নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর বিভাগের ভার্চ্যুয়াল সভায় অদ্ভুত কাণ্ড ঘটেছে। ওই সভায় অনেক কর্মকর্তা বেনামে অংশগ্রহণ করেছেন। বৈঠকে ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’, ‘ইলন মাস্ক’ নামে অংশ নিয়েছেন। তেমনি ‘মায়ের দোয়া স্যানিটারি’, ‘তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি’ অংশ নেয়।
গত রোববার (১৫ জুন) এনবিআরের আয়কর বিভাগের রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় এমন ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের এমন বেনামে অংশগ্রহণ নিয়ে চলছে সমালোচনা। অনেকে মনে করেন, ঈদের আগে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ পরিচয় গোপন করতে নাম বদলাতে পারেন। আবার অনেকে ধারণা করছেন, অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়াতে কিছু ‘বট’ অ্যাকাউন্টকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
গত ৪ জুন এনবিআরের আয়কর বিভাগের রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৌশল নির্ধারণ এবং মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যালোচনা সভার নোটিশ দেওয়া হয়। রোববার এনবিআর ভবনের সম্মেলনকক্ষে সংস্থার চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে এই সভা হয়। এতে সশরীরে সব সদস্য, মহাপরিচালক ও কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। সারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যম জুমে অংশ নেন। সভার নোটিশে জুম আইডি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, রোববারের সভায় চার শতাধিক কর্মকর্তা অংশ নেন। এর মধ্যে বেশ কিছু এমন বেনামি আইডি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ‘আইফোন’ নামের অন্তত ২০টি আইডি থেকে বৈঠকে অংশ নেয়। ‘স্যামসাং’ ফোনের নাম ব্যবহার করে অনেকে অংশ নেন। এ ছাড়া ‘২০২৫’ নামেও অনেক আইডি দেখা যায়। এ ছাড়া কর অঞ্চল, সার্কেল কার্যালয়ের আইডি থেকে কেউ কেউ বৈঠকে অংশ নেন। কেউ কেউ নিজেদের নামেই বৈঠকে কথা বলেন।
এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে একটি শীর্ষ সংবাদপত্রের অনলাইন প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ ধরনের বৈঠকে সাধারণত নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। নির্দিষ্ট লিংকের মাধ্যমে জুম বৈঠকে প্রবেশের আগে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি ‘হোস্ট’ বা আয়োজকের ওপর নির্ভর করে। তাহলে কীভাবে ইলন মাস্ক, ডোনাল্ড ট্রাম্প, মায়ের দোয়া স্যানিটারি, তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি নামের আইডিকে বৈঠক অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত (১১ মাস) আয়কর আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা। আয়করে ঘাটতি ৩৪ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা।