ঢাকা ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবারের বইমেলায় ৬০১ প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে

  • আপডেট সময় : ০৯:৪৮:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর এবারই প্রথম ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা, যাতে অংশ নিচ্ছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। বইমেলা ২০২৩ আয়োজন নিয়ে সোমবার আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমির সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’- প্রতিপাদ্য নিয়ে বুধবার বিকাল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়।
মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় থাকছে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন। সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান, বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম, জনসংযোগ-তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সমীর কুমার সরকার, বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নহবত আলী ও বইমেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান ক্রসওয়ার্ক কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মারুফ। এবার বইমেলার আমন্ত্রণপত্রে সরকারের লোগো ব্যবহার করার কারণে বাংলা একাডেমির স্বায়ত্তশাসন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গত সপ্তাহে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বইমেলার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে আমন্ত্রণপত্রে মন্ত্রণালয়ের লগো বসানোর জন্য নির্দেশ দিলে বিতর্ক শুরু হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, “নীতিমালা অনুযায়ীই পূর্বের ন্যায় বইমেলা পরিচালিত হবে।” পরে মন্ত্রণালয়ের লোগো না থাকলেও সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয় বইমেলার আমন্ত্রণপত্র ও ব্যানারে।
এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বাংলা একাডেমির যে আইনটি গেজেট আকারে রয়েছে, সেখানেও কিন্তু সরকারের লোগো রয়েছে৷ এছাড়া একাডেমির অনেক কার্যক্রমে কখনও সরকারের লোগো ব্যবহার হয়েছে, আবার কখনও হয়নি। বইমেলা পরিচালিনা কমিটি সব দিক বিবেচনা করেই সরকারের লোগো ব্যবহার করছে।”
আদর্শ প্রকাশনীকে কেন মেলায় স্টল দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে। তিনি বলেন, “আদর্শ প্রকাশিত একটি বই নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে মেলা পরিচালনা কমিটি আদর্শকে স্টল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা স্টল না দেওয়ার বিষয়টি আদর্শকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।”
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি প্রকাশিত সাতটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান করবেন। ২০২২ সালে পুরস্কারের জন্য মনোনীতরা হলেন- কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ/গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনীতে ইকতিয়ার চৌধুরী, ফোকলোরে আবদুল খালেক ও মুহম্মদ আবদুল জলিল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
বইমেলার বিস্তারিত তথ্য: এবার বইমেলার আঙ্গিকগত ও বিন্যাসে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি। মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মূল প্রবেশপথ এবার একটু সরিয়ে বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথের উল্টো দিকে অর্থাৎ মন্দির-গেটটি মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। গতবারের প্রবেশপথটি বাহির-পথ হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। এছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশন অংশে আরও তিনটি প্রবেশ ও বাহির-পথ থাকবে। বইমেলার সদস্য সচিব লিখিত বক্তব্যে বলেন, “গতবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউশন অংশে ১৮২টি স্টল এবং ১১টি প্যাভিলিয়ন ছিল। পাঠক, দর্শক এবং প্রকাশকদের সম্মিলিত আহবান ছিল এবারের মেলায় যেন তাদের দৃশ্যমান অংশে সন্নিবেশ করা হয়। আমরা আশা করি, ২০২৩-এর বইমেলার বিন্যাস সবার জন্যই মনঃপুত এবং বাস্তবসম্মত হয়েছে।
“তবে গতবারের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউশনের স্থানটিকেও এবারের মেলার একটি অংশ হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। সেখানে নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। খাবারের স্টলগুলোকে এবার এমনভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে যেন এলোমেলোভাবে খাবারের স্টল বইমেলায় আগত পাঠকের মনোযোগে ব্যাঘাত না করে।”
শিশুচত্বরটি এবার মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি। সেখানে ১৫৩টিসহ ৫টি উন্মুক্ত স্থানে লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুজিাহিদুল ইসলাম। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য ১টি স্টল থাকবে। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে। এছাড়া নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এছাড়া ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে। বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮:৩০টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এবারের বইমেলায় ৬০১ প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে

আপডেট সময় : ০৯:৪৮:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর এবারই প্রথম ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা, যাতে অংশ নিচ্ছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। বইমেলা ২০২৩ আয়োজন নিয়ে সোমবার আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমির সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’- প্রতিপাদ্য নিয়ে বুধবার বিকাল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়।
মোট ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় থাকছে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন। সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান, বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম, জনসংযোগ-তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সমীর কুমার সরকার, বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নহবত আলী ও বইমেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান ক্রসওয়ার্ক কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মারুফ। এবার বইমেলার আমন্ত্রণপত্রে সরকারের লোগো ব্যবহার করার কারণে বাংলা একাডেমির স্বায়ত্তশাসন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গত সপ্তাহে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বইমেলার কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে গিয়ে আমন্ত্রণপত্রে মন্ত্রণালয়ের লগো বসানোর জন্য নির্দেশ দিলে বিতর্ক শুরু হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, “নীতিমালা অনুযায়ীই পূর্বের ন্যায় বইমেলা পরিচালিত হবে।” পরে মন্ত্রণালয়ের লোগো না থাকলেও সরকারের লোগো ব্যবহার করা হয় বইমেলার আমন্ত্রণপত্র ও ব্যানারে।
এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বাংলা একাডেমির যে আইনটি গেজেট আকারে রয়েছে, সেখানেও কিন্তু সরকারের লোগো রয়েছে৷ এছাড়া একাডেমির অনেক কার্যক্রমে কখনও সরকারের লোগো ব্যবহার হয়েছে, আবার কখনও হয়নি। বইমেলা পরিচালিনা কমিটি সব দিক বিবেচনা করেই সরকারের লোগো ব্যবহার করছে।”
আদর্শ প্রকাশনীকে কেন মেলায় স্টল দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে। তিনি বলেন, “আদর্শ প্রকাশিত একটি বই নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে মেলা পরিচালনা কমিটি আদর্শকে স্টল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা স্টল না দেওয়ার বিষয়টি আদর্শকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।”
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি প্রকাশিত সাতটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ প্রদান করবেন। ২০২২ সালে পুরস্কারের জন্য মনোনীতরা হলেন- কবিতায় ফারুক মাহমুদ ও তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যে তাপস মজুমদার ও পারভেজ হোসেন, প্রবন্ধ/গবেষণায় মাসুদুজ্জামান, অনুবাদে আলম খোরশেদ, নাটকে মিলন কান্তি দে ও ফরিদ আহমদ দুলাল, শিশুসাহিত্যে ধ্রুব এষ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুহাম্মদ শামসুল হক, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সুভাষ সিংহ রায়, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে মোকারম হোসেন, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনীতে ইকতিয়ার চৌধুরী, ফোকলোরে আবদুল খালেক ও মুহম্মদ আবদুল জলিল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
বইমেলার বিস্তারিত তথ্য: এবার বইমেলার আঙ্গিকগত ও বিন্যাসে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি। মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মূল প্রবেশপথ এবার একটু সরিয়ে বাংলা একাডেমির মূল প্রবেশপথের উল্টো দিকে অর্থাৎ মন্দির-গেটটি মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। গতবারের প্রবেশপথটি বাহির-পথ হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। এছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশন অংশে আরও তিনটি প্রবেশ ও বাহির-পথ থাকবে। বইমেলার সদস্য সচিব লিখিত বক্তব্যে বলেন, “গতবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউশন অংশে ১৮২টি স্টল এবং ১১টি প্যাভিলিয়ন ছিল। পাঠক, দর্শক এবং প্রকাশকদের সম্মিলিত আহবান ছিল এবারের মেলায় যেন তাদের দৃশ্যমান অংশে সন্নিবেশ করা হয়। আমরা আশা করি, ২০২৩-এর বইমেলার বিন্যাস সবার জন্যই মনঃপুত এবং বাস্তবসম্মত হয়েছে।
“তবে গতবারের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউশনের স্থানটিকেও এবারের মেলার একটি অংশ হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। সেখানে নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। খাবারের স্টলগুলোকে এবার এমনভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে যেন এলোমেলোভাবে খাবারের স্টল বইমেলায় আগত পাঠকের মনোযোগে ব্যাঘাত না করে।”
শিশুচত্বরটি এবার মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি। সেখানে ১৫৩টিসহ ৫টি উন্মুক্ত স্থানে লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুজিাহিদুল ইসলাম। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য ১টি স্টল থাকবে। প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে। এছাড়া নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশককে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ২০২২ সালের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেওয়া হবে। এছাড়া ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে। বইমেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত ৮:৩০টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টা এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।