নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি ষড়যন্ত্রের একচেটিয়া নির্বাচন দেশে আর হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য জনগণ এবার লাঠি, গুলি টিয়ারগ্যাসের সামনে বুক পেতে লড়াই করবে। সব কিছু মোকাবেলা করেই জনগণ এবার একচেটিয়া নির্বাচন প্রতিহত করবে।’ গতকাল সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে আওয়ামী অবৈধ সরকার ভয় পায়। কারণ তারা জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকবে না। তাই বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী চিরুনি অভিযান চালানো হচ্ছে, হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষদেরকে। কিন্তু এগুলো করে কোনো লাভ হবে না। সরকার হুমকি দিলে জাতীয়তাবাদী শক্তি আরও বেশি করে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই মুখপাত্র জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো প্ল্যাটফর্মে ডা. জুবাইদা রহমান ও ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের কোনো অ্যাকাউন্ট, আইডি অথবা পেইজ নেই।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল কমিউনিকেশনস প্ল্যাটফর্মসমূহ যেমন ফেসবুক, এক্স (পূর্ববর্তী নাম টুইটার), ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন, ইউটিউব, টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যালসহ কোথাও কোনো অ্যাকাউন্ট, আইডি অথবা পেজ নেই, এ বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন না। রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্প্রতি সাইবার জগতে তাদের নামে ফেক আইডি ও পেজ তৈরি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন কারসাজিমূলক, বিকৃত ও বানোয়াট তথ্যাদি প্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে লিপ্ত আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানসহ সচেতন দেশবাসীকে এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ডা. জুবাইদা রহমান ও ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব ফেক আইডি ও পেজ তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোতে সংযুক্ত না থাকার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো যাচ্ছে। এসব ফেক আইডি ও পেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপোর্ট করে জানানোর জন্যও সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে করে এই ফেক আইডি ও পেজগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পরিবার তথা জিয়া পরিবারকে নিয়ে চক্রান্তমূলকভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সুপরিকল্পিতভাবে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানের নামে মনগড়া, অসত্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক লক্ষ লোক নিয়োগ দিয়ে আইটি সংশ্লিষ্ট বিকৃত কন্টেন্ট তৈরি করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। এছাড়াও বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ব্যাঙ্গাত্মক ছবি দিয়ে সড়ক-মহাসড়কে পোস্টার, বিলবোর্ড তৈরি করে ছাত্রলীগের নামে টাঙ্গানো হচ্ছে। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকার উদগ্র লালসা থেকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটিয়েছে, এজন্যই তারা হিংস্র, রক্তপিপাসু ও বিকৃত রুচির মানুষে পরিণত হয়েছে। নিজেদের মহাদুর্নীতি, অনাচার, অপকীর্তি ঢাকতেই জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে উঠেপড়ে লেগেছে। আওয়ামী চক্রান্তকারীদের এহেন নোংরা রাজনীতির কৌশলকে মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।’ রিজভী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে ফেসবুকে একটি ভ্যারিফায়েড আইডি (ঋধপবনড়ড়শ.পড়স ঃধৎরয়ঁবৎধযসধহসধহ.নফনহঢ়) এবং টুইটারে একটি ভ্যারিফায়েড হ্যান্ডল (ঃরিঃঃবৎ.পড়স/ঃৎধযসধহনহঢ়) রয়েছে। এছাড়া আর কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারেক রহমানের নামে কোনো আইডি অথবা পেজ নেই।’
এসময় তিনি সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলার বিবরণ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।