ঢাকা ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

এক মাসে দ্বিগুণ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম

  • আপডেট সময় : ০১:১৩:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • ৬৬ বার পড়া হয়েছে

বাণিজ্য ডেস্ক : মাত্র এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের (বিআইএফসি) শেয়ার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও লোকসানে নিমজ্জিত হয়ে বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। এমনকি নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করছে না। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারায় পুঁজিবাজারে লিজিং খাতের এ প্রতিষ্ঠানটির স্থান হয়েছে ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির তালিকায়। পচা কোম্পানিটির শেয়ারের এমন দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শেয়ারের এই দাম বাড়ার পেছনে কারসাজি থাকতে পারে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনে ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারেন। তাই বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তা প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। তবে ডিএসই’র সতর্কবার্তাও কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা থামাতে পারেনি। ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ইন্ডিস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। এর জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার জন্য কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম ছিল ৬ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে টানা বেড়ে ৪ আগস্ট প্রতিটি শেয়ারের দাম ১২ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে। এরপর কোম্পানিটির শেয়ার দাম কিছুটা কমলেও এখনও তা ১১ টাকা ৯০ পয়সায় রয়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি লোকসানে নিমজ্জিত থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়। এরপর আর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১২ টাকা ২০ পয়সা লোকসান করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক সদস্য বলেন, সার্বিক শেয়ারবাজারে যখন মন্দা চলছে, সে সময় বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম যেভাবে বেড়েছে তা কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না। এই দাম বাড়ার পেছনে কোনো বিশেষ চক্র থাকতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিচ্ছে না। আবার বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে রয়েছে। হঠাৎ কী এমন হলো, কোম্পানিটির শেয়ার দাম এমন বেড়ে গেলো? তিনি আরও বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে যখন যে কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে, বাড়তি দামে ওই কোম্পানির শেয়ার কেনে। দাম বাড়ার সময় কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি কতটা শক্তিশালী, তা ভালো করে পর্যালোচনা করতে হবে। শুধু গুঞ্জনের ওপর নির্ভর করে অতিরিক্ত লাভের আশায় বিনিয়োগ করলে লোকসানের মধ্যে পড়তে হতে পারে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক মাসে দ্বিগুণ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম

আপডেট সময় : ০১:১৩:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

বাণিজ্য ডেস্ক : মাত্র এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের (বিআইএফসি) শেয়ার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও লোকসানে নিমজ্জিত হয়ে বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। এমনকি নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করছে না। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারায় পুঁজিবাজারে লিজিং খাতের এ প্রতিষ্ঠানটির স্থান হয়েছে ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির তালিকায়। পচা কোম্পানিটির শেয়ারের এমন দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শেয়ারের এই দাম বাড়ার পেছনে কারসাজি থাকতে পারে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনে ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারেন। তাই বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তা প্রকাশ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। তবে ডিএসই’র সতর্কবার্তাও কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা থামাতে পারেনি। ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ইন্ডিস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। এর জবাবে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রতি শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার জন্য কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১৪ জুলাই বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ারের দাম ছিল ৬ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে টানা বেড়ে ৪ আগস্ট প্রতিটি শেয়ারের দাম ১২ টাকা ৭০ পয়সায় উঠে। এরপর কোম্পানিটির শেয়ার দাম কিছুটা কমলেও এখনও তা ১১ টাকা ৯০ পয়সায় রয়েছে। শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি লোকসানে নিমজ্জিত থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়। এরপর আর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১২ টাকা ২০ পয়সা লোকসান করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক সদস্য বলেন, সার্বিক শেয়ারবাজারে যখন মন্দা চলছে, সে সময় বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের শেয়ার দাম যেভাবে বেড়েছে তা কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না। এই দাম বাড়ার পেছনে কোনো বিশেষ চক্র থাকতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সের বছরের পর বছর ধরে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিচ্ছে না। আবার বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে রয়েছে। হঠাৎ কী এমন হলো, কোম্পানিটির শেয়ার দাম এমন বেড়ে গেলো? তিনি আরও বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে যখন যে কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ে, বাড়তি দামে ওই কোম্পানির শেয়ার কেনে। দাম বাড়ার সময় কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কোম্পানির আর্থিক ভিত্তি কতটা শক্তিশালী, তা ভালো করে পর্যালোচনা করতে হবে। শুধু গুঞ্জনের ওপর নির্ভর করে অতিরিক্ত লাভের আশায় বিনিয়োগ করলে লোকসানের মধ্যে পড়তে হতে পারে।