ঢাকা ০৪:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

একঝাঁক তরুণে স্বপ্ন দেখছেন ব্রাজিল কোচ

  • আপডেট সময় : ১০:২৩:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : কুঁড়িগুলো শতদলে ফুটছে। মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে চারদিকে। নতুন একটা প্রজন্মের এমন তেঁড়েফুঁড়ে উঠে আসা দেখে শিহরিত ব্রাজিল কোচ তিতে। কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে তরুণ-যুবাদের আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে সওয়ার হয়ে তিনিও দেখতে শুরু করেছেন দেশকে ষষ্ঠ শিরোপা জেতানোর স্বপ্ন। ব্রাজিলের নতুন প্রজন্মের মেধাবীদের মধ্যে আছেন ভিনিসিউস জুনিয়র ও রদ্রিগো, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুজনই উপহার দিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন ফুটবল। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া রাফিনিয়া, টটেনহ্যাম হটস্পারের স্ট্রাইকার রিশার্লিসন, নিউ ক্যাসল ইউনাইটেডের প্রতিভাবান মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারেস, আয়াক্স আমস্টারডামের বিদুৎগতির উইঙ্গার আন্তোনি এবং আতলেতিকো মাদ্রিদের ক্লান্তিহীন ফরোয়ার্ড মাথেউস কুনইয়া -এরাও এই নতুনের আবাহনের সারথী। এদের বয়স ২৫ কিংবা তার একটু কম এবং এরা সবাই বিশ্বের শীর্ষ মানের খেলোয়াড়দের কাতারে। তিতের বিশ্বাস, এই নতুনদের উপস্থিতি, দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার মানসিকতা ও সামর্থ্য নেইমারের ওপর চাপ কমাবে। ক্যারিয়ার জুড়ে নেইমার যে ভার বয়ে চলেছেন একা, তা থেকে এবার ‘মুক্তি’ মিলবে পিএসজির ৩০ বছর বয়সী তারকা ফরোয়ার্ডের। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিতে বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে শিষ্যের সঙ্গে তার কথাও হয়েছে।
“আমার বিশ্বাস, এই তরুণদের আগমণ মাঠে ও মাঠের বাইরে নেইমারের জন্য ভালো হবে।” “একদিন নেইমার আমার দিকে চেয়ে বলল, কোচ এই ছেলেগুলো যারা আসছে…এদেরকে একসঙ্গে মাঠে নামানোটা সত্যিই কী মধুর মাথাব্যথাই না হবে।” আগামী নভেম্বরে কাতারে শুরু হবে বিশ্বকাপ। প্রতিটি দল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। তিতেও আঁটছেন পরিকল্পনা। “হাতে দারুণ সম্ভাবনাময় কৌশলী খেলোয়াড় থাকলে দলের ভার ভাগাভাগি করা যায় এবং প্রতিপক্ষের মনোযোগও পাওয়া যায়। এখন দেখতে হবে, প্রতিপক্ষরা তাদের রক্ষণের কোথায় মনোযোগ দেয়।” বিশ্বকাপে এবার দলগুলো নিতে পারবে ২৬ জন করে খেলোয়াড়। ম্যাচে বদলি নামাতে পারবে পাঁচ জন করে। তাতে সবসময় হাতে সতেজ বিকল্প থাকবে। তিতে তরুণদের সামনে খেলাতে চান এবং নেইমারকে আরও কার্যকরী ভূমিকায়। “নেইমার আরও সৃষ্টিশীল হয়েছে, পয়েন্ট গার্ড (কড়া পাহারায় থেকে প্রতিপক্ষের তান কেঁটে দেওয়া), আক্রমণ তৈরি এবং গোল করায় সে অনেক উন্নতি করেছে, কিন্তু…তার ভূমিকা তির এবং ধনুকের মতো, আক্রমণ তৈরি করা এবং ফিনিশ করা।” “ফুটবল এখন গতিময় খেলা এবং আমরা অনেক প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হব, যারা পাঁচ ডিফেন্ডার দিয়ে গভীর রক্ষণভাগ নিয়ে খেলবে। প্রায়ই নেইমার দ্বৈত ভূমিকায় খেলে। এখন যদি সে সেটা করে, অন্য খেলোয়াড়দের খেলার জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়, তাহলে সেটা দলের জন্য নির্ণায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এ মুহূর্তে আমরা ভালো একটা অবস্থানে আছি।” ২০১৮ বিশ্বকাপে ভালো দল নিয়েও শেষটা ভালো হয়নি ব্রাজিলের। কোয়ার্টার-ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে হৃদয় ভাঙে তাদের। সেবার তিতের কোচিংয়েই খেলেছিল ব্রাজিল। এবারও খেলবে। তেলে সান্তানার (১৯৮২ ও ১৯৮৬) পর প্রথম কোচ হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের দায়িত্বে থাকবেন তিতে।
মাঝের এই পথচলায় তিতের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অনেক। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি তার নিজের তো বটেই, তার সহকারীদের সামনেও নিশ্চিতভাবে অনেক ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তিতে নিজেও মনে করেন কোচ হিসেবে আগের চেয়ে তিনি এখন ভালো। বিশ্বমঞ্চে ভালো করতে মানসিক পরীক্ষায় পাস করাটাও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন ৬১ বছর বয়সী এই কোচ। “পারফরম্যান্সই আসল। এটা মৌলিক বিষয় এবং আমরা সেটা নিয়মিতভাবে ভালোই করি। কিন্তু বিশ্বকাপে কঠিনতম একটা দিক হচ্ছে, মানসিক। বিশ্বকাপে মানসিক দিক বা এর চাপ অনেক, অবিশ্বাস্য রকমের।” রাশিয়ার মতো কাতারেও একই চাপ থাকবে বলে মনে করেন তিতে। কিন্তু এবার তাকে আর সাহসী করে তুলছে তরুণ তুর্কিরা, তাদের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার দৃঢ় মানসিকতা। “অভিজ্ঞতা হচ্ছে ব্যবহারিক বিষয়। এটাকে ঠিকঠাক বুঝতে হলে এই তত্ত্বের মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে। ব্রাজিলের যে লেগ্যাসি, তার কিছুটা আমরা বহন করি।” “এই ছেলেগুলো ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-২০ দলে দীর্ঘদিন কাজ করেছে। টোকিও অলিম্পিকসে সোনা জিতেছে। তারা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মানসিকতার এবং তাদের চিন্তা-ভাবনাও সঠিক পথে আছে।” ইউরোপের বড় দলগুলোতে আলো ছড়ানো এই তরুণরা ব্রাজিলের জার্সির ভার কতটা, তা জানে বলেই বিশ্বাস তিতের। বড় স্বপ্নের জাল তিনি বুনছেনও সে কারণে। “অভিজাত ক্লাবগুলোতে তাদের উপস্থিতি অনেক বেশি এবং এ কারণে স্বাভাবিকভাবে ব্রাজিলের জার্সিতে খেলার ওজনটা তারা বোঝে। চাপ আছে, কিন্তু তারাও তা জয়ের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বার্ন ইউনিটে ৩৩ জন ভর্তি, ৩ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন

একঝাঁক তরুণে স্বপ্ন দেখছেন ব্রাজিল কোচ

আপডেট সময় : ১০:২৩:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : কুঁড়িগুলো শতদলে ফুটছে। মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে চারদিকে। নতুন একটা প্রজন্মের এমন তেঁড়েফুঁড়ে উঠে আসা দেখে শিহরিত ব্রাজিল কোচ তিতে। কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে তরুণ-যুবাদের আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে সওয়ার হয়ে তিনিও দেখতে শুরু করেছেন দেশকে ষষ্ঠ শিরোপা জেতানোর স্বপ্ন। ব্রাজিলের নতুন প্রজন্মের মেধাবীদের মধ্যে আছেন ভিনিসিউস জুনিয়র ও রদ্রিগো, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে গত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুজনই উপহার দিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন ফুটবল। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া রাফিনিয়া, টটেনহ্যাম হটস্পারের স্ট্রাইকার রিশার্লিসন, নিউ ক্যাসল ইউনাইটেডের প্রতিভাবান মিডফিল্ডার ব্রুনো গুইমারেস, আয়াক্স আমস্টারডামের বিদুৎগতির উইঙ্গার আন্তোনি এবং আতলেতিকো মাদ্রিদের ক্লান্তিহীন ফরোয়ার্ড মাথেউস কুনইয়া -এরাও এই নতুনের আবাহনের সারথী। এদের বয়স ২৫ কিংবা তার একটু কম এবং এরা সবাই বিশ্বের শীর্ষ মানের খেলোয়াড়দের কাতারে। তিতের বিশ্বাস, এই নতুনদের উপস্থিতি, দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার মানসিকতা ও সামর্থ্য নেইমারের ওপর চাপ কমাবে। ক্যারিয়ার জুড়ে নেইমার যে ভার বয়ে চলেছেন একা, তা থেকে এবার ‘মুক্তি’ মিলবে পিএসজির ৩০ বছর বয়সী তারকা ফরোয়ার্ডের। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিতে বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে শিষ্যের সঙ্গে তার কথাও হয়েছে।
“আমার বিশ্বাস, এই তরুণদের আগমণ মাঠে ও মাঠের বাইরে নেইমারের জন্য ভালো হবে।” “একদিন নেইমার আমার দিকে চেয়ে বলল, কোচ এই ছেলেগুলো যারা আসছে…এদেরকে একসঙ্গে মাঠে নামানোটা সত্যিই কী মধুর মাথাব্যথাই না হবে।” আগামী নভেম্বরে কাতারে শুরু হবে বিশ্বকাপ। প্রতিটি দল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। তিতেও আঁটছেন পরিকল্পনা। “হাতে দারুণ সম্ভাবনাময় কৌশলী খেলোয়াড় থাকলে দলের ভার ভাগাভাগি করা যায় এবং প্রতিপক্ষের মনোযোগও পাওয়া যায়। এখন দেখতে হবে, প্রতিপক্ষরা তাদের রক্ষণের কোথায় মনোযোগ দেয়।” বিশ্বকাপে এবার দলগুলো নিতে পারবে ২৬ জন করে খেলোয়াড়। ম্যাচে বদলি নামাতে পারবে পাঁচ জন করে। তাতে সবসময় হাতে সতেজ বিকল্প থাকবে। তিতে তরুণদের সামনে খেলাতে চান এবং নেইমারকে আরও কার্যকরী ভূমিকায়। “নেইমার আরও সৃষ্টিশীল হয়েছে, পয়েন্ট গার্ড (কড়া পাহারায় থেকে প্রতিপক্ষের তান কেঁটে দেওয়া), আক্রমণ তৈরি এবং গোল করায় সে অনেক উন্নতি করেছে, কিন্তু…তার ভূমিকা তির এবং ধনুকের মতো, আক্রমণ তৈরি করা এবং ফিনিশ করা।” “ফুটবল এখন গতিময় খেলা এবং আমরা অনেক প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হব, যারা পাঁচ ডিফেন্ডার দিয়ে গভীর রক্ষণভাগ নিয়ে খেলবে। প্রায়ই নেইমার দ্বৈত ভূমিকায় খেলে। এখন যদি সে সেটা করে, অন্য খেলোয়াড়দের খেলার জন্য জায়গা তৈরি করে দেয়, তাহলে সেটা দলের জন্য নির্ণায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এ মুহূর্তে আমরা ভালো একটা অবস্থানে আছি।” ২০১৮ বিশ্বকাপে ভালো দল নিয়েও শেষটা ভালো হয়নি ব্রাজিলের। কোয়ার্টার-ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে হৃদয় ভাঙে তাদের। সেবার তিতের কোচিংয়েই খেলেছিল ব্রাজিল। এবারও খেলবে। তেলে সান্তানার (১৯৮২ ও ১৯৮৬) পর প্রথম কোচ হিসেবে টানা দুটি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের দায়িত্বে থাকবেন তিতে।
মাঝের এই পথচলায় তিতের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অনেক। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি তার নিজের তো বটেই, তার সহকারীদের সামনেও নিশ্চিতভাবে অনেক ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তিতে নিজেও মনে করেন কোচ হিসেবে আগের চেয়ে তিনি এখন ভালো। বিশ্বমঞ্চে ভালো করতে মানসিক পরীক্ষায় পাস করাটাও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন ৬১ বছর বয়সী এই কোচ। “পারফরম্যান্সই আসল। এটা মৌলিক বিষয় এবং আমরা সেটা নিয়মিতভাবে ভালোই করি। কিন্তু বিশ্বকাপে কঠিনতম একটা দিক হচ্ছে, মানসিক। বিশ্বকাপে মানসিক দিক বা এর চাপ অনেক, অবিশ্বাস্য রকমের।” রাশিয়ার মতো কাতারেও একই চাপ থাকবে বলে মনে করেন তিতে। কিন্তু এবার তাকে আর সাহসী করে তুলছে তরুণ তুর্কিরা, তাদের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার দৃঢ় মানসিকতা। “অভিজ্ঞতা হচ্ছে ব্যবহারিক বিষয়। এটাকে ঠিকঠাক বুঝতে হলে এই তত্ত্বের মধ্যেই আমাদের থাকতে হবে। ব্রাজিলের যে লেগ্যাসি, তার কিছুটা আমরা বহন করি।” “এই ছেলেগুলো ব্রাজিলের অনূর্ধ্ব-২০ দলে দীর্ঘদিন কাজ করেছে। টোকিও অলিম্পিকসে সোনা জিতেছে। তারা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মানসিকতার এবং তাদের চিন্তা-ভাবনাও সঠিক পথে আছে।” ইউরোপের বড় দলগুলোতে আলো ছড়ানো এই তরুণরা ব্রাজিলের জার্সির ভার কতটা, তা জানে বলেই বিশ্বাস তিতের। বড় স্বপ্নের জাল তিনি বুনছেনও সে কারণে। “অভিজাত ক্লাবগুলোতে তাদের উপস্থিতি অনেক বেশি এবং এ কারণে স্বাভাবিকভাবে ব্রাজিলের জার্সিতে খেলার ওজনটা তারা বোঝে। চাপ আছে, কিন্তু তারাও তা জয়ের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত।”