ঢাকা ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

এটা ইসি নয়, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন: সুজন

  • আপডেট সময় : ০১:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাবিত আইনটিকে ‘অনুসন্ধান কমিটি’ গঠনের আইন বলে মন্তব্য করেছে নাগরিক সংগঠন সুজন।
গতকাল রোববার সংসদে বিল উত্থাপনের পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে খসড়া আইন নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল- ২০২২’ উত্থাপন করেন। ২০১২ ও ২০১৭ সালে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ করেছিলেন, সে প্রক্রিয়াই আইনের অধীনে আনা হচ্ছে এ বিলের মাধ্যমে। পরে বিলটি সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত এ আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যতা-অযোগ্যতাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, খসড়া আইনটির সঙ্গে অনুসন্ধান কমিটির জন্য ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির জারি করা প্রজ্ঞাপনের পার্থক্য নেই বললেই চলে।
“কমিটির কার্যাবলির ক্ষেত্রে নাম আহ্বানের বিষয়টি যোগ হয়েছে এবং অন্যদিকে ২০১৭ সালের প্রজ্ঞাপনে নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে ন্যূনতম একজন নারী রাখার বিষয়টি থাকলেও খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।“
তুলনামুলক বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, “এটি পরিষ্কার যে, এটা ঠিক নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন নয়, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারি করা নির্দেশনাকে আইনি মোড়ক দেওয়াই যেন এর উদ্দেশ্য।
“প্রস্তাবিত খসড়ায় কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার যে মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে তা সবই দালিলিক প্রমাণের বিষয়।”
সংবাদ সম্মেলনে ২০০৭-২০১২ সালে দায়িত্ব পালন করা সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন তাদের আমলে ইসি নিয়োগের একটি খসড়া প্রস্তাবের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা কমিশনে থাকাকালীন যে খসড়াটি প্রস্তাব করেছিলাম সেখানে বলা ছিল – সুপারিশ করা নামগুলো প্রথমে সংসদের বিশেষ কমিটিতে যাবে, সেখানে আলোচনা হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এ কমিটিতে সব দলের সমানুপাতিক অংশগ্রহণ থাকে। তাহলে প্রধামন্ত্রীর হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা কম থাকে। সুজন এর নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক বলেন, ২০০২ সাল থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আসীন হয়েছেন তারা সরকারের প্রতি কোনো না কোনোভাবে সহানুভূতিশীল। আর দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করবেন। স্বীয় বিবেচনায় কাউকে মনোনীত করার ক্ষমতা সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে দেয় নাই।
“বুঝাই যাচ্ছে মনোনয়ন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই আসবে। এটি হবে একটি পক্ষপাতদুষ্ট সার্চ কমিটি। তারা যে নামগুলো প্রস্তাব করবে তা জানার সুযোগ থাকছে না। সরকার নির্ধারিত সার্চ কমিটি দিয়ে সরকার নির্ধারিত ব্যক্তিদের নিয়ে কমিশন গঠিত হবে।”
বিচারপতি মো. আবদুল মতিন বলেন, “আইনটি যে গুড মোটিভ নিয়ে করা হচ্ছে এরকম কোনো নজির দেখছি না। রাখঢাক করে এ আইন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আগের মতোই ইলেকশন করা।” সুজন এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনটির সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এবং সুজন সম্পদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দর খান, সিলেট জেলা সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহী জেলা সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন আপদ ‘মব সন্ত্রাস’, আতঙ্কে সারা দেশ

এটা ইসি নয়, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন: সুজন

আপডেট সময় : ০১:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাবিত আইনটিকে ‘অনুসন্ধান কমিটি’ গঠনের আইন বলে মন্তব্য করেছে নাগরিক সংগঠন সুজন।
গতকাল রোববার সংসদে বিল উত্থাপনের পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে খসড়া আইন নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল- ২০২২’ উত্থাপন করেন। ২০১২ ও ২০১৭ সালে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ করেছিলেন, সে প্রক্রিয়াই আইনের অধীনে আনা হচ্ছে এ বিলের মাধ্যমে। পরে বিলটি সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর আগে গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত এ আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যতা-অযোগ্যতাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, খসড়া আইনটির সঙ্গে অনুসন্ধান কমিটির জন্য ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির জারি করা প্রজ্ঞাপনের পার্থক্য নেই বললেই চলে।
“কমিটির কার্যাবলির ক্ষেত্রে নাম আহ্বানের বিষয়টি যোগ হয়েছে এবং অন্যদিকে ২০১৭ সালের প্রজ্ঞাপনে নাম সুপারিশের ক্ষেত্রে ন্যূনতম একজন নারী রাখার বিষয়টি থাকলেও খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে।“
তুলনামুলক বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, “এটি পরিষ্কার যে, এটা ঠিক নির্বাচন কমিশন গঠনের আইন নয়, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের আইন। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারি করা নির্দেশনাকে আইনি মোড়ক দেওয়াই যেন এর উদ্দেশ্য।
“প্রস্তাবিত খসড়ায় কমিশনারদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার যে মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে তা সবই দালিলিক প্রমাণের বিষয়।”
সংবাদ সম্মেলনে ২০০৭-২০১২ সালে দায়িত্ব পালন করা সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন তাদের আমলে ইসি নিয়োগের একটি খসড়া প্রস্তাবের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা কমিশনে থাকাকালীন যে খসড়াটি প্রস্তাব করেছিলাম সেখানে বলা ছিল – সুপারিশ করা নামগুলো প্রথমে সংসদের বিশেষ কমিটিতে যাবে, সেখানে আলোচনা হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এ কমিটিতে সব দলের সমানুপাতিক অংশগ্রহণ থাকে। তাহলে প্রধামন্ত্রীর হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা কম থাকে। সুজন এর নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক বলেন, ২০০২ সাল থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আসীন হয়েছেন তারা সরকারের প্রতি কোনো না কোনোভাবে সহানুভূতিশীল। আর দুইজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত করবেন। স্বীয় বিবেচনায় কাউকে মনোনীত করার ক্ষমতা সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে দেয় নাই।
“বুঝাই যাচ্ছে মনোনয়ন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই আসবে। এটি হবে একটি পক্ষপাতদুষ্ট সার্চ কমিটি। তারা যে নামগুলো প্রস্তাব করবে তা জানার সুযোগ থাকছে না। সরকার নির্ধারিত সার্চ কমিটি দিয়ে সরকার নির্ধারিত ব্যক্তিদের নিয়ে কমিশন গঠিত হবে।”
বিচারপতি মো. আবদুল মতিন বলেন, “আইনটি যে গুড মোটিভ নিয়ে করা হচ্ছে এরকম কোনো নজির দেখছি না। রাখঢাক করে এ আইন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে আগের মতোই ইলেকশন করা।” সুজন এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনটির সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এবং সুজন সম্পদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দর খান, সিলেট জেলা সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহী জেলা সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।