চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দুই বন্দি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে এক ঘণ্টার ব্যবধানে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
তাদের মধ্যে ৪৫ বছর বয়সী রফিক উদ্দিনের বাড়ি চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নে। আর ৪০ বছর বয়সী বাবুল মিয়া ছিলেন হাছনদ-ীর বাসিন্দা। রফিক মারামারি এবং বাবুল মাদক মামলায় কারাগারে ছিলেন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, রফিক ও বাবুল দুজনই চন্দনাইশ থানার আলাদা দুটি মামলায় কারাগারে ছিলেন। তাদের মধ্যে রফিক গত ২৭ মার্চ এবং বাবুল গত বছরের ১৮ নভেম্বর কারাগারে আসেন।
গতকাল সোমবার ভোরে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তারা মারা যান। জেলার তারিকুল বলেন, “বাবুল রোজা রাখার জন্য সেহেরি খেয়েছিল। বিছানায় যাওয়ার পর বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান। আর রফিক অসুস্থতা অনুভব করায় তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।”
এদিকে রফিকের পরিবারের দাবি, গত ২৬ মার্চ তার ওপর হামলা করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তার মামলা না নিয়ে উল্টো তাকে আসামি করে কারাগারে পাঠায়। রফিকের বড় ভাই জামাল উদ্দিন বলেন, ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চিড়িংঘাটা এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন রফিক। গত ২৬ মার্চ সকালে তাদের চাচীর জানাজা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় ‘ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে’ রফিকের ওপর হামলা হয়।
“স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিকালে রফিক থানায় মামলা করতে যায়। কিন্তু পুলিশ তার মামলা না নিয়ে, অপর পক্ষের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। ওই রাতে থানা হাজতে রাখার পর পরদিন কারাগারে পাঠানো হয়।”
জামালের অভিযোগ, হামলায় আহত তার ভাইয়ের চিকিৎসা না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে ‘আরও বেশি অসুস্থ হয়ে’ রফিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দনাইশ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রফিকের মামলাও নেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছিল। অপর পক্ষের মামলায় তিনি আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, রফিকের বাড়ি ও তার বাড়ি একই ওয়ার্ডে।
“আমাদের এক চাচী মারা যাওয়ায় গত ২৬ মার্চ আমি জানাজায় গিয়েছিলাম। স্বাধীনতা দিবসে ফুল দেওয়ার জন্য জানাজা শেষে দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদে চলে যাই। সেখানে গিয়ে শুনেছি দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আমি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই, পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। “ঝামেলা শেষে দুই পক্ষই আমার কাছে এসেছিল। তাদের মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তারা উভয়েই মামলা করেছে।” চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বলেন, “রফিক হামলায় আহত হয়েছিলেন কিনা সেটা আমাদের জানা নেই। দুজনেরই ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।”
এক ঘণ্টার ব্যবধানে চট্টগ্রাম কারাগারের দুই বন্দির মৃত্যু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ