ঢাকা ০৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

এই যুগে বেড়ে উঠলে অটিজম ধরা পড়তো আমার: বিল গেটস

  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: আজ তরুণ থাকলে অর্থাৎ এ যুগে বেড়ে উঠলে এক ধরনের অটিজমে আক্রান্ত হতেন বলে বিশ্বাস করেন বিল গেটস।

বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিজের আত্মজীবনীমূলক বই ‘সোর্স কোড: মাই বিগিনিংস’-এ এমন কথা বলেছেন, যেটি মঙ্গলবার প্রকাশ পাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে’র শেয়ার করা এক অংশে ৬৯ বছর বয়সী এই বিলিয়নেয়ার লিখেছেন, এই যুগে বেড়ে উঠলে আমার সম্ভবত অটিজম ধরা পড়তো।

আমার মা-বাবার কাছে কোনো গাইড বা পাঠ্যপুস্তক ছিল না, যা তাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কেন তাদের ছেলে সামাজিক ইঙ্গিত মিস করে নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্পের প্রতি এত বেশি আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। কারণ এ ধরনের আচরণ অন্যের কাছে অভদ্র বা সঠিক নয় মনে হতে পারে।

গেটস বলেছেন, কিছু মানুষের মস্তিষ্ক অন্যদের থেকে আলাদাভাবে তথ্য প্রক্রিয়া করে। আর এই বিষয়টি তার শৈশবকালে খুব একটা বোঝা যেত না। ‘নিউরোডাইভারজেন্ট’ শব্দটি কেবল ১৯৯০-এর দশকে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

‘গেটস ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার দান করে দেওয়া এই সমাজসেবী বলেছেন, তার সামাজিক দিক ও আমি অন্যদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারি সে সম্পর্কে আমার সচেতনতা খুব ধীরে ধীরে বিকাশ হয়েছে। তবে, এই বোধ আমার তৈরি হয়েছে বয়স, অভিজ্ঞতা ও সন্তানদের কাছ থেকে, যা আমার জন্য আরও ভালোভাবে কাজ করেছে।

বইতে তিনি লিখেছেন, ছোটবেলায় নিজের চিন্তাভাবনায় কিছু চ্যালেঞ্জ থাকার পরও ‘কোনও কিছুর জন্য’ মস্তিষ্ককে বিক্রি করবেন না তিনি।

টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেছেন গেটস। তিনি বলেছেন, যদি কখনও এমন কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়, যা খেলে আমার সামাজিক দক্ষতা স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি আমার মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতাও স্বাভাবিক থাকবে তবুও আমি ওষুধটি খাব না। আমি হয়তো এখন ভুলেও গেছি যে বিষয়টি কতটা বেদনাদায়ক ছিল আমার জন্য। তবে ওই সময় সফটওয়্যারটি লেখার জন্য আমার মস্তিষ্কের ওই রকম অবস্থারই প্রয়োজন ছিল।

তিনি বলেছেন, নিজের মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযোগ থাকার পদ্ধতিই তাকে কিশোর বয়সে প্রথম কোড লিখতে সাহায্য করেছে। আর এ কোডটিই তিনি পরে মাইক্রোসফটের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।

নিউরোডাইভারজেন্ট এমন এক স্নায়বিক অবস্থা যা খুব কম মানুষের হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্তদের মূলত স্নায়বিক বিচ্যুতি ঘটে। ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’ বা এএসডি, ‘অ্যাটেনশন ডিফ্লিক্ট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার’ বা এডিএইচডি ও ডিসলেক্সিয়া’সহ নানারকম মানসিক রোগের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস-এর তথ্য অনুসারে, দেশটির প্রতি সাতজনের মধ্যে একজনকে নিউরোডাইভারজেন্ট বলে অনুমান করছে সংস্থাটি।

গেটসের মতো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা তাদের নিউরোডাইভারজেন্সি সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।

২০২১ সালে নিজের ‘অ্যাসপারগার সিনড্রোম’-এর কথা প্রথম প্রকাশ করেন তিনি। তবে এটি কেবল অটিজমের একটি রূপ, আলাদা কোনো রোগ নয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

কোনো অজুহাতেই কারও সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

এই যুগে বেড়ে উঠলে অটিজম ধরা পড়তো আমার: বিল গেটস

আপডেট সময় : ০৬:০৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: আজ তরুণ থাকলে অর্থাৎ এ যুগে বেড়ে উঠলে এক ধরনের অটিজমে আক্রান্ত হতেন বলে বিশ্বাস করেন বিল গেটস।

বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিজের আত্মজীবনীমূলক বই ‘সোর্স কোড: মাই বিগিনিংস’-এ এমন কথা বলেছেন, যেটি মঙ্গলবার প্রকাশ পাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে’র শেয়ার করা এক অংশে ৬৯ বছর বয়সী এই বিলিয়নেয়ার লিখেছেন, এই যুগে বেড়ে উঠলে আমার সম্ভবত অটিজম ধরা পড়তো।

আমার মা-বাবার কাছে কোনো গাইড বা পাঠ্যপুস্তক ছিল না, যা তাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে, কেন তাদের ছেলে সামাজিক ইঙ্গিত মিস করে নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্পের প্রতি এত বেশি আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। কারণ এ ধরনের আচরণ অন্যের কাছে অভদ্র বা সঠিক নয় মনে হতে পারে।

গেটস বলেছেন, কিছু মানুষের মস্তিষ্ক অন্যদের থেকে আলাদাভাবে তথ্য প্রক্রিয়া করে। আর এই বিষয়টি তার শৈশবকালে খুব একটা বোঝা যেত না। ‘নিউরোডাইভারজেন্ট’ শব্দটি কেবল ১৯৯০-এর দশকে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

‘গেটস ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার দান করে দেওয়া এই সমাজসেবী বলেছেন, তার সামাজিক দিক ও আমি অন্যদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারি সে সম্পর্কে আমার সচেতনতা খুব ধীরে ধীরে বিকাশ হয়েছে। তবে, এই বোধ আমার তৈরি হয়েছে বয়স, অভিজ্ঞতা ও সন্তানদের কাছ থেকে, যা আমার জন্য আরও ভালোভাবে কাজ করেছে।

বইতে তিনি লিখেছেন, ছোটবেলায় নিজের চিন্তাভাবনায় কিছু চ্যালেঞ্জ থাকার পরও ‘কোনও কিছুর জন্য’ মস্তিষ্ককে বিক্রি করবেন না তিনি।

টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেছেন গেটস। তিনি বলেছেন, যদি কখনও এমন কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়, যা খেলে আমার সামাজিক দক্ষতা স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি আমার মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতাও স্বাভাবিক থাকবে তবুও আমি ওষুধটি খাব না। আমি হয়তো এখন ভুলেও গেছি যে বিষয়টি কতটা বেদনাদায়ক ছিল আমার জন্য। তবে ওই সময় সফটওয়্যারটি লেখার জন্য আমার মস্তিষ্কের ওই রকম অবস্থারই প্রয়োজন ছিল।

তিনি বলেছেন, নিজের মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযোগ থাকার পদ্ধতিই তাকে কিশোর বয়সে প্রথম কোড লিখতে সাহায্য করেছে। আর এ কোডটিই তিনি পরে মাইক্রোসফটের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।

নিউরোডাইভারজেন্ট এমন এক স্নায়বিক অবস্থা যা খুব কম মানুষের হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্তদের মূলত স্নায়বিক বিচ্যুতি ঘটে। ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার’ বা এএসডি, ‘অ্যাটেনশন ডিফ্লিক্ট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার’ বা এডিএইচডি ও ডিসলেক্সিয়া’সহ নানারকম মানসিক রোগের সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বা এনএইচএস-এর তথ্য অনুসারে, দেশটির প্রতি সাতজনের মধ্যে একজনকে নিউরোডাইভারজেন্ট বলে অনুমান করছে সংস্থাটি।

গেটসের মতো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা তাদের নিউরোডাইভারজেন্সি সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।

২০২১ সালে নিজের ‘অ্যাসপারগার সিনড্রোম’-এর কথা প্রথম প্রকাশ করেন তিনি। তবে এটি কেবল অটিজমের একটি রূপ, আলাদা কোনো রোগ নয়।