ঢাকা ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

এক চতুর্থাংশ কিশোরী যৌন সহিংসতার শিকার: ডব্লিউএইচও

  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : বিশ্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ কিশোরী যারা সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে, তারা সঙ্গীর শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতা সহ্য করেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, এই ধরনের সহিংসতা কিশোরীদের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। গবেষণায় কিশোরীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঠেকাতে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বের ১৫৪টি দেশ ও অঞ্চলের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী হাজার হাজার কিশোরীর ওপর জরিপের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া কিশোরীদের ২৪ শতাংশই অন্তত একবার সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। গত বছর এই সহিংসতার হার ছিল ১৬ শতাংশ। এক বছরে তা বেড়ে ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে। গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ডা. লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, অল্পবয়সী কিশোরীরা নিপীড়িত হচ্ছে এবং কারও সমর্থন পাচ্ছে না; এমন উদ্বেগের জায়গা থেকে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত অবাক হয়েছি যে, কিশোরী মেয়েদের বিশাল একটি অংশ তাদের ২০তম জন্মদিনের আগেই সহিংসতার শিকার হচ্ছে। সার্ডিনহা বলেন, আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, আমরা তার তুলনায় পিছিয়ে আছি। ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিচালিত সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, তখন থেকেই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং এখনও আমরা সেসব যাচাই-বাছাই করে দেখছি। এতে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হারে সামান্য পতন হয়েছে। সমীক্ষায় গণনা করা সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে লাথি মারা অথবা মারধরের পাশাপাশি ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মতো অযাচিত যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করার মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশ ও অঞ্চলের ভিত্তিতে ভাগ করা তথ্যে দেখা যায়, অঞ্চল ভেদে সহিংসতা ও নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোও এতে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত এবং অসম উত্তরাধিকার আইন রয়েছে, সেখানে সহিংসতার উচ্চ মাত্রা দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হার সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। এরপরই দ্বিতীয় স্থানে আছে ওশেনিয়া অঞ্চল। আফ্রিকার মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে পাপুয়া নিউগিনিতে ৪৯ শতাংশ এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৪২ শতাংশ কিশোরী সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। তবে এই হার সর্বনিম্ন ছিল ইউরোপে; যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ কিশোরী তাদের সঙ্গীর কাছে সহিংসতার শিকার হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গবেষণা বিভাগের পরিচালক ডা. প্যাসকেল অ্যালোটি বলেন, এত অল্প বয়সে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার ঘটনা তাদের গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটাকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে আরও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার। সূত্র: রয়টার্স।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক চতুর্থাংশ কিশোরী যৌন সহিংসতার শিকার: ডব্লিউএইচও

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

বিদেশের খবর ডেস্ক : বিশ্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ কিশোরী যারা সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে, তারা সঙ্গীর শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতা সহ্য করেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, এই ধরনের সহিংসতা কিশোরীদের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। গবেষণায় কিশোরীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঠেকাতে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডব্লিউএইচওর এই গবেষণা প্রতিবেদন বিশ্বের ১৫৪টি দেশ ও অঞ্চলের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী হাজার হাজার কিশোরীর ওপর জরিপের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া কিশোরীদের ২৪ শতাংশই অন্তত একবার সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। গত বছর এই সহিংসতার হার ছিল ১৬ শতাংশ। এক বছরে তা বেড়ে ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে। গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ডা. লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, অল্পবয়সী কিশোরীরা নিপীড়িত হচ্ছে এবং কারও সমর্থন পাচ্ছে না; এমন উদ্বেগের জায়গা থেকে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত অবাক হয়েছি যে, কিশোরী মেয়েদের বিশাল একটি অংশ তাদের ২০তম জন্মদিনের আগেই সহিংসতার শিকার হচ্ছে। সার্ডিনহা বলেন, আমাদের যেখানে থাকার কথা ছিল, আমরা তার তুলনায় পিছিয়ে আছি। ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে পরিচালিত সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। লিনম্যারি সার্ডিনহা বলেন, তখন থেকেই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং এখনও আমরা সেসব যাচাই-বাছাই করে দেখছি। এতে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হারে সামান্য পতন হয়েছে। সমীক্ষায় গণনা করা সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে লাথি মারা অথবা মারধরের পাশাপাশি ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মতো অযাচিত যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করার মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দেশ ও অঞ্চলের ভিত্তিতে ভাগ করা তথ্যে দেখা যায়, অঞ্চল ভেদে সহিংসতা ও নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোও এতে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত এবং অসম উত্তরাধিকার আইন রয়েছে, সেখানে সহিংসতার উচ্চ মাত্রা দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার হার সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। এরপরই দ্বিতীয় স্থানে আছে ওশেনিয়া অঞ্চল। আফ্রিকার মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে পাপুয়া নিউগিনিতে ৪৯ শতাংশ এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ৪২ শতাংশ কিশোরী সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সময় সহিংসতার শিকার হয়েছে। তবে এই হার সর্বনিম্ন ছিল ইউরোপে; যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ কিশোরী তাদের সঙ্গীর কাছে সহিংসতার শিকার হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং গবেষণা বিভাগের পরিচালক ডা. প্যাসকেল অ্যালোটি বলেন, এত অল্প বয়সে কিশোরীদের সহিংসতার শিকার হওয়ার ঘটনা তাদের গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটাকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে আরও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার। সূত্র: রয়টার্স।