ঢাকা ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫

এত উন্নয়নের পরেও কেন এই দুর্ভোগ?

  • আপডেট সময় : ১০:২৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ এ. আরাফাত : বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতে ২/৩ ঘণ্টার লোডশেডিং, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি- সব কিছু নিয়ে কিছুটা বিপাকে সবাই। এই সত্য অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। অনেকে প্রশ্ন করেন, কেন এই দুর্ভোগ, এত উন্নতির পরও দুর্ভোগ সইতে হবে?
আমরা গত ১৩/১৪ বছরে অভুতপূর্ব উন্নয়ন করেছি, এই উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান। তার মানে তো এই নয় যে আমরা বিশ্বের বাইরে বাস করি। যে দেশগুলো আমাদের অনেক আগে, আমাদের থেকেও অনেক বেশি উন্নত ছিল তারাও তো একই রকম বিপদে পড়েছে। উন্নয়ন হয়েছে বলেই কী করোনা মহামারি এবং যুদ্ধ- কোনও কিছুই আমাদেরকে ছুঁতে পারবে না, এটা কোনও যুক্তির কথা হলো? বরং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, গত ১৩/১৪ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে এবং অর্থনীতি যে মজবুত ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়েছে, তা না হলে আমরা আরও বড় বিপদে পড়তাম।
অনেকে এই প্রশ্নও করেন, আমরা শতভাগ বিদ্যুতের দেশ হয়েছি, তারপরও কেন লোডশেডিং হচ্ছে?
এসকল প্রশ্ন মানুষের মনে আসতেই পারে। কিন্তু আমরা যদি একটু চিন্তা করে দেখি যে, এখন আমরা করোনা পরবর্তী জটিল বাস্তবতায় বাস করছি এবং একই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ব জ্বালানির বাজারকে চরম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশগুলোও, যারা আমাদের অনেক আগেই শতভাগ বিদ্যুতের দেশ ছিল তারাও এখন জ্বালানি সাশ্রয়ী হতে বাধ্য হচ্ছে। কাজেই, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের অভুতপূর্ব উন্নয়ন সত্ত্বেও কঠিন বিশ্ব বাস্তবতায় বাংলাদেশ সরকারও বিভিন্ন দায়িত্বশীল ও দূরদর্শী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখন যে লোডশেডিং হচ্ছে তা আমাদের সক্ষমতার অভাবে হচ্ছে, তা নয়, বরং জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করেই আমরা তা করছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষকে বিপাকে ফেলেছে। পুরো বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেরই একই অবস্থা। তবে, শেখ হাসিনার সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
(১) নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সরকার ১০ টাকা করে চাল বিতরণ করছে।
(২) ঙগঝ-এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নি¤œ মধ্যবিত্তের জন্য ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল এবং ২০ টাকা দরে ৩ কেজি আটা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
(৩) ঞঈই’র মাধ্যমে ১ কোটি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে মধ্যবিত্তের জন্য এবং কার্ডের মাধ্যমে সয়াবিন তেল ১১০ দরে ২ লিটার, মসুর ডাল ৬৫ টাকা দরে ২ কেজি, চিনি ৬৫ টাকা দরে ১ কেজি বিতরণ করা হচ্ছে।
করোনার মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এছাড়াও কোরোনার মধ্যে কোটি কোটি মানুষকে ত্রাণ এবং টাকা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ মানুষকে ঘর বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ১৬/১৭ কোটি মানুষের এই দেশে এই কাজগুলো করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল-ত্রুটিও হয়েছে, কিন্তু মোটা দাগে লক্ষ কোটি মানুষ উপকার পেয়েছে।
একটু চিন্তা করে দেখুন, আমাদের অর্থনীতি গত ১৩/১৪ বছরে উন্নতি না করলে, মহামারি, যুদ্ধ -এই বিশ্ব দুর্যোগের মধ্যে, জনকল্যাণে এই কাজগুলো করা কি সম্ভব হতো?
লেখক: চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এত উন্নয়নের পরেও কেন এই দুর্ভোগ?

আপডেট সময় : ১০:২৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২

মোহাম্মদ এ. আরাফাত : বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতে ২/৩ ঘণ্টার লোডশেডিং, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি- সব কিছু নিয়ে কিছুটা বিপাকে সবাই। এই সত্য অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। অনেকে প্রশ্ন করেন, কেন এই দুর্ভোগ, এত উন্নতির পরও দুর্ভোগ সইতে হবে?
আমরা গত ১৩/১৪ বছরে অভুতপূর্ব উন্নয়ন করেছি, এই উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান। তার মানে তো এই নয় যে আমরা বিশ্বের বাইরে বাস করি। যে দেশগুলো আমাদের অনেক আগে, আমাদের থেকেও অনেক বেশি উন্নত ছিল তারাও তো একই রকম বিপদে পড়েছে। উন্নয়ন হয়েছে বলেই কী করোনা মহামারি এবং যুদ্ধ- কোনও কিছুই আমাদেরকে ছুঁতে পারবে না, এটা কোনও যুক্তির কথা হলো? বরং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, গত ১৩/১৪ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে এবং অর্থনীতি যে মজবুত ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়েছে, তা না হলে আমরা আরও বড় বিপদে পড়তাম।
অনেকে এই প্রশ্নও করেন, আমরা শতভাগ বিদ্যুতের দেশ হয়েছি, তারপরও কেন লোডশেডিং হচ্ছে?
এসকল প্রশ্ন মানুষের মনে আসতেই পারে। কিন্তু আমরা যদি একটু চিন্তা করে দেখি যে, এখন আমরা করোনা পরবর্তী জটিল বাস্তবতায় বাস করছি এবং একই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ব জ্বালানির বাজারকে চরম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশগুলোও, যারা আমাদের অনেক আগেই শতভাগ বিদ্যুতের দেশ ছিল তারাও এখন জ্বালানি সাশ্রয়ী হতে বাধ্য হচ্ছে। কাজেই, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের অভুতপূর্ব উন্নয়ন সত্ত্বেও কঠিন বিশ্ব বাস্তবতায় বাংলাদেশ সরকারও বিভিন্ন দায়িত্বশীল ও দূরদর্শী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখন যে লোডশেডিং হচ্ছে তা আমাদের সক্ষমতার অভাবে হচ্ছে, তা নয়, বরং জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করেই আমরা তা করছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষকে বিপাকে ফেলেছে। পুরো বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেরই একই অবস্থা। তবে, শেখ হাসিনার সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
(১) নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সরকার ১০ টাকা করে চাল বিতরণ করছে।
(২) ঙগঝ-এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নি¤œ মধ্যবিত্তের জন্য ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল এবং ২০ টাকা দরে ৩ কেজি আটা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
(৩) ঞঈই’র মাধ্যমে ১ কোটি কার্ড ইস্যু করা হয়েছে মধ্যবিত্তের জন্য এবং কার্ডের মাধ্যমে সয়াবিন তেল ১১০ দরে ২ লিটার, মসুর ডাল ৬৫ টাকা দরে ২ কেজি, চিনি ৬৫ টাকা দরে ১ কেজি বিতরণ করা হচ্ছে।
করোনার মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এছাড়াও কোরোনার মধ্যে কোটি কোটি মানুষকে ত্রাণ এবং টাকা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ মানুষকে ঘর বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ১৬/১৭ কোটি মানুষের এই দেশে এই কাজগুলো করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ভুল-ত্রুটিও হয়েছে, কিন্তু মোটা দাগে লক্ষ কোটি মানুষ উপকার পেয়েছে।
একটু চিন্তা করে দেখুন, আমাদের অর্থনীতি গত ১৩/১৪ বছরে উন্নতি না করলে, মহামারি, যুদ্ধ -এই বিশ্ব দুর্যোগের মধ্যে, জনকল্যাণে এই কাজগুলো করা কি সম্ভব হতো?
লেখক: চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন