ঢাকা ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

এক যুগ ধরে চিকিৎসা, নম্বর চাইতেই উধাও!

  • আপডেট সময় : ১২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকের ডগায় বসে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে চেম্বার খুলে চিকিৎসা শুরু করে নয়ন কুমার চাকি (৪২) নামের এক ভূয়া ডাক্তার। নয়ন কুমার চাকি কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বালীগাঁও এলাকায় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোগী দেখার কাজ করতো। তবে সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউ.এইচ.এফ.পি.ও) ডা. এস.এম মন্জুর-এ-এলাহী ওই ভুয়া চিকিৎসক চাকির খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এমন প্রতারণার খবর। জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোগী দেখার কাজ করতো। এর মধ্যে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঔষধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের ভীড়ও থাকতো বেশ। বিষয়টি দেখে সন্দেহ হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস.এম মন্জুর-এ-এলাহীর। পরে তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে যান। তার সাথে গল্প করার এক পর্যায়ে চাকি কোন মেডিকেল থেকে পাস করেছেন জানতে চাইতেই চাকি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের কথা বলেন। কোন বছর? ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ কাউন্সিল (বিএমডিসি) নম্বর কত? জানতে চাইতেই গড়িমসি শুরু করেন। এক পর্যায় চাকি বলেন, বিএমডিসি নম্বরটা মনে নেই। কিন্তু কাগজপত্র আছে। তার বউ বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে গেছে দুপুরে আসলেই তিনি কাগজপত্র নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাবেন। পরে ইউ.এইচ.এফ.পি.ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যান। দুপুরে নয়ন কুমার চাকি ইউ.এইচ.এফ.পি.ও’কে ফোন দিয়ে জানায় তিনি কাগজপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না, পেলেই নিয়ে চলে আসবেন। কিন্তু পরদিন জানা গেলো তিনি রাতের আঁধারে ট্রাকে মালামাল ভর্তি করে পালিয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা সড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণস্থানে নিজস্ব চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতো কথিত ডাক্তার নয়ন কুমার চাকি। চিকিৎসার যে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হতো তাতে বা তাঁর ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে মেডিসিন, ডায়াবেটিস, মা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সোনোলজিস্ট বিষয়ের চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন। আর তার ডিগ্রির ঘরে লেখা আছে এমবিবিএস, এমসিএইচ (ঢাকা), সিসিডি (বার্ডেম), সিএমইউ (ঢাকা)। রোগী দেখার সময় লেখা আছে প্রতিদিন ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। সিরিয়ালের জন্য একটি নম্বরও দেওয়া আছে তাতে। প্রথম দফায় ৩০০ টাকা ও দ্বিতীয় দফায় ২০০ টাকা ভিজিট নেন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মৌখিকভাবে কারো কাছে রাজশাহী মেডিকেল আবার কারো কাছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পরিচয় দিতেন বলে তারা জানান। নাম প্রকাশে এক মহিলা রোগী বলেন, আমি ডাক্তার নয়ন কুমার চাকিকে দেখাবো বলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দেই সিরিয়ালের জন্য। কিন্তু ওনি ওইপ্রান্ত থেকে জানান, তিনি আর কালীগঞ্জে নাই। এখন থেকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে বসবেন। তবে আমি চাইলে অনলাইনে চিকিৎসা নিতে পারবো। আর এজন্য বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে বলে জানান নয়ন কুমার চাকি।
নাম প্রকাশে বালীগাঁও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নয়ন কুমার চাকি দীর্ঘ দিন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে প্রতারনার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল। অথচ এই দীর্ঘ সময়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক ইউ.এইচ.এফ.পি.ও একের পর এক চাকরি করে গেলেও কেউ এই ভুয়া ডাক্তারকে শনাক্ত করতে পারেনি। তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে রোগীদের নিয়মিত বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য পাঠানোর পাশাপাশি নিজেকে সোনোলজিস্ট হিসেবে আল্ট্রাসগ্রাম করাতেন। আর নয়ন কুমার চাকি দীর্ঘ এই সময় প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকের ডাক্তার, রাজনৈতিক নেতা, কথিত সাংবাদিকসহ অনেককেই সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন বলেও জানান তারা। সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৮ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে। তাছাড়া চেম্বারের সামনে তার সকল প্রকার বিলবোর্ড, সাইন বোর্ড ও নেমপ্লেট খুলে ফেলেছে। সেখানে এখনো কিছু রোগী এসে তালা দেওয়া দেখে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। তবে স্থানীয়দের কাছে নয়ন কুমার চাকির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেই তারা জানাচ্ছে চাকি পালিয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা পরিষদের নাকের ডগায় কীভাবে দীর্ঘদিন সাধারণ রোগীদের প্রতাণার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল ভুয়া ডাক্তার নয়ন কুমার চাকি। নয়ন কুমার চাকির চেম্বারের বাড়ির মালিক মনির উদ্দিন পাঠান মিঠু জানান, তার বাসায় নয়ন কুমার চাকি ৮/৯ বছর ভাড়া ছিল। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফোনে জানায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ট্রেনিং থাকায় তিনি একবারে চলে গেছেন। বাড়ির মালিক আরো জানান, তিনি এলাকায় থাকেন না, পরে এলাকায় এসে শুনতে পান যে, চাকি এতদিন ডাক্তারি করেছেন তবে তার কোন কাগজপত্রই নেই। প্রতি মাসে অগ্রিম হিসেবে ভাড়া নিয়ে নেওয়ায় তার কোনো বাড়ি ভাড়া বাকি ছিল না বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে নয়ন কুমার চাকির ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, বাড়ি ভাড়ার মেয়াদ শেষ তাই তিনি চলে গেছেন। তার ডাক্তারি করার মত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আছে। বিএমডিসি নম্বর জানতে চাইলে তিনি বলেন নম্বর আছে তবে দেওয়া যাবে না বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে একাধিকবার ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম মন্জুর-এ-এলাহী বলেন, আমি ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকেই স্থানীয় সাংসদের পরামর্শে স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবায় কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। এ ধারাবাহিকতায় ভূয়া ডাক্তার নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে অভিযান চালাই। কিন্তু তাকে সময় দিয়ে কাগজপত্র চাইতেই তিনি রাতের আঁধারে পালিয়ে যান।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক যুগ ধরে চিকিৎসা, নম্বর চাইতেই উধাও!

আপডেট সময় : ১২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকের ডগায় বসে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে চেম্বার খুলে চিকিৎসা শুরু করে নয়ন কুমার চাকি (৪২) নামের এক ভূয়া ডাক্তার। নয়ন কুমার চাকি কালীগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বালীগাঁও এলাকায় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোগী দেখার কাজ করতো। তবে সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউ.এইচ.এফ.পি.ও) ডা. এস.এম মন্জুর-এ-এলাহী ওই ভুয়া চিকিৎসক চাকির খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে এমন প্রতারণার খবর। জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোগী দেখার কাজ করতো। এর মধ্যে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঔষধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের ভীড়ও থাকতো বেশ। বিষয়টি দেখে সন্দেহ হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস.এম মন্জুর-এ-এলাহীর। পরে তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে যান। তার সাথে গল্প করার এক পর্যায়ে চাকি কোন মেডিকেল থেকে পাস করেছেন জানতে চাইতেই চাকি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের কথা বলেন। কোন বছর? ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ কাউন্সিল (বিএমডিসি) নম্বর কত? জানতে চাইতেই গড়িমসি শুরু করেন। এক পর্যায় চাকি বলেন, বিএমডিসি নম্বরটা মনে নেই। কিন্তু কাগজপত্র আছে। তার বউ বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে গেছে দুপুরে আসলেই তিনি কাগজপত্র নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাবেন। পরে ইউ.এইচ.এফ.পি.ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে যান। দুপুরে নয়ন কুমার চাকি ইউ.এইচ.এফ.পি.ও’কে ফোন দিয়ে জানায় তিনি কাগজপত্র খুঁজে পাচ্ছেন না, পেলেই নিয়ে চলে আসবেন। কিন্তু পরদিন জানা গেলো তিনি রাতের আঁধারে ট্রাকে মালামাল ভর্তি করে পালিয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, কালীগঞ্জ উপজেলা সড়কের অতি গুরুত্বপূর্ণস্থানে নিজস্ব চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতো কথিত ডাক্তার নয়ন কুমার চাকি। চিকিৎসার যে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হতো তাতে বা তাঁর ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে মেডিসিন, ডায়াবেটিস, মা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সোনোলজিস্ট বিষয়ের চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন। আর তার ডিগ্রির ঘরে লেখা আছে এমবিবিএস, এমসিএইচ (ঢাকা), সিসিডি (বার্ডেম), সিএমইউ (ঢাকা)। রোগী দেখার সময় লেখা আছে প্রতিদিন ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। সিরিয়ালের জন্য একটি নম্বরও দেওয়া আছে তাতে। প্রথম দফায় ৩০০ টাকা ও দ্বিতীয় দফায় ২০০ টাকা ভিজিট নেন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মৌখিকভাবে কারো কাছে রাজশাহী মেডিকেল আবার কারো কাছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পরিচয় দিতেন বলে তারা জানান। নাম প্রকাশে এক মহিলা রোগী বলেন, আমি ডাক্তার নয়ন কুমার চাকিকে দেখাবো বলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দেই সিরিয়ালের জন্য। কিন্তু ওনি ওইপ্রান্ত থেকে জানান, তিনি আর কালীগঞ্জে নাই। এখন থেকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে বসবেন। তবে আমি চাইলে অনলাইনে চিকিৎসা নিতে পারবো। আর এজন্য বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে বলে জানান নয়ন কুমার চাকি।
নাম প্রকাশে বালীগাঁও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, নয়ন কুমার চাকি দীর্ঘ দিন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে প্রতারনার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল। অথচ এই দীর্ঘ সময়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক ইউ.এইচ.এফ.পি.ও একের পর এক চাকরি করে গেলেও কেউ এই ভুয়া ডাক্তারকে শনাক্ত করতে পারেনি। তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে রোগীদের নিয়মিত বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য পাঠানোর পাশাপাশি নিজেকে সোনোলজিস্ট হিসেবে আল্ট্রাসগ্রাম করাতেন। আর নয়ন কুমার চাকি দীর্ঘ এই সময় প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকের ডাক্তার, রাজনৈতিক নেতা, কথিত সাংবাদিকসহ অনেককেই সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন বলেও জানান তারা। সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৮ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে। তাছাড়া চেম্বারের সামনে তার সকল প্রকার বিলবোর্ড, সাইন বোর্ড ও নেমপ্লেট খুলে ফেলেছে। সেখানে এখনো কিছু রোগী এসে তালা দেওয়া দেখে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। তবে স্থানীয়দের কাছে নয়ন কুমার চাকির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেই তারা জানাচ্ছে চাকি পালিয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা পরিষদের নাকের ডগায় কীভাবে দীর্ঘদিন সাধারণ রোগীদের প্রতাণার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল ভুয়া ডাক্তার নয়ন কুমার চাকি। নয়ন কুমার চাকির চেম্বারের বাড়ির মালিক মনির উদ্দিন পাঠান মিঠু জানান, তার বাসায় নয়ন কুমার চাকি ৮/৯ বছর ভাড়া ছিল। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফোনে জানায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ট্রেনিং থাকায় তিনি একবারে চলে গেছেন। বাড়ির মালিক আরো জানান, তিনি এলাকায় থাকেন না, পরে এলাকায় এসে শুনতে পান যে, চাকি এতদিন ডাক্তারি করেছেন তবে তার কোন কাগজপত্রই নেই। প্রতি মাসে অগ্রিম হিসেবে ভাড়া নিয়ে নেওয়ায় তার কোনো বাড়ি ভাড়া বাকি ছিল না বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে নয়ন কুমার চাকির ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, বাড়ি ভাড়ার মেয়াদ শেষ তাই তিনি চলে গেছেন। তার ডাক্তারি করার মত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আছে। বিএমডিসি নম্বর জানতে চাইলে তিনি বলেন নম্বর আছে তবে দেওয়া যাবে না বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে একাধিকবার ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম মন্জুর-এ-এলাহী বলেন, আমি ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকেই স্থানীয় সাংসদের পরামর্শে স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবায় কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করি। এ ধারাবাহিকতায় ভূয়া ডাক্তার নয়ন কুমার চাকির চেম্বারে অভিযান চালাই। কিন্তু তাকে সময় দিয়ে কাগজপত্র চাইতেই তিনি রাতের আঁধারে পালিয়ে যান।