নিজস্ব প্রতিবেদক : ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে চলতি মাসের (জুন) মধ্যে খেলাপি হতেন- এমন ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শর্তসাপেক্ষে আরো দুই মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত রোববার (২৭ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ থেকে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুন সময়সীমা অনুযায়ী, জুনের মধ্যে পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা থাকা কিস্তিগুলোর ২০ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করলেই ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ওই ঋণ খেলাপি করা যাবে না।
দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি আবারও মারাত্মক আকার ধারণ করায় ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করার দাবি উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো থেকে এ দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের দাবি পর্যালোচনা ও করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই আপাতত ঋণ পরিশোধের সময়সীমা দুই মাস বাড়লো। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালজুড়ে ব্যাংকঋণের কিস্তি পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত ছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে কোনও অর্থ পরিশোধ না করেই ঋণগ্রহীতারা খেলাপি হওয়া থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে এসে শর্তসাপেক্ষে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত ২৪ মার্চ জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে অনাদায়ী সুদ আদায়সহ ঋণের কিস্তি পরিশোধের বিষয়ে রূপরেখা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোনও গ্রাহকের ২০২০ সালের সুদ বকেয়া থাকলে চলতি মার্চ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ছয়টি ত্রৈমাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। একই সঙ্গে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত যে সুদ আসে, তাও ত্রৈমাসিক কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া তলবি ঋণ চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আটটি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা চলমান ঋণের মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে এবং নতুন করে নবায়ন করা হয়নি, সেসব ঋণের শুধু সুদ পরিশোধ করলেই ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত খেলাপি হবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জারিকৃত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, উল্লেখিত নিয়মে কোনও ত্রৈমাসিকে প্রদেয় কিস্তি পরিশোধিত না হলে ওই ত্রৈমাসিক থেকে এ সুবিধা বাতিল হিসেবে গণ্য হবে। পাশাপাশি যথানিয়মে সংশ্লিষ্ট ঋণ শ্রেণীকরণ করতে হবে। তবে উল্লেখিত চলমান ও তলবি ঋণসহ বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৩/২০২১-এর আওতায় মেয়াদি ঋণের বিপরীতে প্রদেয় কিস্তি ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৩০ জুন ২০২১-এর মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই সময়ে ঋণগুলো বিরূপ মানে শ্রেণীকরণ করা যাবে না। ২৪ মার্চ জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটিকে উদ্ধৃত করে রোববারের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগের প্রজ্ঞাপনগুলোর মাধ্যমে প্রদত্ত সুবিধার আওতায় ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে জুন-২০২১ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিগুলোর মোট পরিমাণের ন্যূনতম ২০ শতাংশ ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৩১ আগস্ট ২০২১ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই সময়ে ঋণগুলো বিরূপ মানে শ্রেণীকরণ করা যাবে না।
ঋণের কিস্তি পরিশোধে সময় পেলেন ব্যবসায়ীরা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ