নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হবে না। সাময়িক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে এবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার গণভবন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক (এসএসসি) ও এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা শুরু হলেও করোনার কারণে এ বছর দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা এখনও নেয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া গেলেও এইচএসসিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয় সরকার। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি পরীক্ষা ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন। গতকাল এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষা রুটিন প্রকাশ করে। এসএসসির মতো ১৪ নভেম্বর থেকে দাখিল পরীক্ষাও শুরু হবে, চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে জেএসসি পরীক্ষা হবে কিনা সে বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হবে না। এ সময় শুধুমাত্র জিপিএ-ফাইভ এর পেছনে না ছুটে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন করার পরামর্শ দেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। দেশ ও সমাজের জন্য নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে। দীপু মনি বলেন, পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে ২০২২ সাল থেকে। ২০২৩ সাল থেকে সেটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন শুরু হবে। নতুন পাঠ্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এ পাঠ্যক্রম সর্বস্তরে বাস্তবায়ন হবে ২০২৫ সাল থেকে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন আজ। তিনি সবসময় শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছেন। তার জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখতে আমরা সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করব।
করোনা সচেতনতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪ নির্দেশনা : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে চারটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইং থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য একটি গাইডলাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) জারি করা হয়। এছাড়া মনিটরিং চেক লিস্টের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দৈনিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হচ্ছে।
চার নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে :
১. সব শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের পর প্রথমেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সম্বন্ধে খোঁজখবর নেবেন।
২. শিক্ষার্থীর পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত বা কারও করোনার কোনো লক্ষণ (জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদি) আছে কি না, তার খোঁজ নেবেন।
৩. কোনো শিক্ষার্থী বা তার পরিবারের কেউ করোনা বা করোনার লক্ষণাক্রান্ত হয়ে থাকলে দ্রুত সে শিক্ষার্থীকে আইসোলেশনে রেখে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।
৪. প্রতিষ্ঠানপ্রধান ওই শ্রেণিকক্ষের শিক্ষক ও সব শিক্ষার্থীর দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনা টেস্ট করার ব্যবস্থা নেবেন।
অধিদপ্তরের সব পরিচালক, উপ-পরিচালক, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিজ নিজ আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি অবহিতকরণ, বাস্তবায়নে তত্ত্বাবধান এবং সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অধিদপ্তরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন উইং) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
এবারও হচ্ছে না জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ