বরগুনা সংবাদদাতা: নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে বরগুনার একটি ট্রলারে ধরা পড়েছে প্রায় ১৭০ মণ ইলিশ। তবে ওই ট্রলারটিতে এত মাছ এক সঙ্গে বোঝাই করতে না পেরে ১৪০ মণ মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। পরে সাইজ অনুযায়ী ২২-২৭ হাজার টাকা মণ দরে মাছগুলো বিক্রি করেন জেলেরা।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে ইলিশবোঝাই ট্রলারটি পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পৌঁছায়। পরে স্থানীয় পাইকারদের মাধ্যমে মাছগুলো নিলামে প্রায় ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তবে অন্য ট্রলারটি এখনো ঘাটে এসে পৌঁছায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সাইফ ফিশিং কোম্পানির এফবি সাফাওয়ান-৩ নামের ট্রলারটি বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জেলে নিয়ে সাগরে যায়। একই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে জাল ফেলেন জেলেরা। রাতে জালের টান দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন বিপুল ইলিশ ধরা পড়েছে। পরে রাত ৮টা থেকে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল টানেন জেলেরা। এসময় ট্রলারটির ধারণ ক্ষমতার থেকে মাছ বেশি হওয়ায় একই কোম্পানির আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ প্রায় ৩০ মণ মাছ তুলে দেওয়া হয়।
মাছ পেয়ে খুশি ট্রলারের মাঝি রুবেল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনেক দিন পর এমন মাছ পেলাম। জাল টেনে তুলতেই দেখা যায় ট্রলার ভরে গেছে ইলিশে। দুই ট্রলার মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ উঠেছে।’
এ বিষয়ে সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম বলেন, ‘সাগরে খুব মাছ কম ধরা পড়ায় প্রতিনিয়তই আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ! আজ আমাদের একটি ট্রলারে ভালো মাছ ধরা পড়েছে। মাছের আকার অনুযায়ী ২৭ হাজার, ২২ হাজার ও ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সবমিলিয়ে ৪০ লাখ টাকায় ইলিশগুলো বিক্রি করা হয়। তবে মাছের সাইজ ছোট থাকায় আশানুরূপ দাম পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘নদী ও সাগরে ২২ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছেন। এটা খুশির খবর।’
প্রজনন শেষে ইলিশ এখন সমুদ্রে ফিরছে জানিয়ে মৎস্য গবেষক বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমে মিঠা পানিতে ডিম ছেড়ে ইলিশ আবার সমুদ্রের লোনা পানিতে ফিরে যায়। এছাড়া ইলিশ একসঙ্গে ঝাঁক বেঁধে চলাফেরা করে। সম্ভবত সেই ঝাঁকের ভেতরে জাল ফেলেছিলেন এই জেলেরা। এ কারণে একসঙ্গে এত মাছ পেয়েছেন তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘সমুদ্রে অবৈধ ট্রলিং বোট ও মাছ ধরায় নিষিদ্ধ জাল বন্ধ করলে আবারো সুদিন ফিরবে উপকূলীয় জেলেদের।’
প্রসঙ্গত, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি হওয়া মাছের মোট মূল্য থেকে ১.২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় করে সরকার।
এসি/আপ্র/০১/১১/২০২৫


















