ঢাকা ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার একুশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন পাচ্ছে না ১২ প্রকাশনী

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বইমেলায় প্যাভিলিয়ন পেতো এমন ১২ প্রকাশনী বিরুদ্ধে অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছে পরিচালনা কমিটি। এছাড়া নতুন প্যাভিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ও সূচিপত্র প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী সাঈদ বারীর।

তিনি জানান, প্রকাশকদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল- বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা নেওয়া প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে যেন এবারের মেলায় স্টল বরাদ্দ না দেওয়া হয়। সেই দাবির ফলশ্রুতিতেই এবার ‘জার্নিম্যান’ প্রকাশনীকে মেলায় স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। আর কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গত মেলায়ও রাজনৈতিক প্রভাবে প্যাভিলিয়ন নিয়েছিল, তাদেরকে এবার প্যাভিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ৩ ও ৪ ইউনিট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ২৪ বাই ২৪ ফুট প্যাভিলিয়ন পেতো অনিন্দ্য প্রকাশনী, অন্বেষা প্রকাশনী, কাকলী প্রকাশনী, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, পুঁথিনিলয়, মিজান পাবলিশার্স, সময় প্রকাশন। এ বছর এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়েছে ৪ ইউনিট। আর তাম্রলিপিকে দেওয়া হয়েছে ৩ ইউনিট। একই মাপের প্যাভিলিয়ন পেয়ে আসছে অনুপম, আগামী ও অন্য প্রকাশ। তাদেরকে এ বছর দেওয়া হয়েছে ২০ বাই ২০ ফুট প্যাভিলিয়ন।

২০ বাই ২০ ফুট পেতে নালন্দা আর পার্ল পাবলিকেশন্সকে দেওয়া হয়েছে ৪ ইউনিট করে, চারুলিপি প্রকাশন, জিনিয়াস পাবলিকেশন্স, বিশ্ব সাহিত্য ভবন ও শব্দশৈলীকে দেওয়া হয়েছে ৩ ইউনিট করে।

বাদ দেওয়া হয়েছে জার্নিম্যান বুকসকে। তাদের এ বছর স্টলও বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্যাভিনিয়নের মাপ কমানো ও বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে আগামী প্রকাশনী সত্ত্বাধিকারী ওসমান গনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও হতাশার। যারা এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা একটা নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়।

বাংলা একাডেমি এমন সিদ্ধান্তকে কখনোই সমর্থন করা উচিৎ না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলা একাডেমির এখনও সুযোগ রয়েছে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাল্টানোর। যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে- তারা চায় বইমেলার ক্ষতি হোক। কারণ তাদের তাতে কোনও লোকসান নেই। কারণ তাদের কোনও বই নেই।

এ বছর বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির কোনও প্রতিনিধি রাখা হয়নি জানিয়ে এই প্রকাশক বলেন, প্রতি বছর সমিতির চারজন প্রতিনিধি বইমেলা পরিচালনা কমিটিতে থাকে। কিন্তু এ বছর যে সংগঠনগুলোর সাত জন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে এগুলো সব ভুঁইফোড় সংগঠন। তারা গিয়ে দাবি জানিয়েছে আর তাদেরকে প্রতিনিধি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই-তিন জন টাকা খেয়ে এসব করছে।

তিনি আরও বলেন, আর তারা যেই অনৈতিক সুবিধার কথা বলছে- সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ব্যক্তি বিচার না করে তার প্রকাশিত বইয়ের মান বিচার করা উচিৎ। আমি ৪৫ বছর ধরে প্রকাশনা করে আসছি। আমার বইয়ের মান আর তাদের বইয়ের মান দেখুন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বইমেলা-২০২৫’র সদস্য সচিব সরকার আমিন বলেন, আমাদের বইমেলা পরিচালনা কমিটি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতরের প্রধান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নীতি নির্ধারক ও প্রকাশক প্রতিনিধিসহ ৩১ সদস্য নিয়ে গঠিত। সেই কমিটির সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘মাইনাস টু’ আশা কখনো পূরণ হবে না

এবার একুশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন পাচ্ছে না ১২ প্রকাশনী

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বইমেলায় প্যাভিলিয়ন পেতো এমন ১২ প্রকাশনী বিরুদ্ধে অন্যায্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনে অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এ তাদের প্যাভিলিয়ন বাতিল করেছে পরিচালনা কমিটি। এছাড়া নতুন প্যাভিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে।

গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ও সূচিপত্র প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী সাঈদ বারীর।

তিনি জানান, প্রকাশকদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল- বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে সুবিধা নেওয়া প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে যেন এবারের মেলায় স্টল বরাদ্দ না দেওয়া হয়। সেই দাবির ফলশ্রুতিতেই এবার ‘জার্নিম্যান’ প্রকাশনীকে মেলায় স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। আর কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গত মেলায়ও রাজনৈতিক প্রভাবে প্যাভিলিয়ন নিয়েছিল, তাদেরকে এবার প্যাভিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে না। তাদের ৩ ও ৪ ইউনিট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ২৪ বাই ২৪ ফুট প্যাভিলিয়ন পেতো অনিন্দ্য প্রকাশনী, অন্বেষা প্রকাশনী, কাকলী প্রকাশনী, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, পুঁথিনিলয়, মিজান পাবলিশার্স, সময় প্রকাশন। এ বছর এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়েছে ৪ ইউনিট। আর তাম্রলিপিকে দেওয়া হয়েছে ৩ ইউনিট। একই মাপের প্যাভিলিয়ন পেয়ে আসছে অনুপম, আগামী ও অন্য প্রকাশ। তাদেরকে এ বছর দেওয়া হয়েছে ২০ বাই ২০ ফুট প্যাভিলিয়ন।

২০ বাই ২০ ফুট পেতে নালন্দা আর পার্ল পাবলিকেশন্সকে দেওয়া হয়েছে ৪ ইউনিট করে, চারুলিপি প্রকাশন, জিনিয়াস পাবলিকেশন্স, বিশ্ব সাহিত্য ভবন ও শব্দশৈলীকে দেওয়া হয়েছে ৩ ইউনিট করে।

বাদ দেওয়া হয়েছে জার্নিম্যান বুকসকে। তাদের এ বছর স্টলও বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্যাভিনিয়নের মাপ কমানো ও বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে আগামী প্রকাশনী সত্ত্বাধিকারী ওসমান গনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও হতাশার। যারা এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা একটা নব্য ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়।

বাংলা একাডেমি এমন সিদ্ধান্তকে কখনোই সমর্থন করা উচিৎ না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলা একাডেমির এখনও সুযোগ রয়েছে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাল্টানোর। যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে- তারা চায় বইমেলার ক্ষতি হোক। কারণ তাদের তাতে কোনও লোকসান নেই। কারণ তাদের কোনও বই নেই।

এ বছর বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির কোনও প্রতিনিধি রাখা হয়নি জানিয়ে এই প্রকাশক বলেন, প্রতি বছর সমিতির চারজন প্রতিনিধি বইমেলা পরিচালনা কমিটিতে থাকে। কিন্তু এ বছর যে সংগঠনগুলোর সাত জন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে এগুলো সব ভুঁইফোড় সংগঠন। তারা গিয়ে দাবি জানিয়েছে আর তাদেরকে প্রতিনিধি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুই-তিন জন টাকা খেয়ে এসব করছে।

তিনি আরও বলেন, আর তারা যেই অনৈতিক সুবিধার কথা বলছে- সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ব্যক্তি বিচার না করে তার প্রকাশিত বইয়ের মান বিচার করা উচিৎ। আমি ৪৫ বছর ধরে প্রকাশনা করে আসছি। আমার বইয়ের মান আর তাদের বইয়ের মান দেখুন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বইমেলা-২০২৫’র সদস্য সচিব সরকার আমিন বলেন, আমাদের বইমেলা পরিচালনা কমিটি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতরের প্রধান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নীতি নির্ধারক ও প্রকাশক প্রতিনিধিসহ ৩১ সদস্য নিয়ে গঠিত। সেই কমিটির সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।