ঢাকা ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

একদিনে সর্বোচ্চ ৮৫৭ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে

  • আপডেট সময় : ০২:৫০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জন নতুন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুইজন। গতকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জন নতুন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৫২৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশে মোট ৩০০৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ১৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৯৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ২৬ হাজার ৩৮ জন। ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা মোট ১৮ হাজার ৯৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট সাত হাজার ৬৮ জন। একই সময় দেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা মোট ২২ হাজার ৯৩৮ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা মোট ১৬ হাজার ৯০২ জন এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ৩৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৯৬ জন।
গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ হাজার ২৬৫ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১০৫ জন।
এদিকে দেশে প্রতিনিয়তই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর কোনো হাসপাতালেই শয্যা ফাঁকা নেই, তবুও প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে সিট না থাকলেও রোগীরা আসছে, কিন্তু আমরা তো তাদের ফেরত পাঠাতে পারি না। মেঝেতে হলেও তাদের জায়গা এবং চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
গতকাল সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক অবহিতকরণ ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সচিব বলেন, আজকের সভায় আমরা হাসপাতালগুলোতে আলাদা ডেঙ্গু ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যাপ্ত ফ্লুইড সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। রোগী যদি মশারি না নিয়ে আসে, তাহলে হাসপাতাল থেকে ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনগুলোকে বলেছি, দ্রুত হটস্পটগুলোতে অভিযানের ব্যবস্থা করেন। শুধু অভিযান করলেই হবে না, মিডিয়ার ফোকাসে আনেন। সাধারণ মানুষসহ সবাইকে পার্টিসিপেট করার। ময়লাগুলো দ্রুত পয়ঃনিষ্কাশনে ব্যবস্থা নিন। আজকের ময়লা যেন আগামি কালের অপেক্ষায় না থাকে। ময়লা ম্যানেজমেন্টে অনেক ঝামেলা আছে, তারপরও এটাকে আপনারা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। ডেঙ্গু রোগী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পরই বিপদ শুরু হয়। তখনই প্লাটিলেট নামা শুরু করে। ওই সময়টাতে রোগীরাও বুঝতে পারে না। তারা মনে করে সুস্থ হয়ে গেছে, এমনকি বিছানা থেকেও উঠে যায়। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ডেঙ্গু রোগীর ব্রিডিং শুরু হয়ে গেলে তখন ডাক্তারও কিছু করতে পারে না। ১০-১২ হাজারে প্লাটিলেট চলে এলেই দাতের গোড়া থেকেসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্রিডিং শুরু হয়। সুতরাং আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সচেতনতা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে আমরা অভিযান পরিচালনা করে ও কিছু করতে পারব না। মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আশেপাশের জায়গাগুলো পরিস্কার রাখতে হবে। ডাবের পানি ডেঙ্গুতে খুবই জরুরি, কিন্তু ডাবের খোসা আমাদের জন্য সর্বনাশের কারণ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

একদিনে সর্বোচ্চ ৮৫৭ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে

আপডেট সময় : ০২:৫০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জন নতুন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুইজন। গতকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জন নতুন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৫২৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশে মোট ৩০০৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ১৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৯৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ বছর ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ২৬ হাজার ৩৮ জন। ঢাকায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা মোট ১৮ হাজার ৯৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট সাত হাজার ৬৮ জন। একই সময় দেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা মোট ২২ হাজার ৯৩৮ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা মোট ১৬ হাজার ৯০২ জন এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ৩৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৯৬ জন।
গত বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ হাজার ২৬৫ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১০৫ জন।
এদিকে দেশে প্রতিনিয়তই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর কোনো হাসপাতালেই শয্যা ফাঁকা নেই, তবুও প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে সিট না থাকলেও রোগীরা আসছে, কিন্তু আমরা তো তাদের ফেরত পাঠাতে পারি না। মেঝেতে হলেও তাদের জায়গা এবং চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি।
গতকাল সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক অবহিতকরণ ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সচিব বলেন, আজকের সভায় আমরা হাসপাতালগুলোতে আলাদা ডেঙ্গু ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পর্যাপ্ত ফ্লুইড সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। রোগী যদি মশারি না নিয়ে আসে, তাহলে হাসপাতাল থেকে ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনগুলোকে বলেছি, দ্রুত হটস্পটগুলোতে অভিযানের ব্যবস্থা করেন। শুধু অভিযান করলেই হবে না, মিডিয়ার ফোকাসে আনেন। সাধারণ মানুষসহ সবাইকে পার্টিসিপেট করার। ময়লাগুলো দ্রুত পয়ঃনিষ্কাশনে ব্যবস্থা নিন। আজকের ময়লা যেন আগামি কালের অপেক্ষায় না থাকে। ময়লা ম্যানেজমেন্টে অনেক ঝামেলা আছে, তারপরও এটাকে আপনারা গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। ডেঙ্গু রোগী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পরই বিপদ শুরু হয়। তখনই প্লাটিলেট নামা শুরু করে। ওই সময়টাতে রোগীরাও বুঝতে পারে না। তারা মনে করে সুস্থ হয়ে গেছে, এমনকি বিছানা থেকেও উঠে যায়। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ডেঙ্গু রোগীর ব্রিডিং শুরু হয়ে গেলে তখন ডাক্তারও কিছু করতে পারে না। ১০-১২ হাজারে প্লাটিলেট চলে এলেই দাতের গোড়া থেকেসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্রিডিং শুরু হয়। সুতরাং আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সচেতনতা প্রসঙ্গে সচিব বলেন, সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে আমরা অভিযান পরিচালনা করে ও কিছু করতে পারব না। মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আশেপাশের জায়গাগুলো পরিস্কার রাখতে হবে। ডাবের পানি ডেঙ্গুতে খুবই জরুরি, কিন্তু ডাবের খোসা আমাদের জন্য সর্বনাশের কারণ।