বিনোদন ডেস্ক: ‘একুশে পদক-২০২৪’-এর জন্য মনোনীতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, ভাষা ও সাহিত্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২১ বিশিষ্ট নাগরিককে এই পদক দেওয়া হবে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আইরীন ফারজানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এবার লক্ষণীয় বিষয় হলো, ২১ জনের এই তালিকার মধ্যে শুধু শিল্পকলা থেকেই এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাচ্ছেন ১২ জন শিল্পী। এর মধ্যে রয়েছেন সংগীতের জন্য জালাল উদ্দীন খাঁ (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণী ঘোষ, বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর), এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর) ও শুভ্র দেব। নৃত্যকলায় শিবলী মহম্মদ। অভিনয়ে ডলি জহুর ও এমএ আলমগীর। আবৃত্তিতে খান মো. মুস্তফা ওয়ালীদ (শিমুল মুস্তাফা) ও রূপা চক্রবর্তী। চিত্রকলায় শাহজাহান আহমেদ বিকাশ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও আর্কাইভিংয়ের জন্য কাওসার চৌধুরী।
এর মধ্যে এমন সুখবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অভিনেত্রী ডলি জহুর মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘আমি নিয়মিত চেকআপের জন্য এখন হাসপাতালে এসেছি। খবরটা পেয়ে ভালো লাগছে। কয়েক দিন আগে অনেকেই বলাবলি করছিল, আমার নাকি একুশে পদক পাওয়া উচিত। আমি তখন তাদের বলেছি, ‘এসব পুরস্কারের প্রতি আমার কোনও লোভ-লালসা নেই’। তবে আজ সত্যি সত্যি পুরস্কারের কথা শুনে অবাক হয়েছি।’’ থামলেন না আবেগাপ্লুত কিংবদন্তি। বললেন, ‘তবে আমি সবসময়ই বলতাম এবং আজও বলছি, আমার চেয়ে দেশে আরও অনেক গুণী মানুষ আছেন। তাদেরও এই সম্মাননা পাওয়া উচিত।’ এদিকে সংগীতের জন্য মনোনীত শুভ্র দেবের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে তুলে ধরেন নিজের বর্ণাঢ্য সংগীত ক্যারিয়ারের কথা। বিশেষ করে প্রেমের গানের বাইরেও স্পোর্টস এবং সামাজিক কর্মকা-ে তার গানের রেশ ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি। তিনি মনে করেন, তারই স্বীকৃতি মিলেছে এই একুশে পদক প্রাপ্তির মাধ্যমে। শুভ্র দেব বলেন, ‘অ্যাকচুয়ালি আমি তো শুধু গানের অ্যালবামই করিনি, প্রচুর কাজ করেছি। ক্রিকেটের থিম সং থেকে শুরু করে দেশের সর্বাধিক স্পোর্টস রিলেটেড থিম সং আমার করা। এর বাইরে সামাজিক অনেক ইভেন্ট বা প্রজেক্টেরও গান করেছি। আজ সন্ধ্যায় একুশে পদক প্রাপ্তির চূড়ান্ত খবর পেয়ে ভালো লেগেছে। এটা তো আসলে বড় একটা অর্জন। আমি আরও আনন্দিত, আমার সঙ্গে আমাদেরই সিলেটের বিদিত লাল সেন মরণোত্তর হলেও পুরস্কারটি পেয়েছেন। এটা ওনার প্রাপ্য ছিল।’ এদিকে আবৃত্তিতে এই সম্মাননা পাচ্ছেন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাচিকশিল্পী শিমুল মুস্তাফা। প্রথমত তিনি খুব করেই বললেন, পদক হাতে পাওয়ার আগে তিনি এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না। কারণ, মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বারণ করা আছে। তবে বাংলা ট্রিবিউনকে শুধু এটুকু বললেন, ‘দেখুন এটা তো আমার জন্য সবচেয়ে আনন্দের ও বড় প্রাপ্তি। সেটা যে কারোর জন্যই সম্ভবত। আমিও তার বাইরে নই। খবরটি পেয়ে খুশি লাগছে। এই প্রাপ্তিতে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।’ ‘একুশে পদক-২০২৪’-এর জন্য মনোনীত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন ভাষা আন্দোলনে মৌ. আশরাফুদ্দীন আহমদ (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী মিয়া (মরণোত্তর)। সমাজসেবায় মো. জিয়াউল হক ও আলহাজ রফিক আহামদ। ভাষা ও সাহিত্যে মুহাম্মদ সামাদ, লুৎফর রহমান রিটন, মিনার মনসুর ও রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ (মরণোত্তর)। আর শিক্ষায় অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু একুশে পদক পেতে যাচ্ছেন। পদকপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি করে পদক, দুই লাখ টাকা, একটি সম্মাননাপত্র ও একটি রেপ্লিকা দেওয়া হবে।
একুশে পদক ২০২৪: ২১ জনের মধ্যে ১২ জনই শিল্পকলায়
জনপ্রিয় সংবাদ