেখ রাসেলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৩৩তম মিনিটে সমতা ফেরান পিটার থ্যাঙ্কগড। দুই ম্যাচে ৬ করে পয়েন্ট শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব ও সাইফ স্পোর্টিংয়ের। ৪ করে আবাহনী ও চট্টগ্রাম আবাহনীর। দুই ম্যাচে ড্র করা শেখ রাসেলের পয়েন্ট ২।
এবার রহমতগঞ্জকে উড়িয়ে দিল সাইফ স্পোর্টিং
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ