ঢাকা ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

এআই দিয়ে ৩ বোনের অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল, ভাইয়ের আত্মহত্যা

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৬:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফারিদাবাদের ১৯ বছর তরুণ রাহুল ভারতী। রাহুল স্থানীয় ডিএভি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিন বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন রাহুল। তবে সম্প্রতি তাঁর জীবনে নেমে আসে এক দুর্বিষহ অন্ধকার।

অচেনা এক ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাহুলের তিন বোনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বানান। তারপর সেগুলো রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রাহুল।

রাহুলের বাবা মনোজ ভারতী এনডিটিভিকে জানান, দুই সপ্তাহ ধরে রাহুল মানসিকভাবে ভীষণ অস্থির ছিলেন। অচেনা এক ব্যক্তি রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর তিন বোনের নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পাঠাচ্ছিলেন এবং টাকা দাবি করছিলেন। তিনি আরও জানান, রাহুল ঠিকমতো খেতেন না, দিনভর ঘরে চুপচাপ থাকতেন। এসব নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন।

পুলিশের তদন্তে রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে ‘সাহিল’ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন পাওয়া গেছে। সেখানে রাহুলকে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে ২০ হাজার রুপি দাবি করেছিলেন ওই ব্যক্তি।

হোয়াটঅ্যাপের কথোপকথনে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যে একাধিকবার অডিও ও ভিডিও কলে কথা হয়েছে। একপর্যায়ে সাহিল রাহুলকে লোকেশন পাঠিয়ে লিখেছিলেন, ‘আজা মেরে পাস’ (আমার কাছে চলে আসো)। শেষ কথোপকথনে সাহিল হুমকি দেন, টাকা না দিলে সব ছবি–ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবেন।

ওই ব্যক্তি রাহুলকে আত্মহত্যা করতেও প্ররোচিত করেন এবং কোন ওষুধ খেলে মৃত্যু হবে, তা-ও বলে দেন।

গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাহুল কিছু ওষুধ খান। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

রাহুলের বাবা মনোজ বলেন, ‘কেউ আমার মেয়েদের অশ্লীল ভিডিও ও ছবি রাহুলের ফোনে পাঠিয়ে হুমকি দিচ্ছিল। তারা হুমকি দিচ্ছিল—টাকা না দিলে এগুলো ভাইরাল করে দেবে। এতে রাহুল ভীষণ মানসিক চাপে ছিল। এই যন্ত্রণায় সে আত্মহত্যা করে।’

রাহুলের মা মীনা দেবী অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাশুর নীরজ ভারতী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে রাহুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। প্রায় ছয় মাস আগে পারিবারিক ঝগড়ার পর থেকে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তিনি দাবি করেন, নীরজ একটি মেয়ের সঙ্গে মিলে পুরো ঘটনা পরিকল্পনা করেছেন।

রাহুলের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা সুনীল কুমার জানান, রাহুল বিষ পান করেছিলেন। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। রাহুলের মোবাইল ফোনের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এসব তথ্য অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওআ/আপ্র/২৭/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান ফায়ার সার্ভিস ডিজির

এআই দিয়ে ৩ বোনের অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল, ভাইয়ের আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০৭:৪৬:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফারিদাবাদের ১৯ বছর তরুণ রাহুল ভারতী। রাহুল স্থানীয় ডিএভি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিন বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন রাহুল। তবে সম্প্রতি তাঁর জীবনে নেমে আসে এক দুর্বিষহ অন্ধকার।

অচেনা এক ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাহুলের তিন বোনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বানান। তারপর সেগুলো রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রাহুল।

রাহুলের বাবা মনোজ ভারতী এনডিটিভিকে জানান, দুই সপ্তাহ ধরে রাহুল মানসিকভাবে ভীষণ অস্থির ছিলেন। অচেনা এক ব্যক্তি রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর তিন বোনের নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পাঠাচ্ছিলেন এবং টাকা দাবি করছিলেন। তিনি আরও জানান, রাহুল ঠিকমতো খেতেন না, দিনভর ঘরে চুপচাপ থাকতেন। এসব নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন।

পুলিশের তদন্তে রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে ‘সাহিল’ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন পাওয়া গেছে। সেখানে রাহুলকে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে ২০ হাজার রুপি দাবি করেছিলেন ওই ব্যক্তি।

হোয়াটঅ্যাপের কথোপকথনে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যে একাধিকবার অডিও ও ভিডিও কলে কথা হয়েছে। একপর্যায়ে সাহিল রাহুলকে লোকেশন পাঠিয়ে লিখেছিলেন, ‘আজা মেরে পাস’ (আমার কাছে চলে আসো)। শেষ কথোপকথনে সাহিল হুমকি দেন, টাকা না দিলে সব ছবি–ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবেন।

ওই ব্যক্তি রাহুলকে আত্মহত্যা করতেও প্ররোচিত করেন এবং কোন ওষুধ খেলে মৃত্যু হবে, তা-ও বলে দেন।

গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাহুল কিছু ওষুধ খান। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

রাহুলের বাবা মনোজ বলেন, ‘কেউ আমার মেয়েদের অশ্লীল ভিডিও ও ছবি রাহুলের ফোনে পাঠিয়ে হুমকি দিচ্ছিল। তারা হুমকি দিচ্ছিল—টাকা না দিলে এগুলো ভাইরাল করে দেবে। এতে রাহুল ভীষণ মানসিক চাপে ছিল। এই যন্ত্রণায় সে আত্মহত্যা করে।’

রাহুলের মা মীনা দেবী অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাশুর নীরজ ভারতী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে রাহুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। প্রায় ছয় মাস আগে পারিবারিক ঝগড়ার পর থেকে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তিনি দাবি করেন, নীরজ একটি মেয়ের সঙ্গে মিলে পুরো ঘটনা পরিকল্পনা করেছেন।

রাহুলের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা সুনীল কুমার জানান, রাহুল বিষ পান করেছিলেন। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। রাহুলের মোবাইল ফোনের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এসব তথ্য অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওআ/আপ্র/২৭/১০/২০২৫