প্রত্যাশা ডেস্ক: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশবাসীকে উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এ আহ্বান জানান তিনি।
পোস্টে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। কিন্তু আমরা মূলত ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের দেশ ছিলাম এবং থাকব, যেখানে জাতি, বর্ণ, ধর্মনির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত। আমি আমার সহকর্মী বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং কোনো উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে ভারতের রাজনৈতিক মহল এবং তাদের সংবাদমাধ্যমগুলোয় উসকানিমূলক বক্তব্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত অপতথ্যে ছেয়ে আছে, যা ক্রমাগত বাংলাদেশবিরোধী মনোভাবকে উসকে দিচ্ছে।
আগরতলায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটে সর্বশেষ হামলার মধ্য দিয়ে অপপ্রচারের প্রভাব ফুটে উঠেছে, যা প্রতিবেশীদের মধ্যে শুধু বিভেদই সৃষ্টি করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডারদের (অংশীদার) অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন (২০ কোটি) জনসংখ্যার একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ কোনো দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কারণ কী, তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে কী ঘটছে এবং কেন নির্দিষ্ট কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের বাইরে গিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা অপরিহার্য, তা বস্তুনিষ্ঠভাবে বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।’
তারেক রহমান ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং জাতি, বর্ণ, ধর্মনির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকার কথা জানিয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং কোনো উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখালো বিএনপি: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে এবং দেশটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে ফের নয়াপল্টনের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ সময় বলেন, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেসব নিয়ে দেশটির কোনো অনুশোচনা নেই।
কিন্তু বাংলাদেশে তাদের মাষ্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা অযাচিত উদ্বেগ-উগ্রতা প্রকাশ করছে। যা সীমা অতিক্রম করেছে। ভারতের ভূমিকা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। ভারতে মুসলিম-খ্রিষ্টান নিম্নবর্ণের দলিত হিন্দু শিখসহ সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অস্থির হয়ে উঠেছে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবি খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আব্দুল সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভির আহমেদ রবিন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দীন জুয়েল, মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুবদলের সাবেক যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখ।