ঢাকা ১১:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

উল্কার আঘাতে তৈরি পৃথিবীর প্রাচীন গর্ত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

  • আপডেট সময় : ০৪:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবীতে উল্কার আঘাতের প্রাচীনতম গর্তটি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা পৃথিবী ও এতে প্রাণের উৎস সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বদলে দিতে পারে বলে দাবি তাদের।

এ উল্কাপিণ্ডটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে। এর আগে জানা বিজ্ঞানীদের প্রাচীনতম গর্তটি ছিল দুইশো ২০ কোটি বছরের পুরানো বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

গবেষকরা বলছেন, এ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে এর আগেও বিশাল আকারের উল্কাপিণ্ড আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীতে, যার সম্পর্কে আমরা হয়তো জানিই না। পাশাপাশি পেছনে ফেলে আসা এসব গর্তই সম্ভবত সেই জায়গা, যেখানে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব শুরু হয়েছিল।

উল্কাপিণ্ডের আঘাতের তীব্র চাপে পৃথিবীর এই গর্তে যে ‘ছিন্নভিন্ন শঙ্কু’ অবশিষ্ট রয়েছে তার মাধ্যমে এ বিষয়টি শনাক্ত করেছেন এ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

চাঁদের কারণে আমাদের সৌরজগতের প্রাথমিক পর্যায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছিল তা আমাদের জানা, বলেছেন ‘কার্টিন ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক টিম জনসন। এখন পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনো প্রাচীন গর্ত খুঁজে না পাওয়ার মানে হচ্ছে, ভূতাত্ত্বিকরা এগুলোকে খুঁজে পেতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি।

পৃথিবীর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যোগ করেছে এ গবেষণা, যার থেকে ইঙ্গিত মেলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে থাকা আরো অনেক প্রাচীন গর্তের খোঁজ মিলতে পারে।

‘কার্টিন ইউনিভার্সিটি’র আরেক অধ্যাপক ক্রিস কার্কল্যান্ড বলেছেন, “এ গবেষণার ফলাফল আমাদের কেবল প্রারম্ভিক প্রাণের বিকাশের পরিবেশই আবিষ্কার করতে সাহায্য করেনি, বরং আজ যে মহাদেশগুলোতে এটি বিকশিত হচ্ছে সেগুলোও খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে আমাদের।

এ প্রভাব উন্মোচন করা ও একই সময়কাল থেকে আরো নানা তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে কীভাবে পৃথিবীতে প্রাণ শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে অনেক কিছু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কারণ উল্কাপিণ্ডের প্রভাবে তৈরি বিভিন্ন গর্ত গরম পানির পুকুরের মতো পৃথিবীতে অণুজীবের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছিল।

এ বিষয়টি পৃথিবীর ভূত্বক গঠন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ধারণাকে বদলে দিতে পারে। উল্কাপিণ্ডের প্রভাব থেকে অনেক শক্তি ভূত্বকের এক অংশকে অন্য অংশের নীচে ঠেলে দিয়েছিল বা ম্যাগমাকে পৃথিবীর ম্যান্টলের গভীর থেকে পৃষ্ঠের ওপরের দিকে নিয়ে আসতে বাধ্য করেছিল, যা প্রাথমিক ভূত্বক গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। এটি ক্র্যাটন বা ভূত্বকের অনেক বড় ব্লক গঠনেও ভূমিকা রাখতে পারে, যা বর্তমানে বিভিন্ন মহাদেশের ভিত্তি হয়ে উঠেছে।

‘এ প্যালিওআর্কিয়ান ইমপ্যাক্ট ক্রেটার ইন দ্য পিলবারা ক্র্যাটন, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ।

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

উল্কার আঘাতে তৈরি পৃথিবীর প্রাচীন গর্ত পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

আপডেট সময় : ০৪:০৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবীতে উল্কার আঘাতের প্রাচীনতম গর্তটি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা পৃথিবী ও এতে প্রাণের উৎস সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বদলে দিতে পারে বলে দাবি তাদের।

এ উল্কাপিণ্ডটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে। এর আগে জানা বিজ্ঞানীদের প্রাচীনতম গর্তটি ছিল দুইশো ২০ কোটি বছরের পুরানো বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।

গবেষকরা বলছেন, এ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে এর আগেও বিশাল আকারের উল্কাপিণ্ড আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীতে, যার সম্পর্কে আমরা হয়তো জানিই না। পাশাপাশি পেছনে ফেলে আসা এসব গর্তই সম্ভবত সেই জায়গা, যেখানে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব শুরু হয়েছিল।

উল্কাপিণ্ডের আঘাতের তীব্র চাপে পৃথিবীর এই গর্তে যে ‘ছিন্নভিন্ন শঙ্কু’ অবশিষ্ট রয়েছে তার মাধ্যমে এ বিষয়টি শনাক্ত করেছেন এ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা।

চাঁদের কারণে আমাদের সৌরজগতের প্রাথমিক পর্যায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছিল তা আমাদের জানা, বলেছেন ‘কার্টিন ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক টিম জনসন। এখন পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনো প্রাচীন গর্ত খুঁজে না পাওয়ার মানে হচ্ছে, ভূতাত্ত্বিকরা এগুলোকে খুঁজে পেতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি।

পৃথিবীর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যোগ করেছে এ গবেষণা, যার থেকে ইঙ্গিত মেলে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে থাকা আরো অনেক প্রাচীন গর্তের খোঁজ মিলতে পারে।

‘কার্টিন ইউনিভার্সিটি’র আরেক অধ্যাপক ক্রিস কার্কল্যান্ড বলেছেন, “এ গবেষণার ফলাফল আমাদের কেবল প্রারম্ভিক প্রাণের বিকাশের পরিবেশই আবিষ্কার করতে সাহায্য করেনি, বরং আজ যে মহাদেশগুলোতে এটি বিকশিত হচ্ছে সেগুলোও খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে আমাদের।

এ প্রভাব উন্মোচন করা ও একই সময়কাল থেকে আরো নানা তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে কীভাবে পৃথিবীতে প্রাণ শুরু হয়েছিল সে সম্পর্কে অনেক কিছু ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কারণ উল্কাপিণ্ডের প্রভাবে তৈরি বিভিন্ন গর্ত গরম পানির পুকুরের মতো পৃথিবীতে অণুজীবের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছিল।

এ বিষয়টি পৃথিবীর ভূত্বক গঠন সম্পর্কে আমাদের বোঝার ধারণাকে বদলে দিতে পারে। উল্কাপিণ্ডের প্রভাব থেকে অনেক শক্তি ভূত্বকের এক অংশকে অন্য অংশের নীচে ঠেলে দিয়েছিল বা ম্যাগমাকে পৃথিবীর ম্যান্টলের গভীর থেকে পৃষ্ঠের ওপরের দিকে নিয়ে আসতে বাধ্য করেছিল, যা প্রাথমিক ভূত্বক গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। এটি ক্র্যাটন বা ভূত্বকের অনেক বড় ব্লক গঠনেও ভূমিকা রাখতে পারে, যা বর্তমানে বিভিন্ন মহাদেশের ভিত্তি হয়ে উঠেছে।

‘এ প্যালিওআর্কিয়ান ইমপ্যাক্ট ক্রেটার ইন দ্য পিলবারা ক্র্যাটন, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ।