মহানগর প্রতিবেদন : প্রাচীন যুগে যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত তিন চাকার যান ভ্যান। আধুনিক যুগে শহরে নানান পরিবহনের ভিড়েও দেখা মেলে এই যানের। যদিও তা ব্যবহার করা হয় মালামাল পরিবহনের জন্য। তবে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধে রাজধানী ঢাকার বুকে অনেকটায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই ভ্যানগাড়ি। দূরদূরান্তে গন্তব্যের জন্য যাত্রীদের ভরসা হয়ে উঠেছে এই বাহন। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই কোনো উপায় না পেয়ে অনেকেই যাতায়াত করছেন ভ্যানে। তবে অবাক করা বিষয় হলো- এক ভ্যান চালাচ্ছেন তিন জনে। এমন চিত্রের দেখা মিলেছে রাজধানীর খামারবাড়িতে।
গত সপ্তাহে রাজধানীর খামারবাড়িতে দেখা মেলে গুলিস্থানগামী এমন এক ভ্যানের, যেখানে যাত্রী নেওয়া হয়েছে ৭ জন। ৭ জন যাত্রী নিয়ে ভ্যান চালিয়ে নিয়ে যাওয়াটা কষ্টের ব্যাপার হলেও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন চালক মানিক। তারই সহযোগী হিসেবে রয়েছে আরও ২ জন, যারা ভ্যানের পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে সহযোগিতা করছেন চালককে। হাঁপিয়ে গেলে মাঝে মধ্যেই পরিবর্তন হচ্ছে চালক। চালক মানিকের সাথে কথা হয় ঢাকাটাইমসের। তিনি বলেন, আমার ভ্যানটি মালামাল পরিবহন করতাম। কিন্তু লকডাউনে মানুষ টানা শুরু করেছি। এতদিন একাই চালাইতাম। সরকার একদিনের জন্য লকডাউন উঠায় দেওয়ায় অনেক মানুষ বাড়ি থেকে আসছে। তাই আমার ভ্যানেও অনেক যাত্রী পাচ্ছি। এত মানুষ নিয়ে একা চালানো তো সম্ভব না তাই আমরা তিন জনে একসাথে ভাগেযোগে চালাচ্ছি। ২ জন পেছন থেকে ধাক্কা দেয় এবং একজন চালায়। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখীর মধ্যে চলমান লকডাউনের মধ্যেই খুলে দেওয়া হয়েছে গার্মেন্টসসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান। পোশাক কারখানা চালু হওয়ায় কর্মীদের আসার সুবিধার্থে একদিনের জন্য গণপরিবহন চালু করা হয়েছিল। আজ গণপরিবহন বন্ধ হলেও রাজধানীর সড়কগুলোতে কর্মজীবী মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় নানান উপায়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটছেন মানুষ। এরই মধ্যে সড়কে উপস্থিতিও বেড়েছে নিজস্ব পরিবহন, রিকশা ও ভ্যানেএদিকে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জুলাই মাসের শুরু থেকে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ দেয় সরকার। পরে ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু কেনাকাটা ও ঘরমুখো মানুষের স্বাভাবিক যাত্রা নিশ্চিত করতে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত গণপরিবহন চালুসহ বেশ কিছু শর্ত শিথিল করা হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে আবারো শুরু হয় ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। যা শেষ হবার কথা ছিল ৫ আগস্ট। তা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট করা হয়। কিন্তু এর মধ্যেই মালিকদের অনুরোধে থেকে খুলে দেওয়া হয় শিল্পকারখানা। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েন ঢাকার বাইরে থাকা শ্রমিকরা। চাকরি বাঁচাতে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে গত দু’দিন ঢাকায় ফেরেন লাখ লাখ শ্রমিক। অবশ্য দিন শেষে শ্রমিকদের সুবিধার্থে শনিবার রাত ৮টার পর থেকে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে রোববার বেলা ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন এবং লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। নির্ধারিত সময় শেষে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন অনেকেই। বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে বাধ্য হন ভ্যান রিকশা। অনেকে রওনা দেন পায়ে হেঁটেই।
এক ভ্যানের ৩ চালক!
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ