প্রযুক্তি ডেস্ক : জিফ শেয়ারিং সেবা ‘জিফি’ বেচতে বাধ্য হতে পারে ফেসবুক। যুক্তরাজ্যের অ্যান্টিট্রাস্ট পর্যবেক্ষক সংস্থা কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি (সিএমএ) বলছে, ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণে থাকলে জিফির সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারে অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো।
গত বছরই ৪০ কোটি ডলারে জিফি অধিগ্রহনের ঘোষণা দেয় ফেইসবুক। মালিকানা হাতবদলের এক মাসের মাথায় ওই বিষয়ে তদন্তে নামে যুক্তরাজ্যের প্রতিযোগিতা পর্যবেক্ষক সংস্থাটি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সিএমএ আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে ওই অ্যান্টিট্রাস্ট পর্যবেক্ষকের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হলে জিফি বেচতে বাধ্য হতে পারে শীর্ষ সামাজিক মাধ্যমটি।
ফেসবুকের দাবি, সিএমএর আশঙ্কা “প্রমাণ নির্ভর নয়”। জিফির রয়েছে ছোট ভিডিও অ্যানিমেশনের বিশাল লাইব্রেরি; যা শুধু ফেইসবুক নয়, এর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়।
গ্রাফিক ইন্টারচেঞ্জ ফরম্যাট বা জিফ প্রযুক্তির উদ্ভাবন ১৯৮০ সালে। স্ট্যাটিক বা চলমান ছবি তৈরির লক্ষ্য নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিলো এই প্রযুক্তি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর বিভিন্ন পোস্ট, মন্তব্য বিভাগ, এমনকি মেসেঞ্জার আলাপচারিতায় নিয়মিত জিফের ব্যবহার নজরে পড়ে।
২০২০ সালের মে মাসে অধিগ্রহন চুক্তির সময় ফেসবুক জানিয়েছিলো, জিফির ব্যবহারকারীদের অর্ধেকের বেশি আসেন হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপগুলো থেকে। কিন্তু টিকটক, টুইটার এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো ফেইসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও জিফ সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি।
ঠিক পরের মাসেই অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বলে ফেসবুককে চিঠি দেয় সিএমএ। তদন্ত শেষ হওয়া অবধি অপেক্ষা করতে বলা হয় দুই প্রতিষ্ঠানকে। তদন্ত শেষে সিএমএ বলছে, চাইলেই জিফির ডেটাবেইজে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের প্রবেশ বন্ধ করে দিতে পারে ফেইসবুক।
শুধু তাই নয়, টিকটক, টুইটার এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো জিফির অন্যান্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যবহারকারীর আরও বেশি ডেটা চেয়ে বসতে পারে ফেইসবুক– এমন আশঙ্কা করছে সিএমএ।
“এমন কাজে বাজারে ফেসবুকের ক্ষমতা বাড়বে, যা এখনই অনেক বেশি।”–মন্তব্য সিএমএর। এ ছাড়াও, ওই অধিগ্রহন চুক্তির ফলে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপনের খাতে ফেইসবুকের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী কমে যেতো বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অধিগ্রহণের সময়ে জিফি তাদের বিজ্ঞাপন সেবা যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশেও চালু করার কথা বিবেচনা করছিলো বলে জানিয়েছে সিএমএ।
ফেসবুক বলছে, “সিএমএর প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে একমত নই আমরা। আমরা মনে করি এটি প্রমাণ নির্ভর নয়”। “আমরা আগেও এটা দেখিয়েছি যে দুই প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণ যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যারা জিফি এবং আমাদের সেবা ব্যবহার করেন, তাদের জন্য লাভজনক হয়। এই চুক্তির ফলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্ষতি হবে, এই “ভুল ধারণা” ভাঙ্গতে সিএমএর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে ফেইসবুক।
একচেটিয়া আধিপত্যের আশঙ্কা, জিফি বেচতে ফেসবুককে চাপ
ট্যাগস :
একচেটিয়া আধিপত্যের আশঙ্কা
জনপ্রিয় সংবাদ