ঢাকা ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

এবার পদোন্নতির দাবি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের

  • আপডেট সময় : ০৬:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিরেক্টর কনফারেন্স কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সপ্তাহের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া না হলে আগামী মাসে সারাদেশে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিরেক্টর কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম।

পদোন্নতি যোগ্য সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সুপারনিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত হিসেবে পদোন্নতি দাবি করে সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি আদায় না হলে প্রথমে তিনদিন ২ ঘণ্টা করে এবং পরবর্তীতে টানা কলম বিরতিতে যাওয়া হবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে চিকিৎসক আমিন বলেছেন, এই কর্মসূচি শুরু হলে ওই সময়ে তারা কোনো রোগী দেখবেন না। কেবল জরুরি সেবে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংঠনের এই নেতা।

তিনি বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যে পদোন্নতি চাচ্ছি সেখানে অর্থনৈতিক বা বেতন বৃদ্ধির বিষয় নেই। এটা শুধু মাত্র পদোন্নতির জন্য।

‘মিথ্যা আশ্বাসে পদোন্নতি আটকে রাখা হচ্ছে’ জানিয়ে সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির আহম্মেদ খান বলেন, এখন আমাদের এক দফা এক দাবি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পদোন্নতির যোগ্য সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পদোন্নতি দিতে হবে।

আগামী ৫ মার্চ থেকে সারাদেশের প্রতিটি হাসপাতালে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রতিদিন ২ ঘণ্টা কলম বিরতি পালন করব। আর দাবি না মানলে ১১ মার্চ থেকে পুর্ণাঙ্গ কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করব। এর জন্য দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যদি কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তাহলে তার দায় মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে।

সদস্য সচিব আমিন বলেছেন, বিসিএস স্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চাকরির নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর পদোন্নতি দেওয়া হয় কাজের মান ও গতিশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য। নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় পরীক্ষায় পাশ এবং ফাউন্ডেশন ট্রেনিং সম্পন্ন করা থাকলে চাকরি স্থায়ী হয়। চাকরি স্থায়ী এবং চাকরির চার বছর হলে সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা দেওয়া যায়। এরপর উত্তীর্ণরা পদোন্নতির যোগ্য হয় বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।

আমিন বলেন, কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাডারের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে যুক্ত করতে হয় স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি (এফসিপিএস/এমডি/ডিপ্লোমা) লাগে, যা মোটেও কোন সহজ সাধ্য ব্যাপার নয়। বর্তমান পদোন্নতি জটে আটকে পড়ে আছে যোগ্য চিকিৎসকরা। যে সকল চিকিৎসক প্রমোশন যোগ্য হয়ে দীর্ঘদিন বসে আছেন তাদের ন্যায্য প্রমোশন হলে বেতন স্কেলের কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না এবং পদোন্নতিতে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে না। কেননা এদের বেশির ভাগই নিজ নিজ গ্রেড/সমমান ও তদুর্ধ বেতন প্রাপ্ত।

স্বাস্থ্য ক্যাডারে অবহেলা ও সংকটের সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তাব মোসুমী বলেন, দশ বছর আগে পোস্ট গ্রেজুয়েট শেষ করেও এখন আমি একটি উপজেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে আছি।

যেমন কোনো সাবজেক্টে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক আবার কোন সাবজেক্টে আরপি/আরএস থেকে জুনিয়র কনসালটেন্ট সহকারী অধ্যাপক নেওয়া হয়। এর ফলে অন্তঃক্যাডার বৈষম্য তৈরি হয়। কোন সাবজেক্টে আবার ৬ষ্ঠ গ্রেডের তেমন পদই নেই, যেমন ডেন্টাল। কিছু বিশেষ ক্যাডারের চাকরিতে নির্দিষ্ট সময়ের পর ২য় ও ১ম গ্রেড প্রাপ্ত হয়, কিন্তু স্বাস্থ ক্যাডারকে কোনো কারণ ছাড়াই এটা থেকে বঞ্চিত করা হয়, এর উত্তর আমরা চাই।

এই বৈষম্য তৈরি হওয়ার কারণ তুলে ধরে চিকিৎসক মৌসুমী বলেছেন, প্রতি বছর পুরানো ও নতুন মেডিকেল কলেজগুলোতে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। পুরনোগুলোয় ২৫০ জন এবং নতুনগুলোতে ৭৫ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী প্রতি বছর ভর্তি হচ্ছে। তবে সে অনুপাতে পদ সৃষ্টি না হওয়াতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মাঝের ব্যবধান অনেক বেড়ে গেছে।

মেডিকেল কলেজগুলোর পদ তৈরির পাশাপাশি পদোন্নতি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির।

অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন, যাদের পদোন্নতি না হওয়াতে তাদের নিজস্ব বিষয় বাদ দিয়ে অন্য সেক্টরে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এটাতে যেমন মেধার অপচয় হচ্ছে, তেমনি ঐ নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রকৃত সেবা থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ দেশের প্রায় সাত হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জুনিয়র কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসার/ ডেন্টাল সার্জন হয়ে একই পদে প্রায় ১০-১৫ বছর প্রমোশনের অপেক্ষায় বসে আছে। আর সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপকরা ও তাদের পরবর্তী পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জন করে বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন! বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়মিত করণ করা হয়নি গত অনেক বছর। যার কারণে অন্তঃক্যাডার ও অন্য ক্যাডারের সাথে দিন দিন বৈষম্য শুধু বাড়ছেই।

এই বৈষম্য কমাতে দোন্নতি বঞ্চিত চিকিৎসকদের ‘ভুতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিতে হবে’ হবে জানিয়েছেন চিকিৎসক বশির। তিনি বলেছেন পদোন্নতির প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি যে শুধুমাত্র পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে বর্তমান সংকট হতে উত্তরণ সম্ভব নয়।

এক্ষেত্রে বর্তমানে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে অধিক সংখ্যায় ভূতাপেক্ষভাবে পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি/সুপারনিউমারারি/ইনসিটু পদোন্নতি দিয়ে বিদ্যমান জট কমিয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার পথ সুগম করা।

তারা এ ধরনের কর্মসূচিতে ‘যেতে চাইনি’ জানিয়ে চিকিৎসক বশির বলে, বার বার তাগাদা সত্ত্বেও আমরা পেয়েছি শধুই আশ্বাস, যেটি দীর্ঘদিন যাবৎ বঞ্চনা রূপ নিয়েছে হতাশার দীর্ঘশ্বাসে। এই অবস্থায় এই আপমান ও বঞ্চনা আমাদের স্বাভাবিক ও সামাজিক জীবনযাপন ব্যাহত করছে। বর্তমার বৈষম্যবিরোধী চেতনায়। সরকার দেশের সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের অসামান্য উদোগ নিয়েছেন, তাতে অনেক কিছুতে দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসন হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি চিকিৎসকদের বঞ্চনা নিরসনে মন্ত্রণালয় এবং সরকার সম উদ্যেগী হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের আহ্বায়ক মির্জা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যোগ্য সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্রুত সুপারনিউমারারি পদোন্নতি দিতে হবে। এই দাবিতে আপনারা সবাই সোচ্চার থাকবেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার পদোন্নতির দাবি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের

আপডেট সময় : ০৬:৫২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সপ্তাহের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া না হলে আগামী মাসে সারাদেশে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিরেক্টর কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম।

পদোন্নতি যোগ্য সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সুপারনিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত হিসেবে পদোন্নতি দাবি করে সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি আদায় না হলে প্রথমে তিনদিন ২ ঘণ্টা করে এবং পরবর্তীতে টানা কলম বিরতিতে যাওয়া হবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে চিকিৎসক আমিন বলেছেন, এই কর্মসূচি শুরু হলে ওই সময়ে তারা কোনো রোগী দেখবেন না। কেবল জরুরি সেবে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সংঠনের এই নেতা।

তিনি বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যে পদোন্নতি চাচ্ছি সেখানে অর্থনৈতিক বা বেতন বৃদ্ধির বিষয় নেই। এটা শুধু মাত্র পদোন্নতির জন্য।

‘মিথ্যা আশ্বাসে পদোন্নতি আটকে রাখা হচ্ছে’ জানিয়ে সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির আহম্মেদ খান বলেন, এখন আমাদের এক দফা এক দাবি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পদোন্নতির যোগ্য সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পদোন্নতি দিতে হবে।

আগামী ৫ মার্চ থেকে সারাদেশের প্রতিটি হাসপাতালে সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত প্রতিদিন ২ ঘণ্টা কলম বিরতি পালন করব। আর দাবি না মানলে ১১ মার্চ থেকে পুর্ণাঙ্গ কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করব। এর জন্য দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যদি কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তাহলে তার দায় মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে।

সদস্য সচিব আমিন বলেছেন, বিসিএস স্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চাকরির নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর পদোন্নতি দেওয়া হয় কাজের মান ও গতিশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য। নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় পরীক্ষায় পাশ এবং ফাউন্ডেশন ট্রেনিং সম্পন্ন করা থাকলে চাকরি স্থায়ী হয়। চাকরি স্থায়ী এবং চাকরির চার বছর হলে সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা দেওয়া যায়। এরপর উত্তীর্ণরা পদোন্নতির যোগ্য হয় বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।

আমিন বলেন, কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাডারের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে যুক্ত করতে হয় স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি (এফসিপিএস/এমডি/ডিপ্লোমা) লাগে, যা মোটেও কোন সহজ সাধ্য ব্যাপার নয়। বর্তমান পদোন্নতি জটে আটকে পড়ে আছে যোগ্য চিকিৎসকরা। যে সকল চিকিৎসক প্রমোশন যোগ্য হয়ে দীর্ঘদিন বসে আছেন তাদের ন্যায্য প্রমোশন হলে বেতন স্কেলের কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না এবং পদোন্নতিতে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে না। কেননা এদের বেশির ভাগই নিজ নিজ গ্রেড/সমমান ও তদুর্ধ বেতন প্রাপ্ত।

স্বাস্থ্য ক্যাডারে অবহেলা ও সংকটের সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তাব মোসুমী বলেন, দশ বছর আগে পোস্ট গ্রেজুয়েট শেষ করেও এখন আমি একটি উপজেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে আছি।

যেমন কোনো সাবজেক্টে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক আবার কোন সাবজেক্টে আরপি/আরএস থেকে জুনিয়র কনসালটেন্ট সহকারী অধ্যাপক নেওয়া হয়। এর ফলে অন্তঃক্যাডার বৈষম্য তৈরি হয়। কোন সাবজেক্টে আবার ৬ষ্ঠ গ্রেডের তেমন পদই নেই, যেমন ডেন্টাল। কিছু বিশেষ ক্যাডারের চাকরিতে নির্দিষ্ট সময়ের পর ২য় ও ১ম গ্রেড প্রাপ্ত হয়, কিন্তু স্বাস্থ ক্যাডারকে কোনো কারণ ছাড়াই এটা থেকে বঞ্চিত করা হয়, এর উত্তর আমরা চাই।

এই বৈষম্য তৈরি হওয়ার কারণ তুলে ধরে চিকিৎসক মৌসুমী বলেছেন, প্রতি বছর পুরানো ও নতুন মেডিকেল কলেজগুলোতে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। পুরনোগুলোয় ২৫০ জন এবং নতুনগুলোতে ৭৫ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী প্রতি বছর ভর্তি হচ্ছে। তবে সে অনুপাতে পদ সৃষ্টি না হওয়াতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের মাঝের ব্যবধান অনেক বেড়ে গেছে।

মেডিকেল কলেজগুলোর পদ তৈরির পাশাপাশি পদোন্নতি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনের আরেক নেতা চিকিৎসক বশির।

অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন, যাদের পদোন্নতি না হওয়াতে তাদের নিজস্ব বিষয় বাদ দিয়ে অন্য সেক্টরে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এটাতে যেমন মেধার অপচয় হচ্ছে, তেমনি ঐ নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রকৃত সেবা থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ দেশের প্রায় সাত হাজার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জুনিয়র কনসালটেন্ট ও মেডিকেল অফিসার/ ডেন্টাল সার্জন হয়ে একই পদে প্রায় ১০-১৫ বছর প্রমোশনের অপেক্ষায় বসে আছে। আর সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপকরা ও তাদের পরবর্তী পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জন করে বছরের পর বছর অপেক্ষা করছেন! বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ ও পদোন্নতি নিয়মিত করণ করা হয়নি গত অনেক বছর। যার কারণে অন্তঃক্যাডার ও অন্য ক্যাডারের সাথে দিন দিন বৈষম্য শুধু বাড়ছেই।

এই বৈষম্য কমাতে দোন্নতি বঞ্চিত চিকিৎসকদের ‘ভুতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দিতে হবে’ হবে জানিয়েছেন চিকিৎসক বশির। তিনি বলেছেন পদোন্নতির প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি যে শুধুমাত্র পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে বর্তমান সংকট হতে উত্তরণ সম্ভব নয়।

এক্ষেত্রে বর্তমানে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে অধিক সংখ্যায় ভূতাপেক্ষভাবে পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি/সুপারনিউমারারি/ইনসিটু পদোন্নতি দিয়ে বিদ্যমান জট কমিয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার পথ সুগম করা।

তারা এ ধরনের কর্মসূচিতে ‘যেতে চাইনি’ জানিয়ে চিকিৎসক বশির বলে, বার বার তাগাদা সত্ত্বেও আমরা পেয়েছি শধুই আশ্বাস, যেটি দীর্ঘদিন যাবৎ বঞ্চনা রূপ নিয়েছে হতাশার দীর্ঘশ্বাসে। এই অবস্থায় এই আপমান ও বঞ্চনা আমাদের স্বাভাবিক ও সামাজিক জীবনযাপন ব্যাহত করছে। বর্তমার বৈষম্যবিরোধী চেতনায়। সরকার দেশের সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য নিরসনের অসামান্য উদোগ নিয়েছেন, তাতে অনেক কিছুতে দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসন হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি চিকিৎসকদের বঞ্চনা নিরসনে মন্ত্রণালয় এবং সরকার সম উদ্যেগী হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের আহ্বায়ক মির্জা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যোগ্য সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্রুত সুপারনিউমারারি পদোন্নতি দিতে হবে। এই দাবিতে আপনারা সবাই সোচ্চার থাকবেন।