ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

এবার দাড়ি কাটায় তালেবানের নিষেধাজ্ঞা

  • আপডেট সময় : ১১:১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৩১ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে সেলুনে দাড়ি কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দাড়ি কাটা ইসলামিক আইনের লঙ্ঘণ। যারা এই কাজ করবে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে তালেবোনের ধর্মীয় পুলিশ।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কয়েকজন নাপিতও একই ধরনের নির্দেশ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবান উদার শাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নতুন এই নির্দেশনায় তাদের শাসনামলের কঠোর নীতিরই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে।
ক্ষমতা দখলের পর বিরোধীদের ওপর কঠোর হয়েছে তালেবান। গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হেরাত প্রদেশে অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে তালেবান যোদ্ধারা। এরপর তাদের মরদেহ রাস্তায় ঝুলিয়ে দেন তারা।
এরপর নাপিতদের কারও দাড়ি কাটার ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা দিলো তালেবান। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের সেলুনগুলোতে দেওয়া নোটিশে নাপিতদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, চুল বা দাড়ি কাটার বিষয়ে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করতে হবে। তালেবানের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে কারো অভিযোগ করার অধিকার নেই।’
কাবুলের এক নাপিত বলেন, ‘যোদ্ধারা প্রায়ই আসছেন এবং আমাদের দাড়ি কাটা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছেন। তাদের একজন আমাকে বলেছেন, আমাদের ধরার জন্য তারা ছদ্মবেশে আসতে পারেন।’ কাবুলের অন্যতম বড় একটি সেলুনের একজন কর্মী জানান, তাকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমেরিকান স্টাইল’ বন্ধ করো। কারো দাড়ি ছাটা বা শেভ করতেও নিষেধ করা হয়েছে আমাকে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম সরকারের আমলে আফগানিস্তানে নানা ভঙ্গিতে চুল কাটা নিষিদ্ধ করা হয়। আর পুরুষদের দাড়ি রাখতে উৎসাহি করা হয়। তবে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পুরুষের ক্লিন-শেভ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং অনেক আফগান পুরুষ সেলুনে গিয়ে পছন্দমতো ভঙ্গিতে চুল কাটিয়ে থাকেন।
তবে নতুন নির্দেশনার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নাপিত জানিয়েছেন, তালেবানের নতুন নিয়মের কারণে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। একজন বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই আমার সেলুনে কম বয়সীরা তাদের ইচ্ছেমতো শেভ করেন। এখন এই ব্যবসা চালানোর আর কোনো উপায় নেই।’
আরেকজন বলেন, ‘ফ্যাশন সেলুন ও নাপিতগিরি নিষিদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এটাই আমার কাজ আর কখনো ভাবিনি এটা চালিয়ে যেতে পারবো না।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

এবার দাড়ি কাটায় তালেবানের নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময় : ১১:১১:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে সেলুনে দাড়ি কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দাড়ি কাটা ইসলামিক আইনের লঙ্ঘণ। যারা এই কাজ করবে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে তালেবোনের ধর্মীয় পুলিশ।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কয়েকজন নাপিতও একই ধরনের নির্দেশ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবান উদার শাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নতুন এই নির্দেশনায় তাদের শাসনামলের কঠোর নীতিরই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে।
ক্ষমতা দখলের পর বিরোধীদের ওপর কঠোর হয়েছে তালেবান। গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হেরাত প্রদেশে অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে তালেবান যোদ্ধারা। এরপর তাদের মরদেহ রাস্তায় ঝুলিয়ে দেন তারা।
এরপর নাপিতদের কারও দাড়ি কাটার ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা দিলো তালেবান। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের সেলুনগুলোতে দেওয়া নোটিশে নাপিতদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, চুল বা দাড়ি কাটার বিষয়ে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করতে হবে। তালেবানের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে কারো অভিযোগ করার অধিকার নেই।’
কাবুলের এক নাপিত বলেন, ‘যোদ্ধারা প্রায়ই আসছেন এবং আমাদের দাড়ি কাটা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছেন। তাদের একজন আমাকে বলেছেন, আমাদের ধরার জন্য তারা ছদ্মবেশে আসতে পারেন।’ কাবুলের অন্যতম বড় একটি সেলুনের একজন কর্মী জানান, তাকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমেরিকান স্টাইল’ বন্ধ করো। কারো দাড়ি ছাটা বা শেভ করতেও নিষেধ করা হয়েছে আমাকে।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম সরকারের আমলে আফগানিস্তানে নানা ভঙ্গিতে চুল কাটা নিষিদ্ধ করা হয়। আর পুরুষদের দাড়ি রাখতে উৎসাহি করা হয়। তবে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পুরুষের ক্লিন-শেভ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং অনেক আফগান পুরুষ সেলুনে গিয়ে পছন্দমতো ভঙ্গিতে চুল কাটিয়ে থাকেন।
তবে নতুন নির্দেশনার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নাপিত জানিয়েছেন, তালেবানের নতুন নিয়মের কারণে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। একজন বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই আমার সেলুনে কম বয়সীরা তাদের ইচ্ছেমতো শেভ করেন। এখন এই ব্যবসা চালানোর আর কোনো উপায় নেই।’
আরেকজন বলেন, ‘ফ্যাশন সেলুন ও নাপিতগিরি নিষিদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এটাই আমার কাজ আর কখনো ভাবিনি এটা চালিয়ে যেতে পারবো না।’