ঢাকা ১১:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

এগিয়ে মেয়েরা, জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা, পাসের হারে এগিয়ে যশোর বোর্ড

  • আপডেট সময় : ০৩:০১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা দুর্বিপাকে বিলম্বিত এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে কম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গ-ি অতিক্রম করা এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২ জন। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে তার কার্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে। দুপুর ১টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে এলেও মহামারীতে শিক্ষাসূচি পাল্টে যাওয়ায় এ বছর সাড়ে চার মাস পিছিয়ে গত ১৯ জুন এ পরীক্ষা শুরুর দিন ঠিক হয়েছিল। পরে বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সে পরীক্ষা শুরু হয় আরও তিন মাস পর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। দিনাজপুর বোর্ডে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে চার বিষয়ে নতুন সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও তা উৎরে গেছেন সংশ্লিষ্টরা। মহামারিতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও পুনর্বিন্যস্ত ও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে সময় কমিয়ে দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা নেওয়া হয়। নম্বর কমিয়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরে। এছাড়া ব্যবহারিক আছে এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরে ও ব্যবহারিক নেই- এমন বিষয়ে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
২০২২ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯জন পাস করেছে। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ৮৮ দশমিক ১০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবারও পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা- দুদিক দিয়েই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা। ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ পাস করেছে। মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন। আর ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী এবং ১ লাখ ২১ হাজার ১৫৬ জন ছাত্র। চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।
মেয়েরাই এগিয়ে: পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে এবছরও এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। চলতি বছর ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে বড় ব্যবধানে। জিপিএ-৫ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ২১ জন ১৫৬ ছাত্র; আর ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী। সেই হিসেবে ২৭ হাজার ২৯০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মাধ্যমিকের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। গত বছর এ পরীক্ষায় ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। গত পাঁচ বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। গত বছর ছাত্রীদের পাসের হার যেখানে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল; ছাত্রদের মধ্যে পাস করেছিল ৯২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর গতবার জিপিএ ৫ পাওয়া ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৯ হাজার ৭৬২ জন ছিল ছাত্র; আর ১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৮ জন ছাত্রী। এ বছর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন, পাস করেছে ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন। অন্যদিকে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রীর মধ্যে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।
জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা, পাসের হারে এগিয়ে যশোর বোর্ড : মহামারী ও বন্যার কারণে সাত মাস বিলম্বিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে এবার সবচেয়ে বেশি, ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর সবচেয়ে কম পাস করেছে সিলেট বোর্ডে, ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে ময়মনসিংহ বোর্ডে সবচেয়ে বেশি, ৯৭ দশমিক ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। আর সবচেয়ে কম পাশের হার ছিল বরিশাল বোর্ডে, ৯০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা আটবার পাসের হারে শীর্ষ ছিল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এবার এ বোর্ডের ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। প্রতিবারের মত এবারও জিপিএ-৫ এ সবার উপরে রয়েছে ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা, এ শিক্ষা বোর্ডের ৬৪ হাজার ৯৮৪ জন শিক্ষার্থী পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে। ২০০১ সালে এসএসসিতে গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর পর থেকেই এই স্থানটি ধরে রেখেছে ঢাকার শিক্ষার্থীরা। সবচেয়ে কম জিপিএ-৫ পেয়েছে সিলেট বোর্ড। এই বোর্ডের ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। সে হিসেবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট ও জিপিএ-৫ বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২টি।
করোনাভাইরাস মহামারী ও বন্যায় সাত মাস পিছিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হয়। সব বোর্ড মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন। মহামারীতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
বন্যার ধাক্কা সিলেট বোর্ডে: বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রমা বিজয় সরকার বলেন, “অনেক বাচ্চার বই- দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত জুন মাসের বন্যার ধাক্কায় এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হারে বড় পতন দেখল সিলেট বোর্ড। এবার নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুদিক থেকেই সিলেট বোর্ড সবচেয়ে পিছিয়ে। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী। অথচ গত বছর পাসের হার ছিল ৯৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা সব বোর্ডের মধ্যে দ্বিতীয়। সিলেট বোর্ডের এবারের ফলাফলে সন্তুষ্ট নন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রমা বিজয় সরকার। তিনি বলেন, “বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট বোর্ড। এক মাস বন্যা ছিল, আর রিকভারির জন্য আরও এক মাস লেগে গেছে। দুই মাস পড়ালেখার বাইরে থাকায় প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। “অনেক বাচ্চার বই-খাতা পানিতে ভেসে গেছে। ওদের আমরা বই দিয়েছি, কিন্তু তারপরও গ্যাপ থেকে গেছে।” ফলাফল কিছুটা খারাপ হওয়ার পেছনে বিজ্ঞান বিভাগে কম শিক্ষার্থী থাকার বিষয়টিও ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
“বিজ্ঞান বিভাগে আমাদের শিক্ষার্থী কম ছিল। আর মানবিকে বেশি। মানবিক শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ও গণিতে কিছুটা দুর্বল থাকে। আমরা দেখেছি, মানবিকের কিছু শিক্ষার্থী গণিতে খারাপ করায় আমাদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।”
ময়মনসিংহ বিভাগের কয়েকটি এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ায় এ বোর্ডের ফলেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। গত বছর পাসের হারে শীর্ষে থাকা ময়মনসিংহ বোর্ড এবার পাসের হারে নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। এ বছর এই বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ০২ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ২১৬ জন শিক্ষার্থী।
গত জুনের ওই বন্যার সময় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ৫ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, কেবল মাধ্যমিক পর্যায়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬ লাখ শিক্ষার্থী। বন্যার কারণেই ১৯ জুনের পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের কারও আপত্তি থাকলে আজ মঙ্গলবার থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন তিনি। রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে ফল যাচাইয়ের আবেদন করা যাবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আবেদন করতে টেলিটকের প্রিপেইড মোবাইল ফোন থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে পিন নম্বর দেওয়া হবে। পরে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ণঊঝ লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। পুনঃনিরীক্ষার ক্ষেত্রে একই এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের (যে সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে) জন্য আবেদন করা যাবে। সেক্ষেত্রে ‘কমা’ দিয়ে বিষয় কোডগুলো পর্যায়ক্রমে লিখতে হবে। প্রতি বিষয়ের জন্য ১২৫ টাকা করে ফি দিতে হবে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০২২ সালে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। করোনাভাইরাস মহামারী ও বন্যায় সাত মাস পিছিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হয়। সব বোর্ড মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন, এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন।
মহামারীতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এগিয়ে মেয়েরা, জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা, পাসের হারে এগিয়ে যশোর বোর্ড

আপডেট সময় : ০৩:০১:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : নানা দুর্বিপাকে বিলম্বিত এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা গতবারের চেয়ে কম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গ-ি অতিক্রম করা এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২ জন। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে তার কার্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে। দুপুর ১টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে এলেও মহামারীতে শিক্ষাসূচি পাল্টে যাওয়ায় এ বছর সাড়ে চার মাস পিছিয়ে গত ১৯ জুন এ পরীক্ষা শুরুর দিন ঠিক হয়েছিল। পরে বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সে পরীক্ষা শুরু হয় আরও তিন মাস পর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। দিনাজপুর বোর্ডে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে চার বিষয়ে নতুন সূচিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও তা উৎরে গেছেন সংশ্লিষ্টরা। মহামারিতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও পুনর্বিন্যস্ত ও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে সময় কমিয়ে দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা নেওয়া হয়। নম্বর কমিয়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরে। এছাড়া ব্যবহারিক আছে এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরে ও ব্যবহারিক নেই- এমন বিষয়ে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
২০২২ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯জন পাস করেছে। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ৮৮ দশমিক ১০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবারও পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা- দুদিক দিয়েই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা। ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ পাস করেছে। মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন। আর ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী এবং ১ লাখ ২১ হাজার ১৫৬ জন ছাত্র। চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।
মেয়েরাই এগিয়ে: পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে এবছরও এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। চলতি বছর ৮৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে, যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে বড় ব্যবধানে। জিপিএ-৫ পাওয়া ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ২১ জন ১৫৬ ছাত্র; আর ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী। সেই হিসেবে ২৭ হাজার ২৯০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মাধ্যমিকের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। গত বছর এ পরীক্ষায় ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। গত পাঁচ বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। গত বছর ছাত্রীদের পাসের হার যেখানে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ছিল; ছাত্রদের মধ্যে পাস করেছিল ৯২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর গতবার জিপিএ ৫ পাওয়া ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৯ হাজার ৭৬২ জন ছিল ছাত্র; আর ১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৮ জন ছাত্রী। এ বছর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৯ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৩ জন, পাস করেছে ৮ লাখ ৭০ হাজার ৪৬ জন। অন্যদিকে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রীর মধ্যে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে ৯৭ দশমিক ০৯ শতাংশ ছাত্র ও ৯৭ দশমিক ০৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মানবিকে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ ছাত্র ও ৮২ দশমিক ৫৫ শতাংশ ছাত্রী এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ০৫ শতাংশ ছাত্র ও ৯২ দশমিক ৯২ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।
জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা, পাসের হারে এগিয়ে যশোর বোর্ড : মহামারী ও বন্যার কারণে সাত মাস বিলম্বিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এ বোর্ডে এবার সবচেয়ে বেশি, ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর সবচেয়ে কম পাস করেছে সিলেট বোর্ডে, ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে ময়মনসিংহ বোর্ডে সবচেয়ে বেশি, ৯৭ দশমিক ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। আর সবচেয়ে কম পাশের হার ছিল বরিশাল বোর্ডে, ৯০ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা আটবার পাসের হারে শীর্ষ ছিল রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এবার এ বোর্ডের ৮৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। প্রতিবারের মত এবারও জিপিএ-৫ এ সবার উপরে রয়েছে ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা, এ শিক্ষা বোর্ডের ৬৪ হাজার ৯৮৪ জন শিক্ষার্থী পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে। ২০০১ সালে এসএসসিতে গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর পর থেকেই এই স্থানটি ধরে রেখেছে ঢাকার শিক্ষার্থীরা। সবচেয়ে কম জিপিএ-৫ পেয়েছে সিলেট বোর্ড। এই বোর্ডের ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন। সে হিসেবে এবার পাসের হার কমেছে ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পয়েন্ট ও জিপিএ-৫ বেড়েছে ৮৬ হাজার ২৬২টি।
করোনাভাইরাস মহামারী ও বন্যায় সাত মাস পিছিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হয়। সব বোর্ড মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন। মহামারীতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
বন্যার ধাক্কা সিলেট বোর্ডে: বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রমা বিজয় সরকার বলেন, “অনেক বাচ্চার বই- দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত জুন মাসের বন্যার ধাক্কায় এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হারে বড় পতন দেখল সিলেট বোর্ড। এবার নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুদিক থেকেই সিলেট বোর্ড সবচেয়ে পিছিয়ে। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী। অথচ গত বছর পাসের হার ছিল ৯৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা সব বোর্ডের মধ্যে দ্বিতীয়। সিলেট বোর্ডের এবারের ফলাফলে সন্তুষ্ট নন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রমা বিজয় সরকার। তিনি বলেন, “বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট বোর্ড। এক মাস বন্যা ছিল, আর রিকভারির জন্য আরও এক মাস লেগে গেছে। দুই মাস পড়ালেখার বাইরে থাকায় প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। “অনেক বাচ্চার বই-খাতা পানিতে ভেসে গেছে। ওদের আমরা বই দিয়েছি, কিন্তু তারপরও গ্যাপ থেকে গেছে।” ফলাফল কিছুটা খারাপ হওয়ার পেছনে বিজ্ঞান বিভাগে কম শিক্ষার্থী থাকার বিষয়টিও ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
“বিজ্ঞান বিভাগে আমাদের শিক্ষার্থী কম ছিল। আর মানবিকে বেশি। মানবিক শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ও গণিতে কিছুটা দুর্বল থাকে। আমরা দেখেছি, মানবিকের কিছু শিক্ষার্থী গণিতে খারাপ করায় আমাদের ফলাফল খারাপ হয়েছে।”
ময়মনসিংহ বিভাগের কয়েকটি এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ায় এ বোর্ডের ফলেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। গত বছর পাসের হারে শীর্ষে থাকা ময়মনসিংহ বোর্ড এবার পাসের হারে নয়টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। এ বছর এই বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ০২ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ২১৬ জন শিক্ষার্থী।
গত জুনের ওই বন্যার সময় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ৫ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, কেবল মাধ্যমিক পর্যায়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬ লাখ শিক্ষার্থী। বন্যার কারণেই ১৯ জুনের পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন।
ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের কারও আপত্তি থাকলে আজ মঙ্গলবার থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন তিনি। রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে ফল যাচাইয়ের আবেদন করা যাবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আবেদন করতে টেলিটকের প্রিপেইড মোবাইল ফোন থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে পিন নম্বর দেওয়া হবে। পরে জঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ণঊঝ লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। পুনঃনিরীক্ষার ক্ষেত্রে একই এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের (যে সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে) জন্য আবেদন করা যাবে। সেক্ষেত্রে ‘কমা’ দিয়ে বিষয় কোডগুলো পর্যায়ক্রমে লিখতে হবে। প্রতি বিষয়ের জন্য ১২৫ টাকা করে ফি দিতে হবে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০২২ সালে ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন। করোনাভাইরাস মহামারী ও বন্যায় সাত মাস পিছিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিকের পরীক্ষা শুরু হয়। সব বোর্ড মিলিয়ে এ বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন, এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন।
মহামারীতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সময় ও নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।