নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ থেকে শুরু হয়েছে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এক দফার দ্বিতীয় পর্যায়ের পদযাত্রা কর্মসূচি। এটা শুধু পদযাত্রা নয়, জয়যাত্রা। আমাদের অধিকার আদায়ের পদযাত্রা এটা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গাবতলী মাজার রোড এলাকায় পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। কারণ গতকাল ঢাকায় উপনির্বাচন নিয়ে তামাশা খেলেছে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচনে ড. আরাফাত নামে আওয়ামী লীগের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন। তিনি আবার আওয়ামী লীগের থিং ট্রাঙ্কের প্রধান। প্রতিদ্বন্দ্বী কে? হিরো আলম। ওই নির্বাচনেও ভোটারদের নিতে পারে নাই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একেবারে পুঙ্গু, অথর্ব ও দলদাস। তাদের হিসাব অনুযায়ী মাত্র ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে। আমরা টেলিভিশনে দেখলাম কোথাও ভোটার নেই। ৫ ঘণ্টা পর একটা ভোটার আসছে তাকে নিয়ে লাফালাফি। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য একটাই। যেটা জুলাই মাসের ১২ তারিখে ১ দফার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শুধু আমরা নয় ৩৬টি রাজনৈতিক দল ঘোষণা দিয়েছে যে, সরকারকে এখনি পদত্যাগ করতে হবে। দেশের মানুষ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ এক দফা দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টার পর রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পদযাত্রা করছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি আমান উল্লাহ আমান। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব আমিনুল হক। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
এদিকে একই দাবিতে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশ করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। সমাবেশ শেষে তারা সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাবে পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। এছাড়া রাজধানীর বিজয় নগর মোড় থেকে বিকেল ৩টায় পদযাত্রা করবে ১২ দলীয় জোট। বিএনপি জানিয়েছে, আজকের পদযাত্রাটি গাবতলী এলাকা থেকে শ্যামলী হয়ে আগারগাঁও, বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, এফডিসি, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড়, দয়াগঞ্জ হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হবে।
এত বড় মিছিল করতে পারলে সরকারের পতন ঘটাতেও পারবো: বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এদেশের গণমানুষের অধিকার আদায় করবো। যারা এত বড় মিছিল করতে পেরেছে, তারা এ সরকারকে পদত্যাগ ঘটাতেও পারবে। আগামীকালের মিছিল আরও বড় হবে।
মঙ্গলবার শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে রাজধানীর গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বেলা ১১টায় গাবতলী থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিকেল পৌনে ৬টার দিকে রায়সাহেব বাজার মোড়ে প্রথম দিনের পদযাত্রা কর্মসূচির সমাপনী সমাবেশে শুরু হয়। সেখানেই প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মির্জা আব্বাস। বিএনপির এ নেতা বলেন, বিশ্বে এত বড় রাজনৈতিক মিছিল, মুক্তির মিছিল কেউ করতে পারেনি। কারও চোখ রাঙানিতে আমরা ভয় পাই না। সারাদেশে আমাদের মিছিল হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে। বাংলা কলেজের সামনে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের লোকজন এমন গণধোলাই দিয়েছে, হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে। যারা গণধোলাই দিয়েছে তাদের ধন্যবাদ। আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যারা বাধা দেবে তাদের এমনই হাল হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, গতকালের নির্বাচনে (ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচন) হিরো আলমকে মেরেছে। কারণ, তাদের (আওয়ামী লীগের) কোনো ভোট নেই। বিএনপির ভোট ৯০ ভাগ। তাই ওই নির্বাচন ভুয়া। মূলত এ সরকারই ভুয়া। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন ও জেষ্ঠ্য সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।