নিজস্ব প্রতিবেদক : ডাক্তার হওয়ার আশা নিয়ে চলতি বছর যারা মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় বসবেন, তাদের মূল্যায়ন হবে ২০০ নম্বরের মধ্যে, আগে যা ৩০০ ছিল। আর বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা তাদের ভর্তির টাকা পরিশোধ করতে পারবেন কিস্তিতে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হোসেন ভর্তি পরীক্ষায় এই পরিবর্তন আনার কথা জানান। আগামী ১৭ জানুয়ারি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা হবে। আর ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। অধ্যাপক নাজমুল বলেন, এবারের পরীক্ষায় সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসছে নম্বরের ক্ষেত্রে। পরীক্ষার্থীদের আগের মতই এক ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এর সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসচি বা সমমানের পরীক্ষা থেকে ৫০ করে আরও ১০০ নম্বর নিয়ে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। এতদিন এইচএসসির ১২৫, এসএসসির ৭৫ নম্বরের সঙ্গে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ-এই ৩০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করা হত। এই পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে মহাপরিচালক বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সময় এইচএসসির বেশকিছু পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরমধ্যে কেমিস্ট্রি, বায়োলজিসহ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। মেডিকেল এডুকেশনের জন্য বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ।
“এবার যেহেতু পরীক্ষা হয়নি, এসএসসির ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেজন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে যে এইচএসসির ওয়েজেস একটু কমিয়ে দেওয়া হবে। তাই ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে। এমসিকিউ ঠিক থাকবে। কিছু বিষয়ের যেহেতু পরীক্ষাই হয়নি, তাই ওই বিষয়গুলোর তুলনামূলক গুরুত্ব আমরা কিছুটা কমিয়েছি।”
অধ্যাপক নাজমুল হোসেন বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিসহ অন্যান্য ফি এককালীন দিতে হত। তবে এবার থেকে তিনটি কিস্তিতে দেওয়ার সুযোগ থাকবে। ভর্তি ফির ৬০ শতাংশ দিতে হবে ভর্তির সময়। ২০ শতাংশ প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষার আগে এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ তৃতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষার আগে পরিশোধ করতে হবে। মেডিকেলে ভর্তির জন্য ডেভেলপমেন্ট ফি এবং অন্যান্য ফিসহ পুরো টাকা একসঙ্গে দিতে হত। এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে দেওয়া অনেকের জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়ত। শিক্ষার্থীদের ওপর যেন অর্থনৈতিক চাপ একবারে না পড়ে, সেজন্য কিস্তিতে দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলেন মহাপরিচালক। তিনি বলেন, মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতায় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ব্যবধান দুই বছর থেকে বাড়িয়ে তিন বছর করা হয়েছে। “বিষয়টি এমন, ২০২১ সালে কেউ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণে সে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি, ২০২৪ সালে দিয়েছে। আমরা তাদের অ্যালাউ করছি। এর জন্য কোনো নম্বর কাটা যাবে না।”
অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য ৫ নম্বর কর্তনের বিষয়টিতে পরিবর্তন করা হয়েছে, এবার পরীক্ষায় ৩ নম্বর কাটা হবে। সারাদেশে ১৫টি কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার সময় আগের মতোই এক ঘণ্টা। সিলেবাসও কোনো পরিবর্তন হয়নি, নম্বর বিন্যাস আগের মতই থাকছে বলে অধ্যাপক মো. নাজমুল হোসেন জানিয়েছেন। বাংলাদেশে সরকারি ৩৮টি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৫৩৮০টি। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মেডিকেল কলেজে এখনও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। বেসরকারি ৬৭টি মেডিকেল কলেজে ৬২৯৩টি আসন। আর দেশের ৩টি সরকারি ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ এবং ৮টি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিট মিলিয়ে ৫৪৫টি আসন। আর বেসরকারি ১২টি ডেন্টাল কলেজে ৯৪৫টি এবং ১৬টি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ৫৪৫টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।