প্রত্যাশা ডেস্ক: ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে অখণ্ড বাংলার মানচিত্র প্রকাশ করে দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে ভারত সরকার।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) নয়া দিল্লিতে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই ইস্যুতে মূলত আমাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। আপনি যে পোস্টে কথা বলেছেন, তা সরিয়ে ফেলার বিষয় জেনেছি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে তাদের জনসম্মুখে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। যখন বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আগ্রহের ইঙ্গিত ভারত বারংবার দিয়েছে, তখন জনসম্মুখে এ ধরনের দেওয়ার বক্তব্য ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা দেখানো দরকার। আমি পুনরায় বলছি, বাংলাদেশ সরকারের কাছে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি।
বিজয় দিবসে বাংলা ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য যুক্ত করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করে নতুন ‘ভূখণ্ড ও বন্দোবস্ত লাগবে’ উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। পরে ব্যাখ্যা না দিয়ে সেই পোস্ট তিনি সরিয়ে নেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন।
১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের ধারাবাহিকতায় যে বাংলাদেশ হয়েছে সেই ভূখণ্ডকে ‘খণ্ডিত’ আখ্যা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘নতুন ভূখণ্ড ও বন্দোবস্ত লাগবে।’ তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয় এবং উপদেষ্টা মাহফুজ বা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আর কোনো বক্তব্য করা হয়নি।
বাংলাদেশ বিষয়ে আরেক প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের বিষয় টেনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমরা খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছি। আমরা বলেছি, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে আমরা সমর্থন করি। আমরা পারস্পরিক আস্থা, সম্মান এবং একে অপরের উদ্বেগ ও স্বার্থের বিষয়ে পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে আমাদের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছি। তিনি বলেন, আমরা আরও জোর দিয়েছি যে, বাংলাদেশের জনগণই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রধান অংশীজন এবং বলেছি যে, আমাদের উন্নয়ন সহযোগিতা এবং কানেকটিভিটি, বাণিজ্য, জ্বালানি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বহুমুখী সম্পৃক্ততার কার্যক্রমগুলো বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা মেটানোর কিংবা তাদেরকে কল্যাণের জন্য নিবেদিত।