অর্থনৈতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বেক্সিমকো চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৫৮ পয়সা লোকসান করেছে। গত বছরের একই সময়ে এই কোম্পানির শেয়ারপ্রতি ৮২ পয়সা আয় হয়েছিল। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এই কোম্পানির আয়ের বিপরীতে বড় ধরনের লোকসান দেখা দিয়েছে।
বেক্সিমকো কোম্পানি জানায়, ব্যাংক ঋণ সুবিধা না পাওয়ায় তাদের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে কোনো ব্যাংক কোম্পানিটির এলসি বা ঋণপত্র খোলেনি। ফলে পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এবং সুতা ও কাপড় কম দামে বিক্রি করতে হয়; যা কোম্পানিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করেছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ৮২ টাকা ৫৭ পয়সা; যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৯৩ টাকা ৯৮ পয়সা। এছাড়া বেক্সিমকো এখন বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত। কোম্পানিটির ঋণ পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে যেসব কোম্পানি বর্তমানে অস্তিত্বহীন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এক বৈঠকে বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে গুরুতর ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে শ্রম মন্ত্রণালয় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে- প্রথমত, লে-অফ করা ১৩টি কোম্পানি বন্ধ করা, দ্বিতীয়ত, বেক্সিমকোর রিসিভারকে বরখাস্ত করা, এবং তৃতীয়ত, ঋণদাতা ব্যাংকগুলোর কাছে বন্ধক রাখা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার বিক্রি করে লে-অফ কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করা। এই পরিস্থিতি বেক্সিমকোর জন্য একটি কঠিন সময়ে পরিণত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কোম্পানির ব্যবসা পুনরুজ্জীবিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।