ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
জামায়াতে যোগ দিয়ে মেজর আখতারুজ্জামান

একাত্তরে জামায়াতের বিরুদ্ধে তো যুদ্ধ করিনি, তাহলে ঝগড়াঝাটি কেন?

  • আপডেট সময় : ০৯:১৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

শনিবার জামায়াতে যোগ দিয়েই দলটিকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে যোগ দিয়েই দলটিকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান। তিনি একটি সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, “বিএনপির কথার ঠিক নেই। উনি (তারেক রহমান) বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে’। কথাটা সঠিক নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে, জামায়াতের বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেনি।

আপনি একের পর এক মিথ্যা বলে যাবেন। এর প্রতিবাদে আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছি। কারণ জামায়াত তো দেশদ্রোহী কোনো দল নয়; জামায়াতে ইসলামী একটি দেশপ্রেমিক দল। জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে এবং তাদের যে গঠনতন্ত্র আছে, সেখানেও এটা স্পষ্টভাবে লেখা আছে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতের আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন। এরপর যোগাযোগ করা হলে আখতারুজ্জামান সংবাদসংস্থাটিকে বলেন, ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গী না করার জন্য আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ওই সময়ে আমার কথা শোনেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে একাট্ট হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও জামায়াতে ইসলামীর সাথে তারা আবার জোটবদ্ধ হয়েছিল এবং সরকারও গঠন করেছিল।

গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের রোষানলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে জামায়াত। তাদের নেতাদেরকে ফাঁসিতেও ঝুলিয়েছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। বিএনপি যেমন নির্যাতিত হয়েছে, নিপীড়ন ভোগ করেছে, মাইর খাইছে, মামলা-মোকদ্দমা খাইছে; অনুরূপভাবে জামায়াতেও খাইছে, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হয়েছে।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ সময়ে যুক্ত আখতারুজ্জামান দুই দফায় ধানের শীষ প্রতীকে কিশোরগঞ্জ-২ আসন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তা স্থানীয়ভাবে মেজর রঞ্জন নামে পরিচিত।

বিভিন্ন সময়ে টেলিভিশন টক-শোতে দলের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করার কারণে তাকে কয়েক দফা বহিষ্কার করে বিএনপি। পরে অবশ্য ধানের শীষ প্রতীকেই সাংসদ হয়েছেন আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে এখন যেখানে ফ্যাসিস্ট বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার কথা, ঐক্যের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা; সেখানে দেখা গেল-বিভক্তির রাজনীতির সূচনা করল বিএনপি।

বিএনপি থেকে সদ্যই জামায়াতে যোগ দেওয়া আখতারুজ্জামান বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে, ভালো কথা। আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আমরা তো একাত্তর সালে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, জামায়াতের সাথে তো নয়। তা হলে এখন এসব নিয়ে কেন ঝগড়াঝাঁটি। আমার প্রশ্ন, আপনি (বিএনপি) কাদের স্বার্থে এখন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন?

বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির নেতারা এতো পাগল হয়ে যান কেন, আমি তা বুঝতে পারি না।

আখতারুজ্জামান ১৯৭১ সালে তিন নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহর অধীনে যুদ্ধ করেন।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/১৩/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত

জামায়াতে যোগ দিয়ে মেজর আখতারুজ্জামান

একাত্তরে জামায়াতের বিরুদ্ধে তো যুদ্ধ করিনি, তাহলে ঝগড়াঝাটি কেন?

আপডেট সময় : ০৯:১৪:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: জামায়াতে যোগ দিয়েই দলটিকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করলেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান। তিনি একটি সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, “বিএনপির কথার ঠিক নেই। উনি (তারেক রহমান) বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে’। কথাটা সঠিক নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে, জামায়াতের বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেনি।

আপনি একের পর এক মিথ্যা বলে যাবেন। এর প্রতিবাদে আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছি। কারণ জামায়াত তো দেশদ্রোহী কোনো দল নয়; জামায়াতে ইসলামী একটি দেশপ্রেমিক দল। জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে এবং তাদের যে গঠনতন্ত্র আছে, সেখানেও এটা স্পষ্টভাবে লেখা আছে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতের আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন। এরপর যোগাযোগ করা হলে আখতারুজ্জামান সংবাদসংস্থাটিকে বলেন, ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গী না করার জন্য আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ওই সময়ে আমার কথা শোনেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সাথে একাট্ট হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও জামায়াতে ইসলামীর সাথে তারা আবার জোটবদ্ধ হয়েছিল এবং সরকারও গঠন করেছিল।

গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের রোষানলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে জামায়াত। তাদের নেতাদেরকে ফাঁসিতেও ঝুলিয়েছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। বিএনপি যেমন নির্যাতিত হয়েছে, নিপীড়ন ভোগ করেছে, মাইর খাইছে, মামলা-মোকদ্দমা খাইছে; অনুরূপভাবে জামায়াতেও খাইছে, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হয়েছে।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ সময়ে যুক্ত আখতারুজ্জামান দুই দফায় ধানের শীষ প্রতীকে কিশোরগঞ্জ-২ আসন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তা স্থানীয়ভাবে মেজর রঞ্জন নামে পরিচিত।

বিভিন্ন সময়ে টেলিভিশন টক-শোতে দলের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করার কারণে তাকে কয়েক দফা বহিষ্কার করে বিএনপি। পরে অবশ্য ধানের শীষ প্রতীকেই সাংসদ হয়েছেন আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে এখন যেখানে ফ্যাসিস্ট বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার কথা, ঐক্যের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা; সেখানে দেখা গেল-বিভক্তির রাজনীতির সূচনা করল বিএনপি।

বিএনপি থেকে সদ্যই জামায়াতে যোগ দেওয়া আখতারুজ্জামান বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে, ভালো কথা। আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আমরা তো একাত্তর সালে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, জামায়াতের সাথে তো নয়। তা হলে এখন এসব নিয়ে কেন ঝগড়াঝাঁটি। আমার প্রশ্ন, আপনি (বিএনপি) কাদের স্বার্থে এখন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন?

বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির নেতারা এতো পাগল হয়ে যান কেন, আমি তা বুঝতে পারি না।

আখতারুজ্জামান ১৯৭১ সালে তিন নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহর অধীনে যুদ্ধ করেন।

সানা/কেএমএএ/আপ্র/১৩/১২/২০২৫