ঢাকা ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

উৎসবের মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে দর্জিদোকান

  • আপডেট সময় : ০১:১৩:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদ আসে আনন্দ নিয়ে। এ আনন্দ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় নতুন পোশাক। তাই ঈদ সামনে রেখে যেমন মানুষের ভিড় দেখা যায় বিপণি বিতানে, তেমনই ভিড় করতে দেখা যায় দর্জি দোকানে। তবে এবারের চিত্র যেন ভিন্ন। রাজধানীর টেইলার্সগুলোতে এবার তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না গ্রাহকদের। যেখানে ঈদ উপলক্ষে নানারকম অর্ডারের জন্য ব্যস্ত থাকার কথা,সেখানে অলস সময় পার করছেন দর্জিরা।
কিন্তু কেন এ সংকট? দর্জিকাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বললে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য এ অবস্থার জন্য দায়ী-এমনটা বলা হচ্ছে। বিগত দুই বছরে করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকই। তার ওপর এবার নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য। এ দুয়ের প্রভাবে উৎসবের মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে দর্জিদোকানগুলো।
ঈদ উৎসবের অন্যতম অংশ হচ্ছে কেনাকাটা। মার্কটে রেডিমেড পণ্য কেনার পাশপাশি নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাকের জন্য দর্জির কাছে গিয়ে থাকে মানুষ। কেউ কাপড় কিনে নিয়ে যান, কেউ দর্জির দোকান থেকেই কিনে বানাতে দেন।
বিগত বছরগুলোতে করোনার প্রকোপে বিধিনিষেধ এবং লকডাউন থাকায় সেভাবে জমজমাট ছিল না ঈদ বাজার। এ বছর করোনার প্রকোপ নেই। নেই বিধিনিষেধও। কিন্তু এবারও আশানূরূপ গ্রাহক নেই নগরীর দর্জিদোকানগুলোতে।
সরেজমিনে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোডের দর্জি দোকানে এমনই চিত্র দেখা যায়। বড় দর্জিদোকানে খদ্দেরের দেখা মিললেও ছোট দোকানগুলো একেবারেই ফাঁকা। এলিফ্যান্ট রোডের রেমন্ড টেইলার্সের ম্যানেজার মোহাম্মদ জামালউদ্দীন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিগত সময়ের তুলনায় এবার কাস্টমারের সংখ্যা অনেক কম। অথচ রমজানের সময় আমাদের দম ফেলার সময় থাকে না।’
একই কথা টপ টেন টেইলার্সের কর্মচারী নাসির আহমেদের। তিনি বলেন, ‘সাধারণত প্রথম রোজা থেকে ১৫ বা সর্বোচ্চ ২০ রোজা অব্দি আমরা অর্ডার নিয়ে থাকি। তারপর অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিই, যেন ঈদের মধ্যে সবাইকে কাপড় ডেলিভারি দিতে পারি। কিন্তু এবার তো কোনো অর্ডারই নেই। আজ অর্ডার পেলে পরশুই দিয়ে দিতে পারব- এমন অবস্থা।’
কেন এমন সংকট- এ প্রশ্নের জবাবে সানমুন টেইলার্সের কর্মী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘মূলত দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষের খরচ সীমিত হয়ে গেছে। যার ফলে অনেকে চাইলেও টেইলার্সে এসে কাপড় বানাতে পারছে না। মার্কেট থেকে রেডিমেড কাপড় কিনে নিচ্ছে।’
দর্জিকর্মী বিল্লাল বলেন, ‘অন্যান্য পণ্যের তুলনায় থান কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। মজুরি সামান্য বাড়লেও সেটা উল্লেখযোগ্য নয়। কিন্তু তাতেও আমরা ক্রেতা পাচ্ছি না।’
বর্তমানে দর্জিদোকানে প্রতি পিস প্যান্ট সেলাই ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, শার্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, ব্লাউজ ৫০০ টাকা, ব্লাউজ (সুতি) ৪০০ টাকা, পেটিকোট ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ম্যাক্সি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, গাউন ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা, বোরকা ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। সামনে ক্রেতার সমাগম বাড়বে কিনা জানতে চাওয়া হলে ধানমন্ডির আমজাদ টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে রোজার প্রথম সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা এখনো প্রস্তুত আছি ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্য।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

উৎসবের মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে দর্জিদোকান

আপডেট সময় : ০১:১৩:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদ আসে আনন্দ নিয়ে। এ আনন্দ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় নতুন পোশাক। তাই ঈদ সামনে রেখে যেমন মানুষের ভিড় দেখা যায় বিপণি বিতানে, তেমনই ভিড় করতে দেখা যায় দর্জি দোকানে। তবে এবারের চিত্র যেন ভিন্ন। রাজধানীর টেইলার্সগুলোতে এবার তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না গ্রাহকদের। যেখানে ঈদ উপলক্ষে নানারকম অর্ডারের জন্য ব্যস্ত থাকার কথা,সেখানে অলস সময় পার করছেন দর্জিরা।
কিন্তু কেন এ সংকট? দর্জিকাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বললে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য এ অবস্থার জন্য দায়ী-এমনটা বলা হচ্ছে। বিগত দুই বছরে করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকই। তার ওপর এবার নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য। এ দুয়ের প্রভাবে উৎসবের মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে দর্জিদোকানগুলো।
ঈদ উৎসবের অন্যতম অংশ হচ্ছে কেনাকাটা। মার্কটে রেডিমেড পণ্য কেনার পাশপাশি নিজের পছন্দ অনুযায়ী পোশাকের জন্য দর্জির কাছে গিয়ে থাকে মানুষ। কেউ কাপড় কিনে নিয়ে যান, কেউ দর্জির দোকান থেকেই কিনে বানাতে দেন।
বিগত বছরগুলোতে করোনার প্রকোপে বিধিনিষেধ এবং লকডাউন থাকায় সেভাবে জমজমাট ছিল না ঈদ বাজার। এ বছর করোনার প্রকোপ নেই। নেই বিধিনিষেধও। কিন্তু এবারও আশানূরূপ গ্রাহক নেই নগরীর দর্জিদোকানগুলোতে।
সরেজমিনে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোডের দর্জি দোকানে এমনই চিত্র দেখা যায়। বড় দর্জিদোকানে খদ্দেরের দেখা মিললেও ছোট দোকানগুলো একেবারেই ফাঁকা। এলিফ্যান্ট রোডের রেমন্ড টেইলার্সের ম্যানেজার মোহাম্মদ জামালউদ্দীন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিগত সময়ের তুলনায় এবার কাস্টমারের সংখ্যা অনেক কম। অথচ রমজানের সময় আমাদের দম ফেলার সময় থাকে না।’
একই কথা টপ টেন টেইলার্সের কর্মচারী নাসির আহমেদের। তিনি বলেন, ‘সাধারণত প্রথম রোজা থেকে ১৫ বা সর্বোচ্চ ২০ রোজা অব্দি আমরা অর্ডার নিয়ে থাকি। তারপর অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দিই, যেন ঈদের মধ্যে সবাইকে কাপড় ডেলিভারি দিতে পারি। কিন্তু এবার তো কোনো অর্ডারই নেই। আজ অর্ডার পেলে পরশুই দিয়ে দিতে পারব- এমন অবস্থা।’
কেন এমন সংকট- এ প্রশ্নের জবাবে সানমুন টেইলার্সের কর্মী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘মূলত দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষের খরচ সীমিত হয়ে গেছে। যার ফলে অনেকে চাইলেও টেইলার্সে এসে কাপড় বানাতে পারছে না। মার্কেট থেকে রেডিমেড কাপড় কিনে নিচ্ছে।’
দর্জিকর্মী বিল্লাল বলেন, ‘অন্যান্য পণ্যের তুলনায় থান কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। মজুরি সামান্য বাড়লেও সেটা উল্লেখযোগ্য নয়। কিন্তু তাতেও আমরা ক্রেতা পাচ্ছি না।’
বর্তমানে দর্জিদোকানে প্রতি পিস প্যান্ট সেলাই ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, শার্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, ব্লাউজ ৫০০ টাকা, ব্লাউজ (সুতি) ৪০০ টাকা, পেটিকোট ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, ম্যাক্সি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, গাউন ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকা, বোরকা ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। সামনে ক্রেতার সমাগম বাড়বে কিনা জানতে চাওয়া হলে ধানমন্ডির আমজাদ টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে রোজার প্রথম সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা এখনো প্রস্তুত আছি ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্য।’