ঢাকা ১২:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

এপিক গেইমস মামলা: বড় চপেটাঘাত অ্যাপলের গালে

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : এপিক গেইমসের সঙ্গে চলমান মামলায় বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে অ্যাপল। ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালত রায় দিয়েছে, মার্কিন এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপ ডেভেলপারদেরকে তৃতীয় পক্ষের লেনদেন সুবিধা ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে পারবে না।
যদিও অ্যাপল আদালতে তর্ক জুড়ে দিয়েছিল, সব অ্যাপেরই তাদের ইন-অ্যাপ লেনদেন সুবিধা ব্যবহার করা উচিত।
এপিক বনাম অ্যাপল লড়াইয়ে অ্যাপ স্টোরের ৩০ শতাংশ চার্জ নেওয়াকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ফোর্টনাইট নির্মাতা, পাশাপাশি অ্যাপলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে একাধিপত্য বিস্তারের। প্লে স্টোরের খরচ নিয়ে গুগলের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে এপিক গেইমস।
শুক্রবার বিচারক ইয়োভেন গনজালেস-রজার্স জানান, “অ্যাপল একাধিপত্য বিস্তারী – দিনশেষে এমন উপসংহারে আসা আদালতের পক্ষে সম্ভব না।” তবে, অ্যাপল আর ডেভেলপারদেরকে নিজস্ব লেনদেন প্রক্রিয়া লিংক করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না জানিয়ে এক স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চলচ্চিত্র-স্ট্রিমিং সেবা এখন থেকে গ্রাহকদেরকে নিজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাবস্ক্রাইব করার সুযোগ করে দিতে পারবে। এ কাজে আর অ্যাপলের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
অ্যাপলের জন্য তাদের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ লাভজনক একটি প্রক্রিয়া। তবে, এ থেকে কত আয় হয়, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
আদালতের সাম্প্রতিক রায়টি কার্যকরীভাবে ডেভেলপার ও গ্রাহকদের মধ্যের যোগাযোগে অ্যাপলকে বাঁধা সৃষ্টি করতে মানা করছে বলে উঠে এসেছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
অ্যাপ স্টোরের চেয়ে কম খরচে গ্রাহককে সেবা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, অ্যাপলের নিয়ম থাকার কারণে সে ব্যাপারে গ্রাহককে জানাতে পারতো না ডেভেলপাররা। এপিক মামলায় এ ব্যাপারটিকে অযৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরেছিল এবং দাবি করেছিল, গ্রাহকদের এ ব্যাপারে জানানোর অধিকার তাদের থাকা উচিত।
আদালত অবশ্য অ্যাপলের পক্ষেও কথা বলেছে। বিচারক বলেছেন, অ্যাপল কীভাবে অবৈধ একাধিপত্য পরিচালনা করছে তা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে এপিক। বিচারক গনজালেস-রজারস বলেছেন, “অ্যাপল ৫৫ শতাংশের উপরে উল্লেখযোগ্য বাজার শেয়ার এবং অসাধারণ উচ্চ মুনাফা মার্জিন উপভোগ করে। এই বিষয়গুলো একা অ্যান্টিট্রাস্ট আচরণ দেখাচ্ছে না। সাফল্য অপরাধ নয়।”
এ প্রসঙ্গে এক অ্যাপল মুখপাত জানিয়েছেন, “আজ আদালত সে বিষয়টি নিশ্চিত করে দিয়েছে যা আমরা সব সময়ই জানতাম: অ্যাপ স্টোর অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ভাঙছে না।”
“আমরা যে যে খাতে ব্যবসা করি, তার প্রত্যেকটি অংশেই প্রচ- প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় অ্যাপল, এবং আমাদের বিশ্বাস গ্রাহক ও ডেভেলপারদের আমাদেরকে বেছে নেওয়া প্রয়োজন কারণ আমাদের পণ্য ও সেবা বিশ্বে সবচেয়ে সেরা।” – যোগ করেন মুখপাত্র।
এপিক গেইমস প্রধান টিম সুইনি রায়টিকে “ডেভেলপার বা ভোক্তাদের জন্য বিজয়” হিসেবে দেখছেন না এবং “লড়াই চালিয়ে যাওয়ার” কথা বলেছেন।
অ্যাপ স্টোর আয়ের ৭০ শতাংশই গেইমিং অ্যাপ থেকে আসে বলেও উঠে এসেছে রায়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এই রায় নিয়ে আপিল করবে দুই পক্ষই।
আদালতের এ রায়ের পর অ্যাপলের শেয়ার দর কমেছে তিন শতাংশ। ফলে তাদের বাজার মূল্য থেকে হাপিস হয়ে গেছে শত শত কোটি ডলার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এপিক গেইমস মামলা: বড় চপেটাঘাত অ্যাপলের গালে

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

প্রযুক্তি ডেস্ক : এপিক গেইমসের সঙ্গে চলমান মামলায় বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে অ্যাপল। ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালত রায় দিয়েছে, মার্কিন এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপ ডেভেলপারদেরকে তৃতীয় পক্ষের লেনদেন সুবিধা ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে পারবে না।
যদিও অ্যাপল আদালতে তর্ক জুড়ে দিয়েছিল, সব অ্যাপেরই তাদের ইন-অ্যাপ লেনদেন সুবিধা ব্যবহার করা উচিত।
এপিক বনাম অ্যাপল লড়াইয়ে অ্যাপ স্টোরের ৩০ শতাংশ চার্জ নেওয়াকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ফোর্টনাইট নির্মাতা, পাশাপাশি অ্যাপলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে একাধিপত্য বিস্তারের। প্লে স্টোরের খরচ নিয়ে গুগলের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে এপিক গেইমস।
শুক্রবার বিচারক ইয়োভেন গনজালেস-রজার্স জানান, “অ্যাপল একাধিপত্য বিস্তারী – দিনশেষে এমন উপসংহারে আসা আদালতের পক্ষে সম্ভব না।” তবে, অ্যাপল আর ডেভেলপারদেরকে নিজস্ব লেনদেন প্রক্রিয়া লিংক করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না জানিয়ে এক স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চলচ্চিত্র-স্ট্রিমিং সেবা এখন থেকে গ্রাহকদেরকে নিজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাবস্ক্রাইব করার সুযোগ করে দিতে পারবে। এ কাজে আর অ্যাপলের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
অ্যাপলের জন্য তাদের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ লাভজনক একটি প্রক্রিয়া। তবে, এ থেকে কত আয় হয়, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
আদালতের সাম্প্রতিক রায়টি কার্যকরীভাবে ডেভেলপার ও গ্রাহকদের মধ্যের যোগাযোগে অ্যাপলকে বাঁধা সৃষ্টি করতে মানা করছে বলে উঠে এসেছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
অ্যাপ স্টোরের চেয়ে কম খরচে গ্রাহককে সেবা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, অ্যাপলের নিয়ম থাকার কারণে সে ব্যাপারে গ্রাহককে জানাতে পারতো না ডেভেলপাররা। এপিক মামলায় এ ব্যাপারটিকে অযৌক্তিক হিসেবে তুলে ধরেছিল এবং দাবি করেছিল, গ্রাহকদের এ ব্যাপারে জানানোর অধিকার তাদের থাকা উচিত।
আদালত অবশ্য অ্যাপলের পক্ষেও কথা বলেছে। বিচারক বলেছেন, অ্যাপল কীভাবে অবৈধ একাধিপত্য পরিচালনা করছে তা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে এপিক। বিচারক গনজালেস-রজারস বলেছেন, “অ্যাপল ৫৫ শতাংশের উপরে উল্লেখযোগ্য বাজার শেয়ার এবং অসাধারণ উচ্চ মুনাফা মার্জিন উপভোগ করে। এই বিষয়গুলো একা অ্যান্টিট্রাস্ট আচরণ দেখাচ্ছে না। সাফল্য অপরাধ নয়।”
এ প্রসঙ্গে এক অ্যাপল মুখপাত জানিয়েছেন, “আজ আদালত সে বিষয়টি নিশ্চিত করে দিয়েছে যা আমরা সব সময়ই জানতাম: অ্যাপ স্টোর অ্যান্টিট্রাস্ট আইন ভাঙছে না।”
“আমরা যে যে খাতে ব্যবসা করি, তার প্রত্যেকটি অংশেই প্রচ- প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয় অ্যাপল, এবং আমাদের বিশ্বাস গ্রাহক ও ডেভেলপারদের আমাদেরকে বেছে নেওয়া প্রয়োজন কারণ আমাদের পণ্য ও সেবা বিশ্বে সবচেয়ে সেরা।” – যোগ করেন মুখপাত্র।
এপিক গেইমস প্রধান টিম সুইনি রায়টিকে “ডেভেলপার বা ভোক্তাদের জন্য বিজয়” হিসেবে দেখছেন না এবং “লড়াই চালিয়ে যাওয়ার” কথা বলেছেন।
অ্যাপ স্টোর আয়ের ৭০ শতাংশই গেইমিং অ্যাপ থেকে আসে বলেও উঠে এসেছে রায়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এই রায় নিয়ে আপিল করবে দুই পক্ষই।
আদালতের এ রায়ের পর অ্যাপলের শেয়ার দর কমেছে তিন শতাংশ। ফলে তাদের বাজার মূল্য থেকে হাপিস হয়ে গেছে শত শত কোটি ডলার।