ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

এক টাকা বাড়ানোরও যুক্তি নেই, বললেন জোনায়েদ সাকি

  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি-ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিইআরসি কর্তৃক শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির শুনানিতে হট্টগোলের হয়েছে। এই সময় শুনানিতে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী, ক্যাবের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা শুনানি বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করাতো দূরের কথা ১ টাকা বাড়ানোরও কোনো যুক্তি নেই।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিয়াম অডিটরিয়ামে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এরপর বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির পক্ষে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

দুপুর ১২ টায় শুরু হয় জেরা পর্ব। প্রথমেই জেরা করতে আসেন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, এই অযৌক্তিক প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া উচিত হয়নি। এইভাবে আমদানি করে শুধু জ্বালানি নয়, সব পণ্য আমদানি করে দেশটিকে আমদানি নির্ভর করে ফেলা হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ভয়ংকর গণবিরোধী। এই প্রস্তাবের ওপর কোনো গণশুনানি হতে পারে না। এটি বন্ধ করতে হবে। এ সময় ‘প্রহসনের শুনানি বন্ধ করো, করতে হবে, মানি না, মানব না।’ এই স্লোগান দিতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।

বক্তব্যের শেষে ৩ দফা দাবি জানিয়ে শামসুল আলম অবশিষ্ট পর্ব থেকে ওয়াকআউট করেন। তার বক্তব্যের পর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দিতে আসেন।

আর তখনেই কিছু শিক্ষার্থী ও শিল্প মালিকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। শিক্ষার্থীরা শুনানি বন্ধের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিইআরসি চেয়ারম্যান বারবার তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও হট্টগোল চলতে থাকে। এ সময় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আগামী রোববারের মধ্যে খারিজ করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দাবি না মানলে এ আবেদন রূপ নিতে পারে আন্দোলনে। কয়েক মিনিট এভাবে চলার পর নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট পূর্বে মধ্যাহ্ন বিরতির ঘোষণা দিয়ে হল রুম থেকে বের হয়ে যান চেয়ারম্যান।

দুপুর ২ টায় পুনরায় শুনানি শুরু করা হয়েছে। শিল্প কারখানার বয়লার ও শিল্প কারখানার জেনারেটরে (ক্যাপটিভ) সরবরাহ করা গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১.৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তার ওপর শুনানি গ্রহণ করা হচ্ছে।

গ্যাসের দাম এক টাকা বাড়ানোরও যুক্তি নেই: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করাতো দূরের কথা ১ টাকা বাড়ানোরও কোনো যুক্তি নেই।

শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত গণশুনানিতে একথা বলেন তিনি। এসময় সাকি বলেন, অর্থনীতিতে বিনিয়োগ ব্যয়বহুল হলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে না। দেশ বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। হঠাৎ করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিলে সেটা সুযোগ সংকুচিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় যে কোনো ধরনের দাম বৃদ্ধির শুনানি বন্ধ করেন। এটা যদি হয় আইএমএফের কন্ডিশন সেটাও জনগণের সামনে উন্মুক্ত করেন।

তিনি বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকলে প্রতিষ্ঠান কার্যকরী হয় না। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর আলোচনা হতো অনেক কিন্তু সিদ্ধান্ত আসতো ভিন্নভাবে মাধ্যমে। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর বিইআরসি আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন গ্যাস কূপ খনন করতে হবে। পাইপলাইনে গ্যাস আনতে হবে। গ্যাসের সিস্টেম লস মানে চুরি, আসল সিস্টেম লস তো অল্প। সরকারের কাছে দাবি জানাই, চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এনার্জি সেক্টরে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। দেশের এনার্জি সেক্টর নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একাধিক ডায়ালগ হতে পারে।

গণশুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, সদস্য (অর্থ, প্রশাসন ও আইন) মো. আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য (গ্যাস) মো. মিজানুর রহমান, সদস্য পেট্রোলিয়ম ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, সদস্য (বিদ্যুৎ) ব্রিগে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানিতে ব্যবসায়ী, শিল্প কারখানার মালিক, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ আরও অনেকে উপস্থিত আছেন।

এর আগে শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনসহ (পেট্রোবাংলা) দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গণশুনানির এই আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)।

এ বছরের শুরুতে পাইকারি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা। এরপর তিতাস গ্যাস কোম্পানিসহ সরকারি ছয়টি বিতরণ কোম্পানি খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করে। আবেদনে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা এবং ক্যাপটিভের দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে জানানো হয়, গ্যাসের দাম বাড়ানো না হলে এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে চলতি বছর সরকারকে বিশাল টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। দেশি গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে আসছে অর্ধেকের মতো। আর ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে জোগান দেওয়া হচ্ছে।

গণশুনানিতে পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির বর্তমান আমদানি মূল্য পড়ছে ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা। ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ যোগ করলে তা দাঁড়ায় ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা। এজন্য দামের পার্থক্য কমাতে গ্যাসের মূল্য বাড়াতে হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, দেশি গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ক্রমেই কমে যাওয়ায় শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে সর্বাধিক প্রভাব পড়েছে। চাহিদা মেটাতে দেশি গ্যাসের সঙ্গে ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামীতে এলএনজি আমদানির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।
পেট্রোবাংলার প্রস্তাব পাওয়ার পর বিইআরসির পক্ষ থেকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে প্রস্তাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো পেট্রোবাংলার নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রস্তাব জমা দেয়। বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি এখন এসব প্রস্তাব মূল্যায়ন করছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উত্তেজনা-হাতাহাতির মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ গঠিত

এক টাকা বাড়ানোরও যুক্তি নেই, বললেন জোনায়েদ সাকি

আপডেট সময় : ০৮:৫০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিইআরসি কর্তৃক শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির শুনানিতে হট্টগোলের হয়েছে। এই সময় শুনানিতে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী, ক্যাবের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা শুনানি বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
আর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করাতো দূরের কথা ১ টাকা বাড়ানোরও কোনো যুক্তি নেই।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিয়াম অডিটরিয়ামে শুনানি শুরু হয়। প্রথমে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এরপর বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির পক্ষে তাদের উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

দুপুর ১২ টায় শুরু হয় জেরা পর্ব। প্রথমেই জেরা করতে আসেন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, এই অযৌক্তিক প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া উচিত হয়নি। এইভাবে আমদানি করে শুধু জ্বালানি নয়, সব পণ্য আমদানি করে দেশটিকে আমদানি নির্ভর করে ফেলা হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ভয়ংকর গণবিরোধী। এই প্রস্তাবের ওপর কোনো গণশুনানি হতে পারে না। এটি বন্ধ করতে হবে। এ সময় ‘প্রহসনের শুনানি বন্ধ করো, করতে হবে, মানি না, মানব না।’ এই স্লোগান দিতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।

বক্তব্যের শেষে ৩ দফা দাবি জানিয়ে শামসুল আলম অবশিষ্ট পর্ব থেকে ওয়াকআউট করেন। তার বক্তব্যের পর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দিতে আসেন।

আর তখনেই কিছু শিক্ষার্থী ও শিল্প মালিকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। শিক্ষার্থীরা শুনানি বন্ধের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিইআরসি চেয়ারম্যান বারবার তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও হট্টগোল চলতে থাকে। এ সময় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আগামী রোববারের মধ্যে খারিজ করার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, দাবি না মানলে এ আবেদন রূপ নিতে পারে আন্দোলনে। কয়েক মিনিট এভাবে চলার পর নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট পূর্বে মধ্যাহ্ন বিরতির ঘোষণা দিয়ে হল রুম থেকে বের হয়ে যান চেয়ারম্যান।

দুপুর ২ টায় পুনরায় শুনানি শুরু করা হয়েছে। শিল্প কারখানার বয়লার ও শিল্প কারখানার জেনারেটরে (ক্যাপটিভ) সরবরাহ করা গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১.৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তার ওপর শুনানি গ্রহণ করা হচ্ছে।

গ্যাসের দাম এক টাকা বাড়ানোরও যুক্তি নেই: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দেশে এমনিতেই ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা খারাপ। গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করাতো দূরের কথা ১ টাকা বাড়ানোরও কোনো যুক্তি নেই।

শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত গণশুনানিতে একথা বলেন তিনি। এসময় সাকি বলেন, অর্থনীতিতে বিনিয়োগ ব্যয়বহুল হলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে না। দেশ বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। হঠাৎ করে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিলে সেটা সুযোগ সংকুচিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় যে কোনো ধরনের দাম বৃদ্ধির শুনানি বন্ধ করেন। এটা যদি হয় আইএমএফের কন্ডিশন সেটাও জনগণের সামনে উন্মুক্ত করেন।

তিনি বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা না থাকলে প্রতিষ্ঠান কার্যকরী হয় না। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর আলোচনা হতো অনেক কিন্তু সিদ্ধান্ত আসতো ভিন্নভাবে মাধ্যমে। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর বিইআরসি আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন গ্যাস কূপ খনন করতে হবে। পাইপলাইনে গ্যাস আনতে হবে। গ্যাসের সিস্টেম লস মানে চুরি, আসল সিস্টেম লস তো অল্প। সরকারের কাছে দাবি জানাই, চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এনার্জি সেক্টরে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। দেশের এনার্জি সেক্টর নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একাধিক ডায়ালগ হতে পারে।

গণশুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, সদস্য (অর্থ, প্রশাসন ও আইন) মো. আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য (গ্যাস) মো. মিজানুর রহমান, সদস্য পেট্রোলিয়ম ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, সদস্য (বিদ্যুৎ) ব্রিগে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

গণশুনানিতে ব্যবসায়ী, শিল্প কারখানার মালিক, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ আরও অনেকে উপস্থিত আছেন।

এর আগে শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনসহ (পেট্রোবাংলা) দেশের ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গণশুনানির এই আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)।

এ বছরের শুরুতে পাইকারি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা। এরপর তিতাস গ্যাস কোম্পানিসহ সরকারি ছয়টি বিতরণ কোম্পানি খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করে। আবেদনে শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা এবং ক্যাপটিভের দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে জানানো হয়, গ্যাসের দাম বাড়ানো না হলে এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে চলতি বছর সরকারকে বিশাল টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। দেশি গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে আসছে অর্ধেকের মতো। আর ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে জোগান দেওয়া হচ্ছে।

গণশুনানিতে পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতি ঘনমিটার এলএনজির বর্তমান আমদানি মূল্য পড়ছে ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা। ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য চার্জ যোগ করলে তা দাঁড়ায় ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা। এজন্য দামের পার্থক্য কমাতে গ্যাসের মূল্য বাড়াতে হবে।

প্রস্তাবে আরও বলা হয়, দেশি গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ক্রমেই কমে যাওয়ায় শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে সর্বাধিক প্রভাব পড়েছে। চাহিদা মেটাতে দেশি গ্যাসের সঙ্গে ২৫ শতাংশ এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামীতে এলএনজি আমদানির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।
পেট্রোবাংলার প্রস্তাব পাওয়ার পর বিইআরসির পক্ষ থেকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে প্রস্তাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো পেট্রোবাংলার নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রস্তাব জমা দেয়। বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি এখন এসব প্রস্তাব মূল্যায়ন করছে।