ঢাকা ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫

এইচএসসিতে পাস ৭৮.৬৪% ,পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে

  • আপডেট সময় : ০২:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে।
গতকাল রোববার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, সব শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষায় মোট পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষার্থ। শুধু ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ৯টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডের ৭৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডের ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডের ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা। এদিকে, দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গত ১৭ আগস্ট দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পিছিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম, মাদরাসা ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ২৭ আগস্ট। এ বছর ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে ১১টি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছিলেন ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। এদিকে, এবার পূর্ণ নম্বরের প্রশ্নপত্র ও পূর্ণ সময়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
জিপিএ-৫ কমে প্রায় অর্ধেক: মহামারীর পর প্রথমবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন; গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। অর্থাৎ, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে হাজার ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন। এবারে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন। সার্বিক পাসের হার ৭৮.৬৪ শতাংশ। এর আগে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষা কোভিড মহামারী আর বন্যার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে আনা সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। এই হিসাবে ২০২৩ সালের পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ পয়েন্ট।
গত চার বছরের চিত্র: মহামারী শুরুর আগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় সার্বিকভাবে পাস করে ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মোট ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী পাঁচে পাঁচ জিপিএ পায়। ২০২০ সালে দেশে মহামারীর প্রকোপে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই পাস করে, জিপিএ-৫ পান এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। কোভিড মহামারীর দ্বিতীয় বছর ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষাও বিলম্বিত হয় মহামারীর কারণের। স্বাভাবিক সময়ে এপ্রিলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ২০২১ সালে এই পরীক্ষা শুরু হয় ডিসেম্বরে। সেবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়। তাতে ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। গত বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের পরীক্ষা এগিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকলেও বন্যার কারণে তা আবার পিছিয়ে শুরু হয় ৬ নভেম্বর থেকে, সেই ফল দেওয়া হয় এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। তিন বছর পর ২০২৩ সালে এসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ এর পরিবর্তে পরীক্ষা হয় ৭৫ নম্বরে। এমনিতে প্রতিবছর সব বোর্ডের পরীক্ষা একসঙ্গে হলেও এবার প্রবল বৃষ্টি আর ঢলের কারণে তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় দেরিতে। তবে ফল প্রকাশ করা হয়েছে একসঙ্গেই।
পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা: চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ হয়েছেন মোট ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ পরীক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রীদের থেকে বেশি সংখ্যক ছাত্র অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৯ হাজার ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৮ হাজার। তবে উত্তীর্ণের সংখ্যা ও পাসের হারে ছাত্রীরাই এগিয়ে। রোববার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। এবার ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হারও কিছুটা কমেছে। গতবার পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এবার এইচএসসি ও সমমানে সব বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতবার এসএসসি ও সমমানে মোট পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
৪২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ এইচএসসি পাস করেননি: চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি। তবে শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে এবার কিছুটা কমেছে। গতবার শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫০টি।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এইচএসসিতে পাস ৭৮.৬৪% ,পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে

আপডেট সময় : ০২:৪২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে।
গতকাল রোববার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা গেছে, সব শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষায় মোট পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষার্থ। শুধু ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ৯টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডের ৭৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, ময়মনসিংহ বোর্ডের ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডের ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বোর্ড চেয়ারম্যানরা। এদিকে, দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গত ১৭ আগস্ট দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পিছিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম, মাদরাসা ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ২৭ আগস্ট। এ বছর ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে ১১টি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছিলেন ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। এদিকে, এবার পূর্ণ নম্বরের প্রশ্নপত্র ও পূর্ণ সময়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
জিপিএ-৫ কমে প্রায় অর্ধেক: মহামারীর পর প্রথমবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন; গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। অর্থাৎ, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে হাজার ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন। এবারে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন। সার্বিক পাসের হার ৭৮.৬৪ শতাংশ। এর আগে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষা কোভিড মহামারী আর বন্যার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে আনা সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। এই হিসাবে ২০২৩ সালের পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ পয়েন্ট।
গত চার বছরের চিত্র: মহামারী শুরুর আগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় সার্বিকভাবে পাস করে ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মোট ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী পাঁচে পাঁচ জিপিএ পায়। ২০২০ সালে দেশে মহামারীর প্রকোপে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই পাস করে, জিপিএ-৫ পান এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। কোভিড মহামারীর দ্বিতীয় বছর ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষাও বিলম্বিত হয় মহামারীর কারণের। স্বাভাবিক সময়ে এপ্রিলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ২০২১ সালে এই পরীক্ষা শুরু হয় ডিসেম্বরে। সেবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়। তাতে ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। গত বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের পরীক্ষা এগিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকলেও বন্যার কারণে তা আবার পিছিয়ে শুরু হয় ৬ নভেম্বর থেকে, সেই ফল দেওয়া হয় এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। তিন বছর পর ২০২৩ সালে এসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ এর পরিবর্তে পরীক্ষা হয় ৭৫ নম্বরে। এমনিতে প্রতিবছর সব বোর্ডের পরীক্ষা একসঙ্গে হলেও এবার প্রবল বৃষ্টি আর ঢলের কারণে তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় দেরিতে। তবে ফল প্রকাশ করা হয়েছে একসঙ্গেই।
পাসের হারে এগিয়ে মেয়েরা: চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ হয়েছেন মোট ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ পরীক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রীদের থেকে বেশি সংখ্যক ছাত্র অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া মোট ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৯ হাজার ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৮ হাজার। তবে উত্তীর্ণের সংখ্যা ও পাসের হারে ছাত্রীরাই এগিয়ে। রোববার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ওয়েবসাইট ও স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল প্রকাশ করা হয়। এবার ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাসের হারও কিছুটা কমেছে। গতবার পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এবার এইচএসসি ও সমমানে সব বোর্ডে পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গতবার এসএসসি ও সমমানে মোট পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
৪২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ এইচএসসি পাস করেননি: চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি। তবে শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে এবার কিছুটা কমেছে। গতবার শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫০টি।