ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

এন্ডোস্কোপিতে মৃত্যু: ল্যাবএইড হাসপাতাল ও ডা. স্বপ্নীলের বিরুদ্ধে তদন্তে ‘গুরুতর’ অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ০৭:০১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজা (৩১) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ‘গুরুতর’ অভিযোগ উঠে এসেছে। ল্যাবএইডের মতো হাসপাতালের এমন চিকিৎসা অবহেলা ‘দুঃখজনক’ বলে মনে করছে ভুক্তভোগীর স্বজন ও আইনজীবীরা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাহিব রেজার মৃত্যু হয়। পরে তার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা তার পরিবার। সেই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১২ মার্চ ল্যাবএইড হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজার মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিতে একজন আইনজীবীকে রাখতে বলা হয়। এই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
একইসঙ্গে চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় মেডিকেল বোর্ড গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। রুলে রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে রাহিব রেজার মৃত্যুর ঘটনায় কেন ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান। হাইকোর্টের নির্দেশের পর গঠিত তদন্ত কমিটি গত ১৭ এপ্রিল ৩২৩ পৃষ্ঠার প্রমাণক ডকুমেন্ট, ১৩ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে রাহিব রেজার চিকিৎসা সংক্রান্ত ২০ দফা সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ এবং ১০ দফা মূল বক্তব্যসহ বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়।
যা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে: ওই রিপোর্টে রাহিব রেজার চিকিৎসার বিষয়ে ল্যাবএইড হাসপাতাল ও অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেওয়া পদক্ষেপ বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টের স্পষ্টিকরণ পত্রে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি। সেগুলো হলো-
১. অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে ডা. সুনান বিন ইসলাম ও ডা. মো. নাসিফ শাহরিয়ার ইসলামের অংশগ্রহণে আট সদস্যের এন্ডোস্কোপি টিম গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাহিব রেজার এন্ডোস্কোপি করেন। এর চার দিন পর এন্ডোস্কোপি পরবর্তী জটিলতায় ১৯ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন রাহিব রেজা।
২. চেতনানাশক প্রয়োগ করে এন্ডোস্কোকপি করার জন্য রাহিব রেজা (৩২) একজন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তার ওজন বেশি ছিল (১২২ কেজি), তার অস্বাভাবিক ইসিজি ও হৃদরোগ ছিল। (ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি, লেস্ট ভেন্ট্রিকুলার ওয়াল গ্লোবাল হাইপোকাইনেসিয়া, রিডিউসড এলডি সিস্টোলিক ফাংশন বা ইএফ-৪৩ শতাংশ এবং পালমোনারি হাইপারটেনশন)।
৩. উপরোক্ত আনুষঙ্গিক অসুস্থতা আক্রান্ত রোগীর এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার আগে প্রাক-পরীক্ষা মূল্যায়ন এবং সতর্কতা পর্যাপ্ত ছিল না। (এন্ডোস্কোপি এবং সিডেশনের আগে ঝুঁকি স্তরবিন্যাস কার্ডিয়াক, পালমোনারি এবং এয়ারওয়ে মূল্যায়ন)।
৪. রোগীর নিজের বা তার আইনি অভিভাবকের কাছ থেকে একটি বৈধ সম্মতিপত্র নেওয়া প্রয়োজন ছিল। (এর পরিবর্তে, ল্যাবএইড এন্ডোস্কোপি টিম রোগীর বন্ধুর স্বাক্ষরিত সম্মতিপত্র নিয়েছে)।
৫. এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার দিন তালিকায় অতিরিক্ত সংখ্যক (৬৭ জন) এন্ডোস্কোপি ছিল যা একটি সেশনে একজন এন্ডোস্কোপিস্ট দ্বারা সম্পন্ন হওয়ার জন্য অনেক বেশি ছিল। ফলে প্রতি রোগীর জন্য বরাদ্দকৃত সময় অল্প হওয়ার কারণে অকার্যকর ও বিরূপ ফলাফল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৬. একজন ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার জন্য (পরীক্ষাকালীন ও পরীক্ষা পরবর্তী মনিটরিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য) প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ চিকিৎসক (এনেসথেসিওলজিস্ট) নিশ্চিত করা হয়নি।
৭. আপার জিআই এন্ডোস্কোপি স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়। পরীক্ষা পরবর্তী জটিলতায় রোগীকে আইসিইউ স্থানান্তরকরণ পর্যন্ত পুরো সময় এন্ডোস্কোপি টিম সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল। বর্ণনামতে রোগীকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া শনাক্তের পরপরই সিপিআর দেওয়া হয়েছে এবং ফেস মাস্ক এ অক্সিজেন দিয়ে রোগীকে আইসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়।
৮. আইসিইউ-তে প্রায় ২০ মিনিট রিসাসিয়েশন করা এবং রোগীকে শিরা পথে এডরেনালিয়েন এবং কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস সাপোর্ট দেওয়ার পর রোগীর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, ব্লাড পেশার সঠিক পাওয়া যায়। আইসিইউ টিম রোগীর পরিস্থিতি ‘সংকটাপন্ন’ বর্ণনা করেন।
৯. দীর্ঘসময় (প্রায় ৮৫ মিনিট) অনিয়মিত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ও শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে আইসিইউ রেকর্ডে রোগীর হাইপক্সিক অর্গান ডেমেজ এর লক্ষণ ও প্রমাণ (নিউরোলজিক্যাল সাইন এবং মেটাবলিক এসিডসিস) পাওয়া যায়।
১০. আইসিইউতে ব্যবস্থাপনা মানসম্মত ছিল। প্রফেসর মামুন আল মাহাতাবসহ (স্বপ্নীল) মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টিম চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় সংযুক্ত ছিলেন।
১১. প্রাথমিক হাইপোক্সিক ইনসাল্টের পর সর্বশেষে রোগীর অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া, সেন্টিসেমিয়া এবং মাল্টিঅর্গান ফেইলিউর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
১২. আইসিইউতে ব্যবস্থাপনার সময় রোগীর আত্মীয়দের তার অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হয়।
১৩. রোগীর মৃত্যু কারণ হিসেবে ‘ঐুঢ়ড়ীরপ বহপবঢ়যধষড়ঢ়ধঃযু, ধংঢ়রৎধঃরড়হ ঢ়হবঁসড়হরধ, ংবঢ়ঃরপ ংযড়পশ. সঁষঃরড়ৎমধহ ভধরষঁৎব, পধৎফরধপ ধৎৎবংঃ ংঁৎারাড়ৎ ভড়ষষড়রিহম ধহ ঁঢ়ঢ়বৎ এও বহফড়ংপড়ঢ়ু’ উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

এন্ডোস্কোপিতে মৃত্যু: ল্যাবএইড হাসপাতাল ও ডা. স্বপ্নীলের বিরুদ্ধে তদন্তে ‘গুরুতর’ অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:০১:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজা (৩১) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ‘গুরুতর’ অভিযোগ উঠে এসেছে। ল্যাবএইডের মতো হাসপাতালের এমন চিকিৎসা অবহেলা ‘দুঃখজনক’ বলে মনে করছে ভুক্তভোগীর স্বজন ও আইনজীবীরা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাহিব রেজার মৃত্যু হয়। পরে তার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা তার পরিবার। সেই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১২ মার্চ ল্যাবএইড হাসপাতালে এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে রাহিব রেজার মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিতে একজন আইনজীবীকে রাখতে বলা হয়। এই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
একইসঙ্গে চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় মেডিকেল বোর্ড গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। রুলে রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে রাহিব রেজার মৃত্যুর ঘটনায় কেন ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান। হাইকোর্টের নির্দেশের পর গঠিত তদন্ত কমিটি গত ১৭ এপ্রিল ৩২৩ পৃষ্ঠার প্রমাণক ডকুমেন্ট, ১৩ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে রাহিব রেজার চিকিৎসা সংক্রান্ত ২০ দফা সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ এবং ১০ দফা মূল বক্তব্যসহ বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়।
যা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে: ওই রিপোর্টে রাহিব রেজার চিকিৎসার বিষয়ে ল্যাবএইড হাসপাতাল ও অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেওয়া পদক্ষেপ বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টের স্পষ্টিকরণ পত্রে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি। সেগুলো হলো-
১. অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে ডা. সুনান বিন ইসলাম ও ডা. মো. নাসিফ শাহরিয়ার ইসলামের অংশগ্রহণে আট সদস্যের এন্ডোস্কোপি টিম গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাহিব রেজার এন্ডোস্কোপি করেন। এর চার দিন পর এন্ডোস্কোপি পরবর্তী জটিলতায় ১৯ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন রাহিব রেজা।
২. চেতনানাশক প্রয়োগ করে এন্ডোস্কোকপি করার জন্য রাহিব রেজা (৩২) একজন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তার ওজন বেশি ছিল (১২২ কেজি), তার অস্বাভাবিক ইসিজি ও হৃদরোগ ছিল। (ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি, লেস্ট ভেন্ট্রিকুলার ওয়াল গ্লোবাল হাইপোকাইনেসিয়া, রিডিউসড এলডি সিস্টোলিক ফাংশন বা ইএফ-৪৩ শতাংশ এবং পালমোনারি হাইপারটেনশন)।
৩. উপরোক্ত আনুষঙ্গিক অসুস্থতা আক্রান্ত রোগীর এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার আগে প্রাক-পরীক্ষা মূল্যায়ন এবং সতর্কতা পর্যাপ্ত ছিল না। (এন্ডোস্কোপি এবং সিডেশনের আগে ঝুঁকি স্তরবিন্যাস কার্ডিয়াক, পালমোনারি এবং এয়ারওয়ে মূল্যায়ন)।
৪. রোগীর নিজের বা তার আইনি অভিভাবকের কাছ থেকে একটি বৈধ সম্মতিপত্র নেওয়া প্রয়োজন ছিল। (এর পরিবর্তে, ল্যাবএইড এন্ডোস্কোপি টিম রোগীর বন্ধুর স্বাক্ষরিত সম্মতিপত্র নিয়েছে)।
৫. এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার দিন তালিকায় অতিরিক্ত সংখ্যক (৬৭ জন) এন্ডোস্কোপি ছিল যা একটি সেশনে একজন এন্ডোস্কোপিস্ট দ্বারা সম্পন্ন হওয়ার জন্য অনেক বেশি ছিল। ফলে প্রতি রোগীর জন্য বরাদ্দকৃত সময় অল্প হওয়ার কারণে অকার্যকর ও বিরূপ ফলাফল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৬. একজন ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপি পরীক্ষার জন্য (পরীক্ষাকালীন ও পরীক্ষা পরবর্তী মনিটরিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য) প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ চিকিৎসক (এনেসথেসিওলজিস্ট) নিশ্চিত করা হয়নি।
৭. আপার জিআই এন্ডোস্কোপি স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়। পরীক্ষা পরবর্তী জটিলতায় রোগীকে আইসিইউ স্থানান্তরকরণ পর্যন্ত পুরো সময় এন্ডোস্কোপি টিম সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল। বর্ণনামতে রোগীকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া শনাক্তের পরপরই সিপিআর দেওয়া হয়েছে এবং ফেস মাস্ক এ অক্সিজেন দিয়ে রোগীকে আইসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়।
৮. আইসিইউ-তে প্রায় ২০ মিনিট রিসাসিয়েশন করা এবং রোগীকে শিরা পথে এডরেনালিয়েন এবং কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস সাপোর্ট দেওয়ার পর রোগীর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, ব্লাড পেশার সঠিক পাওয়া যায়। আইসিইউ টিম রোগীর পরিস্থিতি ‘সংকটাপন্ন’ বর্ণনা করেন।
৯. দীর্ঘসময় (প্রায় ৮৫ মিনিট) অনিয়মিত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ও শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে আইসিইউ রেকর্ডে রোগীর হাইপক্সিক অর্গান ডেমেজ এর লক্ষণ ও প্রমাণ (নিউরোলজিক্যাল সাইন এবং মেটাবলিক এসিডসিস) পাওয়া যায়।
১০. আইসিইউতে ব্যবস্থাপনা মানসম্মত ছিল। প্রফেসর মামুন আল মাহাতাবসহ (স্বপ্নীল) মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টিম চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় সংযুক্ত ছিলেন।
১১. প্রাথমিক হাইপোক্সিক ইনসাল্টের পর সর্বশেষে রোগীর অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া, সেন্টিসেমিয়া এবং মাল্টিঅর্গান ফেইলিউর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
১২. আইসিইউতে ব্যবস্থাপনার সময় রোগীর আত্মীয়দের তার অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হয়।
১৩. রোগীর মৃত্যু কারণ হিসেবে ‘ঐুঢ়ড়ীরপ বহপবঢ়যধষড়ঢ়ধঃযু, ধংঢ়রৎধঃরড়হ ঢ়হবঁসড়হরধ, ংবঢ়ঃরপ ংযড়পশ. সঁষঃরড়ৎমধহ ভধরষঁৎব, পধৎফরধপ ধৎৎবংঃ ংঁৎারাড়ৎ ভড়ষষড়রিহম ধহ ঁঢ়ঢ়বৎ এও বহফড়ংপড়ঢ়ু’ উল্লেখ করা হয়েছে।